দোহা, 7 ডিসেম্বর: বিশ্বকাপের গোড়ায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর নেতৃত্বাধীন পর্তুগালে মুগ্ধ হয়েছিল ফুটবল বিশ্ব । ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো নেই এমন পর্তুগালও অবাক করে দিল তাবড় বোদ্ধাদের । তিনি ডাগ আউটে বসে আর তাঁর পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা ব্যক্তিটি হ্যাটট্রিক করলেন (Hattrick by debutant Gonçalo Ramos helped Portugal to beat Switzerland) । শুধু তাই নয় পুরো দলটাই মেতে উঠল গোলের উৎসবে । এই দৃশ্য এর আগে কবে দেখা গিয়েছে তা মনে করতে বেগ পেতে হবে । কিন্তু কাতারের মঙ্গলবারের রাত অফুরন্ত আবেগে ভাসিয়ে দিল পতুর্গালের সমর্থকদের (Portugal reached to the quarter final by beating Switzerland)।
সবমিলিয়ে সুইৎজারল্যান্ড ডিফেন্স ভেঙে খানখান। 6-1 গোলে তাঁদের হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল পর্তুগাল। হ্যাটট্রিক করলেন দলের সবচেয়ে তরুণ ফুটবলার গঞ্জালো র্যামোস। তিনি আবার আজ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পরিবর্তে মাঠে নামেন। প্রথমবার জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েই নিজেকে প্রমাণ করলেন তিনি। গোল পেয়েছেন পর্তুগালের প্রবীনতম ফুটবলার পেপেও।
প্রথম গোলটাই আসে গঞ্জালো র্যামোসের পা থেকে। থ্রো থেকে বক্সের মধ্যে থাকা গঞ্জালো র্যামোসকে পাস বাড়িয়ে দেন জোয়াও ফেলিক্স। প্রথম পোস্টেই সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সোমারকে পরাজিত করেন তিনি। ম্যাচের বয়স তখন 17 মিনিট। রোনাল্ডোর পরিবর্তে প্রথম একাদশে সুযোগ পান তিনি।
আরও পড়ুন: বোনোর হাতে স্পেনের বিদায়, প্রথমবার শেষ আটে মরক্কো
33 মিনিটে গোল করেন পেপে। এদিনের পর্তুগালের অধিনায়ক তিনি। কর্নার থেকে হেডে গোল করে গেলেন পেপে। সেই সুবাদে 2-0 গলে এগিয়ে গেল পর্তুগাল। বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পেয়ে গিয়েছিল সুইসরা। জেরদান শাকিরির অসাধারণ ফ্রিকিক দারুণ সেভ করলেন দিয়েগো কস্তা। দারুণ সুযোগ নষ্ট করলেন র্যামোস। প্রতি আক্রমণে উঠে এসে র্যামোসকে থ্রু বাড়ান ব্রুনো ফার্নান্দেস। গোলরক্ষককে একা পেলেও গোল করতে পারেননি তিনি। তাঁর শট হাতে লাগিয়ে সেভ করেন ইয়ান সোমার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই 48 মিনিটে দলের তৃতীয় এবং নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন র্যামোস। ডানদিক থেকে উঠে আসা দিয়াগো ড্যালট ক্রস রাখেন বক্সে। বাঁ পায়ে পুশে সোমারের পায়ের ফাঁকা দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন। 55 মিনিটে ফের গোল করে দলের ব্যবধান আরও বাড়িয়ে দেন রাফায়েল গুরেরো। বক্সের বাইরে থেকে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন গুরেরো। বাঁ পায়ের জোরাল শটে গোল করে ফেলেন তিনি। 58 মিনিটে ব্যবধান কমায় সুইৎজারল্যান্ড। গোল করেন আকাঞ্জি। কর্নার থেকে সতীর্থের হেডে বল আসে আকাঞ্জির সামনে। পাঁ পায়ের টোকায় বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি।
67 মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক করে ফেললেন র্যামোস। ব্রুনো ফার্নান্দেসের পাস ধরে একাই বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েন তিনি। এগিয়ে আসতে থাকা গোলরক্ষকের মাথার ওপর বল পাঠিয়ে দেন গোলে। 92 মিনিটে দারুণ গোল রাফায়েল লিয়াওর। ডান পায়ে সেকেন্ড পোস্টে বল জালে জড়িয়ে দিলেন তিনি। বিশ্বকাপে অভিষেকেই হ্যাটট্রিকের বিরলতম নজির গড়লেন তিনি।
পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। কিন্তু দলের গোল উৎসবেও গোল পেলেন না। তার একটি শট জালে জড়ালেও তা রেফারি অফসাইডের কারণে বাতিল করেন। শুরুতে তাঁকে বাদ দিয়ে কোচ একাদশ সাজিয়েছেন দেখে অবাক হয়েছিলেন সবাই। পর্তুগাল শিবিরে কোচের সঙ্গে তাঁর অশান্তির জেরেই যে প্রথম0 একাদশ এভাবে তৈরি হয়েছিল তা বুঝতে বাকি রইল না। কারণ অশান্তি যে চলছে তা আগেই প্রকাশ হয়েছিল। এর উপর দলের সবচেয়ে তরুণ ফুটবলারের চলতি বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক,দলের গোল উৎসব এবং মাঠে পরিবর্ত নেমেও ছাপ না ফেলতে পারা। সিআর সেভেন সাজঘরের দেওয়াল লিখন বোধহয় পড়তে পারছেন।