ETV Bharat / state

দুর্গম পাহাড়ে পৌঁছায়নি ত্রাণ, জংলি মাশরুমেই ভরসা বক্সার জনজাতির - লেপচা

বক্সা পাহাড় থেকে 4 কিলোমিটার দূরে সান্তলাবাড়িতে বন্ধ হয়ে গেছে দৈনিক বাজার সাপ্তাহিক হাট । স্বাভাবিকভাবেই মিলছে না চাল, ডাল, আটা, তেল, নুন ।

Alipurduar
Alipurduar
author img

By

Published : May 11, 2020, 7:32 PM IST

আলিপুরদুয়ার, 11 মে: লকডাউনে দুর্গম পাহাড়ে পৌঁছায়নি ত্রাণ । তাই জঙ্গলের পাহাড়ি মাশরুমই আপাতত ভরসা বক্সা পাহাড়ের ডুকপা, পেলচা, ভুপালির মতো আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের । লকডাউনের মধ্যে দুর্গম বক্সার 13টি গ্রামের মানুষের এখন এই পাহাড়ি মাশরুমের ভরসাতেই দিন কাটছে ।

পাহাড়ি আলু সহযোগে একবেলার আধপেটা সেদ্ধভাত যেন পরমান্ন । বক্সা পাহাড়ের কমলাভ্যালি যেন আজ দুর্ভিক্ষের প্রতিচ্ছবি । বক্সা টাইগার রিজার্ভের রাজাভাতখাওয়া থেকে জঙ্গলের পথ ধরে 15 কিলোমিটার দূরে সান্তলাবাড়ি । সেখান থেকে চার কিলোমিটার দুর্গম পাহাড়ি পথের পাকদণ্ডী বেয়ে পৌঁছাতে হয় ঐতিহাসিক বক্সাফোর্টে । ভারত-ভুটান পাহাড়ের কোলে এই দুর্গম বক্সায় চুনাভাটি,আদমা,ওসলুম,লালবাংলো, তাসিগাও, লেপচাখার মতো 13টি গ্রাম রয়েছে । এই গ্রামগুলোতে ডুকপা, লেপচা, মেচ, রাভা, ভুপালির মতো আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রায় 3 হাজার মানুষের বসবাস । বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে এই পাহাড়ি মানুষদের প্রধান আয়ের উৎস কমলা লেবুর চাষ বন্ধ প্রায় 10 বছর । বিকল্প আয়ের পথ খুঁজতে এরা বেছে নেয় পর্যটনের ব্যবসাকে । লকডাউনের জেরে সম্পূর্ণ বন্ধ পর্যটন ব্যবসা । এর জেরে রুটি, রুজিতে টান পড়েছে বক্সা পাহাড়ের বসবাসকারী জনজাতির দৈনন্দিন জীবনে ।

এই পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা গ্রামগুলো এতটাই দুর্গম যে সেখানে ত্রাণ পৌঁছানো অতি কষ্টকর । ফলে এই গ্রামের মানুষগুলো সরকারি, বেসরকারি ত্রাণ থেকে পুরোপুরিভাবে বঞ্চিত । বক্সা পাহাড় থেকে 4 কিলোমিটার দূরে সান্তলাবাড়িতে বন্ধ হয়ে গেছে দৈনিক বাজার সাপ্তাহিক হাট । স্বাভাবিকভাবেই মিলছে না চাল, ডাল, আটা, তেল, নুন । বক্সা ফোর্ট থেকে প্রায় 30 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জেলা শহর আলিপুরদুয়ার । সেখানে এসে খাবার কিনে নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই । কারণ বন্ধ যানবাহন চলাচল । প্রতিবছর এই সময়ে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ঢল নামে বক্সা পাহাড়ের কোলে । বক্সার কোলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছবির মতো গ্রামে গজিয়ে ওঠা হোমস্টেগুলো কানায় কানায় ভরে থাকে । পর্যটকদের দৌলতে দুধে ভাতে থাকে লেপচা, ডুকপা শিশুরা । তবে কোরোনা ভাইরাসের জেরে এবছর পুরোপুরি পাল্টে গেছে গোটা বক্সা পাহাড়ের চিত্র ।

লকডাউনের জেরে বক্সা পাহাড় আরও সুন্দরী হয়েছে । মুক্ত বাতাসে বক্সা মেলে ধরেছে তার রূপ । গাছে গাছে হরেক পাখি, ডালে ডালে রঙ-বেরঙের ফুল, প্রজাপতির চঞ্চলতা । ঝর্নার শব্দ যেন আগের আরও অনেক গভীর । তা সত্ত্বেও বক্সা পাহাড়ে আজ খিদের তাড়নায় কান্নার রোল । একবেলা ভরপেট খাবারের দাবি প্রতিধ্বনিত হচ্ছে পাহাড়ে খাঁজে খাঁজে । লেপচার টেন্ডু, ডুকপাদের অভিযোগ, তারা একপ্রকার মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে । তাদের কাছে কেউ ত্রাণ নিয়ে আসে না । পাহাড়ের দোকানগুলোর মজুত খাবার সব শেষ । এখন বেঁচে থাকার ভরসা জঙ্গল, পাহাড়ের মাশরুম, কচু, আলু, শাকপাতা । দীর্ঘ অন্ধকারের পথ পেরিয়ে ফের বক্সাফোর্টের পূর্বদিকের আকাশ লাল করে একদিন গোটা পাহাড় আলোকিত হবে সূর্যকিরণে, এই আশা বুকে নিয়ে বেঁচে আছে বক্সার মানুষগুলো ।

আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা জানান, "বক্সায় রেশন বিলি করা হচ্ছে । কিছুটা সমস্যা রয়েছে ।" কালচিনির BDO ভূষণ শেরপা বক্সা পাহাড়ের গোটা বিষয়টি দেখছেন । এখন ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল হচ্ছে । যতটুকু সমস্যা আছে তা দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে ।

আলিপুরদুয়ার, 11 মে: লকডাউনে দুর্গম পাহাড়ে পৌঁছায়নি ত্রাণ । তাই জঙ্গলের পাহাড়ি মাশরুমই আপাতত ভরসা বক্সা পাহাড়ের ডুকপা, পেলচা, ভুপালির মতো আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের । লকডাউনের মধ্যে দুর্গম বক্সার 13টি গ্রামের মানুষের এখন এই পাহাড়ি মাশরুমের ভরসাতেই দিন কাটছে ।

পাহাড়ি আলু সহযোগে একবেলার আধপেটা সেদ্ধভাত যেন পরমান্ন । বক্সা পাহাড়ের কমলাভ্যালি যেন আজ দুর্ভিক্ষের প্রতিচ্ছবি । বক্সা টাইগার রিজার্ভের রাজাভাতখাওয়া থেকে জঙ্গলের পথ ধরে 15 কিলোমিটার দূরে সান্তলাবাড়ি । সেখান থেকে চার কিলোমিটার দুর্গম পাহাড়ি পথের পাকদণ্ডী বেয়ে পৌঁছাতে হয় ঐতিহাসিক বক্সাফোর্টে । ভারত-ভুটান পাহাড়ের কোলে এই দুর্গম বক্সায় চুনাভাটি,আদমা,ওসলুম,লালবাংলো, তাসিগাও, লেপচাখার মতো 13টি গ্রাম রয়েছে । এই গ্রামগুলোতে ডুকপা, লেপচা, মেচ, রাভা, ভুপালির মতো আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রায় 3 হাজার মানুষের বসবাস । বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে এই পাহাড়ি মানুষদের প্রধান আয়ের উৎস কমলা লেবুর চাষ বন্ধ প্রায় 10 বছর । বিকল্প আয়ের পথ খুঁজতে এরা বেছে নেয় পর্যটনের ব্যবসাকে । লকডাউনের জেরে সম্পূর্ণ বন্ধ পর্যটন ব্যবসা । এর জেরে রুটি, রুজিতে টান পড়েছে বক্সা পাহাড়ের বসবাসকারী জনজাতির দৈনন্দিন জীবনে ।

এই পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা গ্রামগুলো এতটাই দুর্গম যে সেখানে ত্রাণ পৌঁছানো অতি কষ্টকর । ফলে এই গ্রামের মানুষগুলো সরকারি, বেসরকারি ত্রাণ থেকে পুরোপুরিভাবে বঞ্চিত । বক্সা পাহাড় থেকে 4 কিলোমিটার দূরে সান্তলাবাড়িতে বন্ধ হয়ে গেছে দৈনিক বাজার সাপ্তাহিক হাট । স্বাভাবিকভাবেই মিলছে না চাল, ডাল, আটা, তেল, নুন । বক্সা ফোর্ট থেকে প্রায় 30 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জেলা শহর আলিপুরদুয়ার । সেখানে এসে খাবার কিনে নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই । কারণ বন্ধ যানবাহন চলাচল । প্রতিবছর এই সময়ে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ঢল নামে বক্সা পাহাড়ের কোলে । বক্সার কোলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছবির মতো গ্রামে গজিয়ে ওঠা হোমস্টেগুলো কানায় কানায় ভরে থাকে । পর্যটকদের দৌলতে দুধে ভাতে থাকে লেপচা, ডুকপা শিশুরা । তবে কোরোনা ভাইরাসের জেরে এবছর পুরোপুরি পাল্টে গেছে গোটা বক্সা পাহাড়ের চিত্র ।

লকডাউনের জেরে বক্সা পাহাড় আরও সুন্দরী হয়েছে । মুক্ত বাতাসে বক্সা মেলে ধরেছে তার রূপ । গাছে গাছে হরেক পাখি, ডালে ডালে রঙ-বেরঙের ফুল, প্রজাপতির চঞ্চলতা । ঝর্নার শব্দ যেন আগের আরও অনেক গভীর । তা সত্ত্বেও বক্সা পাহাড়ে আজ খিদের তাড়নায় কান্নার রোল । একবেলা ভরপেট খাবারের দাবি প্রতিধ্বনিত হচ্ছে পাহাড়ে খাঁজে খাঁজে । লেপচার টেন্ডু, ডুকপাদের অভিযোগ, তারা একপ্রকার মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে । তাদের কাছে কেউ ত্রাণ নিয়ে আসে না । পাহাড়ের দোকানগুলোর মজুত খাবার সব শেষ । এখন বেঁচে থাকার ভরসা জঙ্গল, পাহাড়ের মাশরুম, কচু, আলু, শাকপাতা । দীর্ঘ অন্ধকারের পথ পেরিয়ে ফের বক্সাফোর্টের পূর্বদিকের আকাশ লাল করে একদিন গোটা পাহাড় আলোকিত হবে সূর্যকিরণে, এই আশা বুকে নিয়ে বেঁচে আছে বক্সার মানুষগুলো ।

আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা জানান, "বক্সায় রেশন বিলি করা হচ্ছে । কিছুটা সমস্যা রয়েছে ।" কালচিনির BDO ভূষণ শেরপা বক্সা পাহাড়ের গোটা বিষয়টি দেখছেন । এখন ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল হচ্ছে । যতটুকু সমস্যা আছে তা দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.