বাঁকুড়া, 14 নভেম্বর: মাত্র 10 দিনের কন্যাসন্তানকে নিয়ে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী গৃহবধূ। সোমবার রাতে, ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া সদর থানার বাসুলীতোড়া গ্রামে। শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের ফলে মানসিক অবসাদ, আর তার জেরে এই আত্মহত্যা বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে ৷ তবে এর পিছনে কি লুকিয়ে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বাঁকুড়া সদর থানার বাসুলীতোড়া গ্রামের ঝুমা বাউরির সঙ্গে বছর দেড়েক আগে বিয়ে হয় বেলিয়া গ্রামের তরুণ বাউরির। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্কের টানপোড়েন শুরু হয় ঝুমার। এরই মাঝে ঝুমা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বাপের বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন। দিন দশেক আগে ঝুমা বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। বাচ্চার জন্মের পর স্বামী তরুণ বাউরি সন্তান-সহ ঝুমাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে মেয়ের শারীরিক দুর্বলতার কারণ দেখিয়ে সন্তান-সহ ঝুমাকে বাসুলীতোড়া গ্রামে নিয়ে যান বাপের বাড়ির লোকজন।
এরপর গতকাল রাত দশটা নাগাদ বাপের বাড়ি থেকে সন্তান-সহ নিখোঁজ হয়ে যান ঝুমা। দীর্ঘক্ষণ ধরে খোঁজ করার পর বাপের বাড়ির লোকজন দেখেন বাড়ির অদূরে একটি কুয়োতে ঝুমা ও তাঁর সন্তানের দেহ ভাসছে। এরপর পুলিশে খবর দিলে আজ, মঙ্গলবার ভোর নাগাদ পুলিশ ও দমকলের কর্মীরা গিয়ে কুয়ো থেকে মৃতদেহ দু'টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায়।
পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, এমনিতেই শারীরিকভাবে দুর্বল ছিলেন ঝুমা। সন্তান প্রসবের পর সামান্য মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়। সেই অবসাদের জেরেই আত্মহত্যা নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে, মৃতার বাপের বাড়িকে কাঠগড়ায় তুলেছে তাঁর স্বামী। তরুণ বাউরি নামে ওই ব্যক্তি বলেন, "সন্তান জন্ম দেওয়ার পর আমি ঝুমাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বউয়ের বাবা-মা নিয়ে যেতে দেয়নি। বউয়ের সঙ্গে আমরা কোনও ঝামেলা হয়নি। কেন আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করল তা আমার শ্বশুর বলতে পারবে।"
আরও পড়ুন: