আলিপুরদুয়ার, 21 ডিসেম্বর : মৃত্যু হল কালচিনি চা বাগানের আরও এক শ্রমিকের ৷ শনিবার সকালে মারা যান ওই শ্রমিক ৷ মৃতের নাম সঞ্জয় ওঁরাও ৷ আলিপুরদুয়ারের কালচিনি চা বাগানের গুদাম লাইনের বাসিন্দা । মৃতের পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন থেকে পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন সঞ্জয় ৷ আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৷ সেখান থেকে শিলিগুড়ি রেফার করা হয় তাঁকে । কিন্ত অর্থের অভাবে সঞ্জয়কে শিলিগুড়িতে নিয়ে যেতে পারেননি পরিবারের লোকেরা । এই নিয়ে কালচিনি চা বাগানে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে 4 শ্রমিকের ৷
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজ্যে সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প কেবল খাতায় কলমেই রয়ে গেছে । কালচিনির বন্ধ চা বাগানে এই প্রকল্পের কোনও সুবিধে পাচ্ছেন না শ্রমিকেরা । এদিকে একের পর এক শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাল তৃণমূল চা বাগান মজদুর ইউনিয়ন ৷ ইউনিয়নের সম্পাদক ওম লোহার বলেন, "একের পর এক শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে বন্ধ বাগানে । তবে জেলা প্রশাসন এবং ব্লক প্রশাসন নির্বিকার । শ্রমিকরা সরকারি কোনও সাহায্য পাচ্ছে না ।"
তিনি আরও বলেন, "সরকার শুধু মুখেই বলছে শ্রমিকদের জন্য এটা করব ওটা করব । কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না । এভাবে চলতে থাকলে মৃত্যু অব্যাহত থাকবে বন্ধ বাগানে ।" অখিল ভারতীয় মহাসভার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বলেন, "বন্ধ চা বাগান ৷ খাওয়ার টাকা নেই ৷ চিকিৎসা করাবে কী ভাবে শ্রমিকরা । সরকারের নজর নেই বন্ধ চা বাগানে তাই মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে ।"
এবিষয়ে কালচিনি ব্লকের তৃণমূল সভাপতি তথা লতাবাড়ি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অসীম মজুমদার বলেন, "কালচিনির রায়মাটাং এবং কালচিনি বাগানে তিন-চার জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে । বন্ধ চা বাগানগুলিতে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিককে সার্ভে করার কথা বলবেন । কার কী অসুখ হয়েছে তা সার্ভে করে জানতে না পারলে এই মৃত্যুর মিছিল ঠেকানো যাবে না ।" ব্লক আধিকারিকের থেকে বিষয়টি জেনে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা ৷