ইন্দাস, 17 অগাস্ট : CPI(M) নেতার সহযোগিতায় ভিনরাজ্য থেকে ফিরলেন এক মহিলা ৷ নাম সীমা রাউত ৷ তিনি বাঁকুড়ার ইন্দাসের বাসিন্দা ৷ তাঁকে তামিলনাড়ুর সালেমের একটি বাসস্ট্যান্ড থেকে উদ্ধার করা হয় ৷ 8 অগাস্ট তাঁকে উদ্ধার করেন সেখানকার এক CPI(M) নেতা ৷ এরপর বাঁকুড়া পুলিশের সহায়তায় আজ তাঁকে সালেম থেকে নিয়ে বাঁকুড়ায় পৌঁছান পরিবারের লোকজন ৷
বছর দু'য়েক আগে ইন্দাসের বাসিন্দা সীমা ভাইপোর বিয়েতে যোগ দিতে কোতুলপুরের উদ্দেশে রওনা দেন । তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন । বাড়ির লোকজন তাঁর খোঁজ করে কোনও হদিস করতে পারেনি । সেই সময় ইন্দাস থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় । তবে তাতেও কোনও ফল মেলেনি । দীর্ঘদিন কোনও খোঁজ না পেয়ে একপ্রকার হাল ছেড়ে দিয়েছিল তাঁর পরিবার পরিজন । কিন্তু, এরপর হঠাৎ নাটকীয়ভাবে খোঁজ পাওয়া যায় সীমার ।
তামিলনাড়ুর সালেম থেকে এক CPI(M) নেতা এরাজ্যের কৃষকসভার সম্পাদক অমল হালদারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে জানান, তাঁদের কাছে এক বাঙালি মহিলা রয়েছেন । তাঁরা জানান, লকডাউনে ভিনরাজ্যের মানুষদের চিহ্নিতকরণের সময় সালেম বাসস্ট্যান্ডে ওই মহিলাকে পাওয়া যায় । তবে ভাষার সমস্যার কারণে তাঁরা মহিলা সম্পর্কে বিশেষ কিছু বুঝতে পারছেন না । এরপর উদ্ধার হওয়া মহিলার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিয়ো কলে কথা হয় । এরাজ্যের CPI(M) নেতা সীমার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তিনি ইন্দাসের বাসিন্দা ৷ তাঁর বাপেরবাড়ি কোতুলপুরে । রাজ্য থেকে যোগাযোগ করা হয় আর এক CPI(M) নেতা অমিয় পাত্রের সঙ্গে । অমিয়বাবু কোতুলপুরের স্থানীয় নেতৃত্বকে বিষয়টি জানান । কোতুলপুরের CPI(M) নেতা তাপস চক্রবর্তী 9 অগাস্ট সীমার ছবি মোবাইলে নিয়ে তাঁর বাড়ির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ এরপর তাঁর পরিবারের লোকেরা তাঁকে শনাক্ত করেন । 10 অগাস্ট ইন্দাস থানায় বিষয়টি জানানো হয় । সেখান থেকে সালেমের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় । থানা থেকে কাগজপত্র দেওয়া হয় মহিলার পরিবারের লোকেদের । এরপর 11 অগাস্ট ওই মহিলার ছেলে ও স্বামী একটি গাড়ি ভাড়া করে সালামের উদ্দেশে রওনা দেন। 13 অগাস্ট তাঁরা সালেমে পৌঁছান । সেখান থেকে সীমাকে নিয়ে 14 অগাস্ট তাঁরা রওনা দেন। আজ দুপুরে কোতুলপুর পৌঁছান তাঁরা । সেখান থেকে ইন্দাস থানায় নিয়ে যাওয়া হয় সীমাকে । ইন্দাস হাসপাতাল আজ বন্ধ থাকায় মহিলার কোনও পরীক্ষা করা হয়নি । এরপর কোরোনা বিধি অনুযায়ী হোম কোয়ারানটিনে রাখা হয়েছে সীমাকে ৷
লকডাউনে কাজ চলে গেছে বেশিরভাগ শ্রমিকের ৷ ফলে, শ্রমিকরা নিজেদের বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন ৷ সীমারও কাজ চলে যায় লকডাউনে ৷ অসহায় অবস্থায় তিনি সালেমের বাসস্ট্যান্ডে ঘাঁটি গাড়েন । সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন কৃষকসভার স্থানীয় নেতা কমরেড রবীন্দ্র । তিনি মহিলাকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে রেখেছিলেন প্রায় 3 মাস ।