বড়জোড়া (বাঁকুড়া), 28 জুলাই : বড়জোড়া শিল্পতালুকের একমাত্র সরকারি কারখানা হল কংসাবতী কো-অপারিটিভ স্পিনিং মিল, অর্থাৎ সুতো উৎপাদন কেন্দ্র ৷ এখানকার সকল স্তরের কর্মচারী থেকে শুরু করে শ্রমিক সবার দীর্ঘদিনের দাবি, বাংলার সমস্ত স্পিনিং মিল যেখানে বেতন কমিশনের আওতায় চলে এসেছে, সেখানে তারা বাদ কেন ? এই দাবি নিয়ে বড়জোড়ার কংসাবতী কো-অপারেটিভ স্পিনিং মিলের শ্রমিকরা দীর্ঘ আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছিল ৷ তাঁরা একাধিকবার অনশনও করেছিলেন ৷ কিন্তু, আশানুরূপ ফল পাননি শ্রমিকরা ৷ এবার কারখানার গেটে তালা ঝুলিয়ে কাজ বন্ধ করে দিলেন শ্রমিকরা ৷ যদিও, পরে শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের আশ্বাসে কাজ আবারও শুরু হয়েছে ৷
সরকারি কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও পে-কমিশনের আওতায় নেই কংসাবতী কো-অপারিটিভ স্পিনিং মিলে কর্মীরা ৷ বাম আমল থেকে এই অবহেলার শিকার হয়ে আসছেন এই মিলের কর্মচারীরা । একাধিকবার তৎকালীন স্থানীয় বিধায়ককে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি ৷ কংসাবতী স্পিনিং মিলের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা প্রদীপ নন্দী জানান, এমএসএমই (MSME)-র আওতায় ছ’টি স্পিনিং মিল আছে ৷ তার তিনটি ইতিমধ্যে পে-কমিশনের আওতায় চলে এসেছে ৷ বাকি তিনটি স্পিনিং মিল অর্থাৎ, বীরভূমের ময়ূরাক্ষী, হুগলির শ্রীরামপুর এবং বাঁকুড়া বড়জোড়ার মিল তিনটিতে পে-কমিশন লাগু হয়নি ৷ বীরভূমের ময়ূরাক্ষী এবং শ্রীরামপুরের মিল দু’টিকে পে-কমিশনের আওতায় আনার কথা শুরু হলেও, বড়জোড়ার স্পিনিং মিলকে পে-কমিশনের আওতায় আনা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কংসাবতী স্পিনিং মিলের শ্রমিক ইউনিয়নের ওই নেতা ৷ যদি বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে বলে পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী ৷
আরও পড়ুন : এবার বন্ধ ভারত জুটমিল
বর্তমানে বড়জোড়া বিধানসভার নবনির্বাচিত বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় ৷ যিনি নির্বাচনের আগে আশ্বাস দিয়েছিলেন, শ্রমিকদের দাবিগুলি নিয়ে তিনি বিধানসভায় কথা বলবেন ৷ তবে, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিকদের দাবি আমি অবশ্যই বিধানসভার সামনে তুলে ধরব ৷ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর কাছে বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব ৷ কিন্তু অহেতুক কারখানার গেটে তালা ঝুলিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া, এটাকে সমর্থন করব না ৷’’ তবে, কংসাবতী কো-অপারিটিভ স্পিনিং মিলরে পে-কমিশনের আওতায় আনা বিষয়টি কি সমাধানের পথে, না কি এই অচলাবস্থা চলতেই থাকবে ? এ বিষয়ে একটা বড় প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে । তবে, কংসাবতী স্পিনিং মিলের শ্রমিকরা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের আশ্বাসে তাঁদের দাবি মেটার আশায় ফের কাজ শুরু করেছেন ৷