কলকাতা, 17 ফেব্রুয়ারি : কেউ বলছেন, এক ভাল মনের মানুষকে হারালাম ৷ কেউ বলছেন, আমি আজ বন্ধুহারা ৷ প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্যের গলায় প্রিয় দাদাকে হারানোর শোক ৷ সুব্রত ভট্টাচার্য বলছেন দীর্ঘদিনের বন্ধু চলে গেল । প্রাক্তন ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্তের প্রয়াণে কলকাতা ময়দান জুড়ে হাহাকার ৷ প্রাক্তন থেকে বর্তমান ফুটবলাররা শোকস্তব্ধ (Surajit Sengupta Dies ) ৷ তাঁদের স্মৃতিপটে ভেসে এল ফুটবলার সুরজিৎ থেকে মানুষ সুরজিতের কথা ৷
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত ৷ গত 23 জানুয়ারি বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন ৷ সঙ্কটজনক ছিল তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি ৷ রাজ্য সরকারের তরফে প্রাক্তন ফুটবলারের চিকিৎসার দিকটি দেখছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ৷ চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা, সঙ্গে ছিল তাঁর অগুনতি অনুরাগীর প্রার্থনা ৷ কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে ইহজগতের মায়া কাটিয়ে লক্ষ্মীবারের দুপুরে চলে গেলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত ৷ মাত্র 71 বছর বয়সে সুরজিৎ সেনগুপ্তের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না সুব্রত ভট্টাচার্য ৷ ধরা গলায় বললেন, "আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা এখন অনেক আধুনিক ৷ তবুও একজন করোনা আক্রান্তকে বাঁচানো গেল না ৷ এটা ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক ৷ সুরজিতের চলে যাওয়াটা মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে ৷"
আরও পড়ুন : Surajit Sengupta demise : "তুমি দৌড়োও সুরো, তোমার দৌড়কে ওরা ভয় পায়..." সুরজিতকে বলেছিলেন পিকে
একসঙ্গে কলকাতা ময়দানে দাপিয়ে খেলেছেন সুব্রত-সুরজিৎ ৷ তাই একসময়ের সতীর্থ ধীরে ধীরে পরম বন্ধুতে পরিণত হয়েছিলেন ৷ স্মৃতির পাতা হাতড়ে বললেন, "1970 সালে, সেই ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে খেলা শুরু করেছি ৷ ওর সঙ্গে প্রচুর স্মৃতি ৷ কোথায় খেলিনি আমরা ৷ প্রথমে জেলার হয়ে খেলেছি ৷ এরপর ক্লাব ফুটবল, বাংলা, ভারতীয় দলের হয়ে খেলেছি ৷ ও আমার থেকে দু'বছর আগে মোহনবাগানে সই করেছিল ৷ এই তো গল্ফগ্রিনে আমার বাড়ির চারটে বাড়ি পরেই সুরজিতের বাড়ি ৷ ওর মতো মানুষের চলে যাওয়াটা আমার কাছে খুব কষ্টের ৷"
মানস ভট্টাচার্য বললেন, "কী আর বলব ৷ খুবই খারাপ লাগছে ৷ 1976 সালে একসঙ্গে সুরজিৎদার সঙ্গে বাংলা দলে সুযোগ পেয়েছিলাম ৷ চারবছরই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম আমরা ৷ গত 23 তারিখে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৷ সেই থেকে আমরা তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছি ৷ রাজ্য সরকারের খুব সহযোগিতা পেয়েছি ৷ ওঁর ছেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে ৷ বাড়ি ফিরিয়ে আনার খুব চেষ্টা করেছিলাম ৷"
শোকার্ত গলায় মানস বললেন,"করোনা সুভাষ ভৌমিককে নিয়ে গেল ৷ প্রদীপদা, চুনীদা , চিন্ময়দা চলে গেলেন ৷ সুরজিৎ সেনগুপ্ত খেলোয়াড় হিসেবে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন ৷ ওনার খেলার গুণমুগ্ধ ছিলাম ৷ ওঁর চলে যাওয়া বাংলা ও ভারতীয় ফুটবলের অপূরণীয় ক্ষতি ৷"
আরও পড়ুন : Surajit Sengupta Demise : ভারতীয় ফুটবলে ফের নক্ষত্রপতন, চলে গেলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত