বাঁকুড়া, 29 এপ্রিল: 'রাজ্যপালকে আচার্য চাই না, মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য চাই' ৷ এই দাবিতে রাজ্যপালকে চিঠি নিয়ে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়গুলি সরগরম। মহানগরীতেও হোর্ডিং, ব্যানারে ছড়াছড়ি। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কয়েকদিন আগেই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি রাজ্যপালকে আচার্য চান না, মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য চান। তাঁর দাবি, নৈতিক অর্থে আমাদের কাছে আচার্য মুখ্যমন্ত্রী। তাই আচার্য বিলে অবিলম্বে রাজ্যপাল সই করুন, না-হলে ফেরত পাঠান। এভাবে বিল সই না-করে আটকে রাখা সমীচীন নয় বলেও দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ফলে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার বিল সই ইস্যুতে কার্যত রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপাল সংঘাত এখন চরমে। এই অবস্থায় রাজ্যপাল কি আচার্য বিলে সই করবেন? এটাই এখন বড় প্রশ্ন।
কার্যত এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ্যপালের সফরের দিনও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিংয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার দাবিতে পোস্টার নজরে আসে ৷ বাঁকুড়া সফরে এসে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এই বিল সই প্রসঙ্গে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেন শুক্রবার। তিনি বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, এই বিল নিয়ে সঠিক সময়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তিনি কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা অবশ্য খোলসা করেননি।
আরও পড়ুন: বেআইনি কাজ করেছেন রাজ্যপাল, শুভেন্দুর আক্রমণের পালটা জবাব সিভি আনন্দের
রাজ্যপাল বিলে সই করবেন? না ফেরত পাঠাবেন? না যেমন আটকে আছে তেমন আটকেই থাকবে? তা অবশ্য রাজ্যপালের এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট নয়। এদিকে, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আগেই রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছেন রাজ্যপাল হয় বিলে সই করুন, না-হয় ফেরত পাঠান।পাশাপাশি, সম্প্রতি তেলেঙ্গানা রাজ্যের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জামিয়েছে, কোনও বিল বিধানসভায় পাশ হয়ে গেলে রাজ্যপাল সেই বিল সংক্রান্ত ফাইল আটকে রাখতে পারবেন না। দুই সপ্তাহের বেশি সেই ফাইল আটকে রাখা যাবে না বলেও নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশকে হাতিয়ার করে এই রাজ্যও চাইছে শীঘ্র মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য পদে নিয়োগের বিলটিতে সই করুন রাজ্যপাল। অর্থাৎ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে রাজ্যপালের নিয়ন্ত্রণের বেষ্টনী ভেঙে ফেলার পথে হাঁটতে চাইছে রাজ্য সরকার তা বলাই বাহুল্য।