ETV Bharat / state

Lal Bandh Bishnupur : মল্লগড়ের লালবাঁধ আজও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে - মল্লগড়ের লালবাঁধ

লালবাঁধ বিষ্ণুপুর তথা বাঁকুড়া জেলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রয়েছে ৷ মল্লগড়ের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে বর্তমানেও প্রাসঙ্গিক এই লালবাঁধ ৷ কিংবদন্তী আছে, এই লালবাঁধকে নিয়ে ৷ এই জলাধারের নামকরণ নিয়েও রয়েছে মতবিরোধ ৷

বিষ্ণুপুরের লালবাঁধ
author img

By

Published : Jul 3, 2021, 8:13 PM IST

বিষ্ণুপুর, 3 জুলাই : বিষ্ণুপুর মানেই সারি সারি ইতিহাস বিজড়িত পুরানো মন্দির ৷ বালুচরী শাড়ি ৷ তার ঠিক এক কোণায় নীলাভ জল ৷ এই জল আর নীলাভ আকাশের সংমিশ্রণে লালবাঁধের (Lal Bandh) দৃষ্টিনন্দন চেহারা । ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিভিন্ন তথ্য উঠে এল এই ঐতিহাসিক লালবাঁধকে কেন্দ্র করে ।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূমি সংস্কার এবং ভূমির সামাজিক অবস্থা নিয়ে সাউথ এশিয়ান স্টাডিজে যে আলোচনা বর্তমানে হচ্ছে সেখানে বলা হচ্ছে, তাদের আমলে ভারতবর্ষ তথা বাংলার সেচ ব্যবস্থাকে ইংরেজ সরকার পুরোপুরি ভাবে নষ্ট করে ফেলেছিল ৷ পুকুর, পুষ্করিণী, সেচ খাল ইত্যাদি সংস্কার না করার ফলেই তা নষ্ট হয়ে যায় । ভারতবর্ষে ইংরেজ সরকার আসার বহু পূর্বে এই সেচ খাল, পুকুরগুলি তৈরি হয়েছিল প্রাচীন রাজা বা রাজবংশের হাত ধরে ।

ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের প্রভাব গোটা বাংলায় পড়লেও এই মল্লরাজ্য অর্থাৎ বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরে পড়েনি ৷ কারণ সেই সময় এই এলাকার বাঁধ, পুকুর, পুষ্করিণী, সেচ খালগুলির অবস্থা ভাল ছিল ৷ কৃষিকাজ ঠিকমতো হত । 1881 সালে বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক হয়ে আসেন উপেন্দ্রনাথ ঘোষ ৷ তখন এই লালবাঁধ সংস্কার হয়েছিল ৷ তখন কিছুটা খনন করার পরই দেখা যায় নিচে রয়েছে একটা পরিত্যক্ত লোহার খনির বুজে যাওয়া অংশ ৷ আমরা লালবাঁধ বলে যাকে চিনি সেটি আসলে একটি লোহার খনি ছিল ৷ দু-তিন হাজার বছর আগে লালবাঁধ বা তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ছিল এই লোহার খনি ৷

তবে লালবাঁধকে ঘিরে অন্য একটি কাহিনির প্রচলন রয়েছে ৷ কথিত আছে, লালবাঈকে এই বাঁধে ডুবিয়ে মারা হয় ৷ তার জন্য এর নাম লালবাঁধ ৷ অবশ্য সেই তথ্য সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি । এই লালবাঁধে বিষ্ণুপুর মল্লরাজাদের প্রাচীন পাথরের দুর্গা মূর্তি বির্সজন দেওয়া হয়েছিল ৷ এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "লালবাঈ-এর ঘটনাটিকে যদি বাদও দেওয়া যায় বা ওই কাহিনি যদি মিথ্যা প্রমাণিতও হয় তাহলেও লালবাঁধের ইতিহাস বা ঐতিহ্য কোনও ভাবেই ক্ষুন্ন হবে না ৷" এই লালবাঁধের পাড়ে ঠাকুর রামকৃষ্ণ থেকে শুরু করে বীরভদ্র, অভিরাম গোস্বামী কত মানুষ যে এসেছিলেন তার ইয়ত্তা নেই ।

বিষ্ণুপুর তথা বাঁকুড়া জেলার ঐতিহ্য আজও বহন করে চলেছে লাঁলবাঁধ ৷

বর্তমানে এই মায়াবী লালবাঁধ বাঁকুড়াবাসীর সকাল-বিকেল দু'বেলা বিনোদনের এক অপরূপ ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে । মনখারাপ ভাল করতে এবং ফুরফুরে প্রাণবায়ুর স্পর্শ পেতে দূর-দুরান্ত থেকে পরিযায়ী পাখির মতো ছুটি আসেন বহু মানুষ । তাই জেলার ইতিহাসের সঙ্গে সঙ্গেই ভৌগোলিক ক্ষেত্রেও আজও প্রাসঙ্গিক এই লালবাঁধ ৷

আরও পড়ুন : প্রকৃতির কোলে শান্তির ঠিকানা বাঁকুড়ার তপোবন পাহাড়

বিষ্ণুপুর, 3 জুলাই : বিষ্ণুপুর মানেই সারি সারি ইতিহাস বিজড়িত পুরানো মন্দির ৷ বালুচরী শাড়ি ৷ তার ঠিক এক কোণায় নীলাভ জল ৷ এই জল আর নীলাভ আকাশের সংমিশ্রণে লালবাঁধের (Lal Bandh) দৃষ্টিনন্দন চেহারা । ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিভিন্ন তথ্য উঠে এল এই ঐতিহাসিক লালবাঁধকে কেন্দ্র করে ।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূমি সংস্কার এবং ভূমির সামাজিক অবস্থা নিয়ে সাউথ এশিয়ান স্টাডিজে যে আলোচনা বর্তমানে হচ্ছে সেখানে বলা হচ্ছে, তাদের আমলে ভারতবর্ষ তথা বাংলার সেচ ব্যবস্থাকে ইংরেজ সরকার পুরোপুরি ভাবে নষ্ট করে ফেলেছিল ৷ পুকুর, পুষ্করিণী, সেচ খাল ইত্যাদি সংস্কার না করার ফলেই তা নষ্ট হয়ে যায় । ভারতবর্ষে ইংরেজ সরকার আসার বহু পূর্বে এই সেচ খাল, পুকুরগুলি তৈরি হয়েছিল প্রাচীন রাজা বা রাজবংশের হাত ধরে ।

ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের প্রভাব গোটা বাংলায় পড়লেও এই মল্লরাজ্য অর্থাৎ বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরে পড়েনি ৷ কারণ সেই সময় এই এলাকার বাঁধ, পুকুর, পুষ্করিণী, সেচ খালগুলির অবস্থা ভাল ছিল ৷ কৃষিকাজ ঠিকমতো হত । 1881 সালে বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক হয়ে আসেন উপেন্দ্রনাথ ঘোষ ৷ তখন এই লালবাঁধ সংস্কার হয়েছিল ৷ তখন কিছুটা খনন করার পরই দেখা যায় নিচে রয়েছে একটা পরিত্যক্ত লোহার খনির বুজে যাওয়া অংশ ৷ আমরা লালবাঁধ বলে যাকে চিনি সেটি আসলে একটি লোহার খনি ছিল ৷ দু-তিন হাজার বছর আগে লালবাঁধ বা তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ছিল এই লোহার খনি ৷

তবে লালবাঁধকে ঘিরে অন্য একটি কাহিনির প্রচলন রয়েছে ৷ কথিত আছে, লালবাঈকে এই বাঁধে ডুবিয়ে মারা হয় ৷ তার জন্য এর নাম লালবাঁধ ৷ অবশ্য সেই তথ্য সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি । এই লালবাঁধে বিষ্ণুপুর মল্লরাজাদের প্রাচীন পাথরের দুর্গা মূর্তি বির্সজন দেওয়া হয়েছিল ৷ এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "লালবাঈ-এর ঘটনাটিকে যদি বাদও দেওয়া যায় বা ওই কাহিনি যদি মিথ্যা প্রমাণিতও হয় তাহলেও লালবাঁধের ইতিহাস বা ঐতিহ্য কোনও ভাবেই ক্ষুন্ন হবে না ৷" এই লালবাঁধের পাড়ে ঠাকুর রামকৃষ্ণ থেকে শুরু করে বীরভদ্র, অভিরাম গোস্বামী কত মানুষ যে এসেছিলেন তার ইয়ত্তা নেই ।

বিষ্ণুপুর তথা বাঁকুড়া জেলার ঐতিহ্য আজও বহন করে চলেছে লাঁলবাঁধ ৷

বর্তমানে এই মায়াবী লালবাঁধ বাঁকুড়াবাসীর সকাল-বিকেল দু'বেলা বিনোদনের এক অপরূপ ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে । মনখারাপ ভাল করতে এবং ফুরফুরে প্রাণবায়ুর স্পর্শ পেতে দূর-দুরান্ত থেকে পরিযায়ী পাখির মতো ছুটি আসেন বহু মানুষ । তাই জেলার ইতিহাসের সঙ্গে সঙ্গেই ভৌগোলিক ক্ষেত্রেও আজও প্রাসঙ্গিক এই লালবাঁধ ৷

আরও পড়ুন : প্রকৃতির কোলে শান্তির ঠিকানা বাঁকুড়ার তপোবন পাহাড়

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.