বাঁকুড়া, 23 এপ্রিল : টেরাকোটা ৷ নামটার সঙ্গে যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বাঁকুড়া ৷ টেরাকোটার মন্দির, মূর্তি এখানের ঐতিহ্য ৷ আর এই টেরাকোটা শিল্পকে এক অন্য মাত্রা দিয়েছে বাঁকুড়ার টেরাকোটা গ্রাম পাঁচমুড়া ৷ গ্রামে অলিতে গলিতে যেন শুধু শিল্পের ছোঁয়া ৷ কিন্তু, এই টেরাকোটা শিল্পের অবস্থা এখন খুব একটা ভাল নেই ৷ মন্দা দেখা দিয়েছে ব্যবসায় ৷ ফলে ভাল নেই পাঁচমুড়া গ্রামের টেরাকোটা শিল্পীরা ৷ অভাবে দিন কাটছে তাঁদের ৷
বাঁকুড়ার উত্তরে কখনও আধভাঙা পিচে লাল মোরামের রাস্তায় কখনও জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে 40 কিমি গেলেই দেখা মিলবে পাঁচমুড়া গ্রামের ৷ গ্রামে ঢুকলেই দেখা যাবে আট থেকে আশি প্রত্যেকের ছোঁয়ায় গড়ে উঠছে সুন্দর সুন্দর টেরাকোটার মূর্তি ৷ দুর্গা মূর্তি, মা মনসার মূর্তি থেকে শুরু করে হাতি, ঘোড়া কি নেই ! একবার দেখলেই যেন সব কিনে নিতে ইচ্ছে করবে ৷ তাই, বাঁকুড়ায় ঘুরতে এলে পর্যটকরা এখানে আসার সুযোগ কখনওই হারাতে চান না ৷ সবমিলে এ যেন শিল্পের গ্রাম, শিল্পীদের গ্রাম, মাটির ক্যানভাসে সৃজনশীলতাকে ফুটিয়ে তোলার গ্রাম।
নয়নতারা কুম্ভকার নামে এক শিল্পী বলেন, "শিল্পের অবস্থা ভাল নেই ৷ করোনার কারণে আমাদের মাটির জিনিস বিক্রি হচ্ছে না ৷ কোনওরকমে সংসার চলছে ৷ মানুষও আসছেন না ৷" ফের লকডাউনের আতঙ্কে রয়েছেন আরেক শিল্পী শ্যামলী কুম্ভকার ৷ তিনি বলেন, ‘‘লকডাউনে পর্যটক আসেননি ৷ বেচা-কেনা হয়নি ৷ খুব সমস্যা হয়েছে ৷ এখনও সমস্যা রয়েছে ৷ আবার যদি লকডাউন হয় তাহলে খুব সমস্যায় পড়ে যাব ৷’’
আরও পড়ুন, আভিজাত্যে মোড়া মল্লগড়ের বালুচরীর কদর আজও শিখরে
শিল্পীদের অভিযোগ, বর্তমান সরকারের তরফে কয়েকটি পদক্ষেপ করা হলেও তাতে কোনও সুরাহা হয়নি ৷ লকডাউনে তো পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে ৷ লকডাউনের সময় কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করা হলেও তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি ৷
অর্থের দিক থেকে অভাব থাকলেও শিল্পের রসদ এখনও সেখানকার শিল্পীদের বাঁচিয়ে রাখছে ৷ শুধুমাত্র একটু ভালোভাবে বাঁচার জন্য সরকারি সাহায্যের অনুরোধ জানাচ্ছেন পাঁচমুড়া গ্রামের শিল্পীরা ৷