আলিপুরদুয়ার, 10 জুন : ভারত থেকে মোট উৎপাদিত চায়ের 35 শতাংশ উৎপাদন হয় এ রাজ্যে, যার সিংহভাগ বাগানই রয়েছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি জুড়ে । প্রতি বছর গড়ে এই জেলাগুলিতে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার লক্ষ কেজি চা উৎপাদন হয় ৷ এই উৎপাদিত চায়ের উপরই নির্ভর করে রয়েছেন কম বেশি 5 লক্ষ শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবার । উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ এই চা-শিল্প ।
করোনার ভয়াবহ গ্রাস থেকে বাঁচতে সম্প্রতি মে মাসের মাঝামাঝি রাজ্য সরকার বেশকিছু বিধি-নিষেধ জারি করে ৷ বাদ যায়নি চা বাগানও । 50 শতাংশ শ্রমিক দিয়ে কাজ চালানোর নিদান মিলেছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে । মে এবং জুন এই দু'টি মাস চা বাগানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এই দুই মাসেই যে পাতা উৎপাদন হয় চায়ের ভাষায় তাকে বলা হয় সেকেন্ড ফ্লাশ । এই সেকেন্ড ফ্লাশের গুণগত মান দিয়েই চায়ের বাজার নির্ধারিত হয় । এই অবস্থায় 50 শতাংশ শ্রমিক দিয়ে কাজ চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন চা বাগান কর্তৃপক্ষ ।
ইতিমধ্যেই বর্ষা কড়া নাড়ছে উত্তরবঙ্গে ৷ বর্ষায় উত্তরবঙ্গের বাগানগুলোতে ব্যাপকহারে চা পাতা উৎপাদন হয় ৷ সেই চা পাতা বাগান থেকে ফ্যাক্টরি অবধি নিয়ে যেতে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন পড়ে । কিন্তু মাত্র 50 শতাংশ শ্রমিক দিয়ে বাগানে কাজ চালাতে গিয়ে বাগানের সেকেন্ড ফ্ল্যাশের পাতা এখনও পড়ে রয়েছে চা গাছগুলিতেই ।
বাগান কর্তৃপক্ষগুলির তরফে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এখন বিধি-নিষেধের নিয়ম যদি দীর্ঘায়িত হতে থাকে তাহলে আসন্ন বর্ষার উৎপাদনের ক্ষেত্রে তার একটা বড় প্রভাব পড়বে ৷ এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে চা বাগান মালিকদের দাবি, চা বাগানে সামাজিক দূরত্ব মেনেই কাজ করানো হয় ৷ তাঁরা চাইছেন, অবিলম্বে 50 শতাংশ শ্রমিক নিয়ে কাজ চালানোর নিয়মে শিথিলতা আনুক সরকার ৷
আরও পড়ুন : লকডাউন পরিস্থিতিতে রুজি হারিয়ে বিপাকে পরিবহণ শ্রমিক ও গাড়ির মালিকরা