বাকুঁড়া, 30 অক্টোবর : হাতির উপদ্রবের হাত থেকে রক্ষা পেতে একসময় শুরু হয়েছিল গজলক্ষ্মী পুজো । আজও সেই প্রথা মেনে বাঁকুড়ার রামকানালি গ্রামের বাসিন্দারা চালিয়ে যাচ্ছেন লক্ষ্মীপুজো ।
বাঁকুড়া জেলার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের অন্তর্গত বেলিয়াতোড় থানার একটি বর্ধিষ্ণু গ্রাম রামকানালি । মূলত চাষবাস এবং পশু পালনের উপর চলে এই গ্রামের অর্থনীতি । কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় গ্রামে গজল অক্ষের পুজোর প্রচলন রয়েছে । লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা, তাই স্বাভাবিকভাবেই দেবীকে বহন করে নিয়ে যান তাঁর এই বাহন । তবে রামকানালিতে শাস্ত্রের এই বিধান সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়েছে । এখানে লক্ষ্মীদেবী অধিষ্ঠান করেন হাতির পিঠে । তাই এই দেবীকে গজলক্ষ্মী বলে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা ।
প্রায় একশো পাঁচ বছরের পুরাতন এই মন্দির । গ্রামের এই বারোয়ারি মন্দিরে কয়েক প্রজন্ম ধরে চলছে লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা । জঙ্গলে ঘেরা এই গ্রামটি বাঁকুড়া শহর থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগ এলাকায় অবস্থিত । এখনও মাঝেমধ্যে এখানে বুনো হাতির দল মাঠে নেমে পড়ে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এবং নষ্ট করে গ্রামবাসীর ফসল । অতীতে এই পুজোর যাঁরা সূচনা করেছিলেন তাঁরা আসলে হাতির আক্রমণের হাত থেকে গ্রামের মানুষকে রক্ষা করতেই লক্ষ্মীদেবীকে হাতির পিঠে বসিয়ে আরাধনা শুরু করেন । তাঁদের বিশ্বাস ছিল, লক্ষ্মী দেবীর সঙ্গে হাতি অর্থাৎ গণেশ দেবতার আরাধনা করলে তিনি সন্তুষ্ট হবেন এবং গ্রামের মানুষ হাতির তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন । এই পুজো উপলক্ষে অন্যান্য বছর যাত্রানুষ্ঠান, জলসা ইত্যাদির আয়োজন করা হলেও এবছর শুধুমাত্র নিয়ম-রক্ষার পুজো হচ্ছে মহামারীর কারণে।