বাঁকুড়া, 15 অক্টোবর: ফুটবল যদি বাঙালির আবেগ হয়ে থাকে, সেই আবেগকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হয়েছেন বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের দুমদুমি গ্রামের ভারতী মুদি । ছোটবেলা থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন একজন ফুটবলার হবার ৷ তিনি ভেবেছিলেন এই ফুটবলকে কেন্দ্র করে নিজের ভবিষ্যৎ রচনা করবেন । কিন্তু ফুটবলার হওয়ার ইচ্ছে পোষণ করলেও সমাজ তাকে বাধা দিয়েছিল । বিয়ের পর সংসার জীবনে আটকে পরে জীবন ।
স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় হাতাশা কুরে কুরে খাচ্ছিল ভারতী দেবীকে। তাই হতাশা কাটিয়ই শুরু হয় ভারতীর অন্য লড়াই ৷ তিনি নিজে পারেননি তো কী হয়েছে, থেমে যাননি । নিজের দেখা স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে 2009 সাল তাঁর প্রজন্মদের নিয়ে শুরু করে দিয়েছিলেন একটি ফুটবল দল, যার প্রশিক্ষক ভারতী দেবী নিজেই । তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে ৷ 2009 থেকে 2023 সাল একইভাবে চলে আসছে এই ফুটবল প্রশিক্ষণ শিবির ।
প্রত্যেক সপ্তাহে নিয়মমাফিক মাঠে চলে ঘাম ঝরানোর অনুশীলন ৷ ইতিমধ্যেই ওই ফুটবল প্রশিক্ষণ শিবিরের মেয়েরা আন্তঃজেলা-সহ আন্তঃরাজ্য অনেক স্তরেই প্রতিযোগিতা করেছেন ৷ এখন তাঁর মেয়েদের স্বপ্ন আন্তর্জাতিক স্তরে খেলা, তাই খোলা আকাশের নিচে চলছে তাদের চেষ্টা । বর্তমানে 26 থেকে 27 জন মহিলা রয়েছে এই দলে । এই ফুটবলকে হাতিয়ার করে এই ফুটবল প্রশিক্ষণ শিবিরের মেয়েরা অনেকেই রাজ্য পুলিশের সিভিক পদে চাকরিও পেয়েছেন ।
ভারতী দেবীর কথায়, "আমার ইচ্ছে ছিল ফুটবলার হওয়ার ৷ কিন্তু সাংসারিক ও পারিপার্শ্বিক চাপে তা হয়ে ওঠেনি ৷ তাই নিজের স্বপ্নটা মেয়েদের মাধ্যমে বাস্তবায়িত করছি, এখন খুশি হব মেয়েরা যদি আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিযোগিতা করতে পারে ।"
এই মহিলা ফুটবল দলের সদস্য তথা ভারতী দেবীর কন্যা তানিয়া মুদির কথায়, "মায়ের স্বপ্ন কিছুটা হলেও সফল করতে পেরেছি ৷ যদি আরও টিমটা কন্টিনিউ করে, মায়ের স্বপ্ন আরও সফল হবে ।"
আরও পড়ুন : টেরাকোটা দিয়ে এক ইঞ্চির মা দুর্গা গড়ে তাক লাগালেন 'বাস্তবের দশভূজা' অর্পিতা