আলিপুরদুয়ার, 10অক্টোবর: পাহাড়ের গায়ে বিভিন্ন রঙ দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে কাঞ্চালি বস্তির ভুটানঘাট । এবার পুজোয় চলুন রঙ-বেরঙের পাহাড় দেখে আসা যাক। কীভাবে যাবেন? কোথায় যাবেন? কোথায় থাকবেন? সব তথ্যই রইল আপনাদের জন্য ৷ উত্তরবঙ্গের পর্যটনের নতুন ডেস্টিনেশন আলিপুরদুয়ারের কাঞ্চালি বস্তির ভুটানঘাট। আলিপুরদুয়ার জেলার ভারত-ভুটান সীমান্তের তেরঙ্গা পাহাড় এখন পর্যটনের কেন্দ্র বিন্দু। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের ভেতরে ইন্দো ভুটান সীমান্তের পর্যটনস্থল ভুটানঘাট। বক্সার জঙ্গলের ভেতর ভুটানের বিভিন্ন রঙের পাহাড় দেখতে ছুটে আসেন ভ্রমণ পিপাসুরা।
আলিপুরদুয়ারের কাঞ্চালি বস্তির ভুটানঘাট কোথায় এই ভুটানঘাট? আলিপুরদুয়ার জেলার কুমার গ্রাম ব্লকের ভারত ও ভুটানের সীমান্তবর্তী এলাকায় কাঞ্চালি বস্তি। তার পাশেই ভুটানঘাট।ভুটান পাহাড়ের গায়ে বেশ কয়েকটি রং থাকায় এই ভুটানঘাটের জনপ্রিয়তা বেড়েছে পর্যটকদের কাছে। প্রতিবছর প্রচুর পর্যটক আসেন এই পাহাড় দেখার জন্য। ভুটান পাহাড়ের গায়ে আপনি দেখতে পাবে কালো, সাদা, সবুজ, খয়েরি রঙের খেলা, যা অন্য কোথাও লক্ষ্য করা যায় না।
কীভাবে যাবেন ভুটানঘাট? নিউ আলিপুরদুয়ার রেলওয়ে ষ্টেশনে নেমে ছোট গাড়িতে করে শামুকতলা হয়ে ময়নাবাড়ি কাঞ্চালি বস্তি যেতে হবে। কাঞ্চালি বস্তি থেকে ভুটানঘাট খুব কাছে। কাঞ্চালি বস্তি থেকে ভুটানঘাট যেতে হয় রোমাঞ্চকর বক্সার জঙ্গলের পথ ধরে। কিন্তু বক্সা টাইগার রিজার্ভের ভেতর দিয়ে ভারত-ভুটান সীমান্তের ভুটানঘাটে যেতে হয় বলে সাধারন মানুষকে সব সময় যাওয়ার অনুমতি দেয় না বনবিভাগ । তাই অনুমতি অবশ্যই নিতে হবে।
পুজোর ছুটিতে বেড়াতে যেতে পারেন অজানা এই ডেস্টিনেশনে কোথায় থাকবেন? ভুটানঘাটে ঘুরতে গেলে কাঞ্চালি বস্তিতে থাকাটাই ভালো। কারণ কাঞ্চালি বস্তি থেকেই আশে পাশে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখাটা খুব সহজ ও সুলভ হবে৷ কাঞ্চালি বস্তি থেকে আশে পাশের পাহাড়, জঙ্গল-সহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে মোহিত করবে। তুরতুরী খণ্ডের কাঞ্চালি বস্তিতে বেশ কয়েকটি হোম-স্টে রয়েছে ৷ ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই হোম-স্টে গুলো তৈরি করা ৷ প্রতিদিন 1000-1500 টাকা ভাড়া। হোম-স্টেতে সকালের চা থেকে শুরু করে প্রতিদিন তিনবেলা খাবারের ক্ষেত্রে গুনতে হবে মাত্র 600 টাকা (জন প্রতি)। রয়েছে ক্যাম্প ফায়ারের সুবিধাও।
পাহাড়ের গায়ে রঙ-বেরঙের বাহার কী কী দেখতে পাবেন এখানে আসলে? এখান থেকে দেখতে পাবেন ভুটানঘাট, টিয়ামারি ঘাট,বক্সার সাউথ রায়ডাকের 128 বছরের বন বাংলো, ছিপড়া ঝুলন্ত সেতু। কাঞ্চালি বস্তি থেকে হাতিপোতা, ফাঁসখাওয়ার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন আপনি ৷ এছাড়া ভুটানঘাট থেকে জয়ন্তী মাত্র 12 কিলোমিটার ৷ বক্সার ব্যাঘ্র প্রকল্পের চুনিয়া ওয়াচ টাওয়ারও দেখতে যেতে পারেন। জয়ন্তী মহাকাল, ফাঁসখাওয়া মহাকাল-সহ বেশ কয়েকটি চা বাগানে টি-ট্যুরিজমের স্বাদও নিতে পারবেন।
ভুটানঘাটের পর্যটন ব্যবসায়ী রাজকুমার ছেত্রী বলেন, "ভুটানঘাটকে কেন্দ্র করে এই এলাকায় সরকারের পক্ষ থেকে ব্লু হোম-স্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যটন বিকাশে নতুন আশার আলো আমরা দেখছি। আলিপুরদুয়ার জেলার তুরতুরী খন্ড গ্রামপঞ্চায়েতের কাঞ্চালি বস্তি, ময়নাবাড়িতে 6টি হোম-স্টে তৈরী হয়েছে। এই হোম-স্টে গুলোতে পর্যটকরা থাকতে পারবেন স্বল্প খরচে। তবে ভুটান ঘাট সর্বসাধারণের জন্য খুলে গেলে একদিকে যেমন এলাকার পর্যটন বিকাশ হবে পাশাপাশি এলাকায় ছেলেমেয়েদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে।" নতুন ডেস্টিনেশনের খবর পেয়ে ইতিমধ্যেই পর্যটকরা ভুটানঘাট সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: এই পুজোয় ঘুরে আসুন 'ফুলের দেশ' রিকিসুমে