কলকাতা, 18 জুন : গত কয়েক বছরে ইস্টবেঙ্গলে লগ্নিকারীর সমস্যা বারবারই মাথাচাড়া দিয়েছে । তবে এবার লগ্নিকারীর সঙ্গে সরাসরি সংঘাত নয় । চুক্তি করতে সময় লাগছে দু'পক্ষের । আর সেই কারণেই চাপ বাড়ছে ক্লাবের রিক্রুটারদের উপরে । নতুন করে ফুটবলাদের সঙ্গে চুক্তি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছে পদ্মাপাড়ের ক্লাব (East Bengal Investor Issue)।
শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে ইনভেস্টর সমস্যায় ভুগছিল লাল-হলুদে । সেই সময় ত্রাতা হয়ে ওঠেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । ইস্টবেঙ্গলে বিনিয়োগের বিষয়ে উৎসাহ দেখিয়েছিল ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডও । সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে তাদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন । কিন্তু তারপরেও কেন ম্যান ইউ-এর সঙ্গে চুক্তি হল না ?
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের মালিক গোষ্ঠী ইস্টবেঙ্গলে বিনিয়োগ করতে এলে মালিকানা দাবি করত । সৌরভ নিজেও স্পষ্টভাবে এই কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন । মালিক হিসেবেই আসতে চায় রেড ডেভিলসরা । তবে শতবর্ষের ক্লাবের মালিক অন্য কোনও গোষ্ঠী হলে, সমর্থকদের ভাবাবেগে আঘাত লাগতে পারে। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ক্লাব । কর্তারাও সমর্থকদের কথা ভেবেই কাজ করেন । ঠিক এই কারণেই শ্রী সিমেন্টের সঙ্গেও সমস্যা হয়েছিল কর্তাদের । শ্রী সিমেন্ট ক্লাবের দায়িত্ব নিজেদের কাছে রাখার কথা জানিয়েছিল । সেভাবে প্রাথমিক চুক্তি সারলেও মূল চুক্তিতে সই করেননি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা । অন্যদিকে ইমামির সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের বহু পুরনো সম্পর্ক । কিংফিশারের আগে লাল-হলুদের স্পনসর ছিল তারা । ফলে কলকাতার এই সংস্থা সমর্থকদের ভাবাবেগকে গুরুত্ব দেবেন বলেই বিশ্বাস কর্তাদের ।
মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ প্রথমবার আইএসএল-এ খেলার জন্য ইনভেস্টর দরকার ছিল ইস্টবেঙ্গলের । বিশেষত পড়শি ক্লাব মোহনবাগান ততদিনে এটিকে-র সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে খেলার ব্যবস্থা করে ফেলেছে । ফলে সমর্থকদের চাপ বাড়ছিল । সেই সময় কোয়েসের সঙ্গেও বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের । সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের গাঁটছড়া বাঁধতে সাহায্য করেছিলেন । তাঁর সামনেই প্রাথমিক চুক্তিতে সই করেন ক্লাব কর্তারা । তবে সেই সম্পর্কও খুব বেশিদিন টেকেনি । ফের মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন কর্তারা । ইস্টবেঙ্গলের সমস্যার কথা জানতে পেরে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও । এর মধ্যেই ইমামির কর্তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে যান ।
আরও পড়ুন : স্পোর্টস লাইব্রেরি, বইমেলা ! নতুন রূপে সেজে উঠছে বাগান
ঘটনাচক্রে সেই সময় তখন ইস্টবেঙ্গল কর্তারাও নবান্নে উপস্থিত ছিলেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, "দু'পক্ষই চা খেতে আমার এখানে এসেছিলেন । কথা বলে ইস্টবেঙ্গলের ইনভেস্টর সমস্যা মিটিয়েছি ।" তবে চুক্তির ব্যাপারে কোনও কথা সেদিন হয়নি । তারপরে এখনও চুক্তির কাগজ ক্লাবে না আসার কারণে তাতে সই হয়নি । দেরি হওয়ায় ফুটবলারদের সই করাতেও সমস্যা হচ্ছে ক্লাবের । ফলে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাইছেন ক্লাব কর্তারা । কিন্তু তার বর্তমান অবস্থা কোন জায়গায়, তা নিয়ে সকলেই অন্ধকারে ।