ETV Bharat / sports

World Cup Football: জাতীয় সঙ্গীতে গলা না মিলিয়ে মানবতার যুদ্ধে জয়ী ইরানের ফুটবলাররা

চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর কুর্দিশ তরুনী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে ইরান। নারীদের স্বাধীনভাবে বাঁচার এবং পোশাক পরার অধিকার দিতে হবে এই দাবিতে পথে নেমেছে ইরানের মেয়েরা। সরকার বিরোধী হিজাব আন্দোলনে ইরানের মহিলাদের প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়ে ম্যাচের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলাননি ইরানের ফুটবলাররা (Iran football team refused to sing national anthem) ।

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By

Published : Nov 22, 2022, 8:21 AM IST

Updated : Nov 22, 2022, 8:44 AM IST

দোহা, 22 নভেম্বর: "আজ এ খেলা শুধু খেলা নয়, সংগ্রাম..." । বছর দশেক আগে বাঙালির মুখে মুখে ফিরত 'এগারো' ছবির এই গানটি । মোহনবাগান কীভাবে ইংরেজদের হারিয়ে 1911 সালের আইএফএ শিল্ড জিতেছিল সেই কাহিনী তুলে ধরেছিল ছবিটি । বাস্তবেও দেশে দেশে কালে কালে সংগ্রামের অনন্য প্রতীক হয়ে থেকেছে খেলার মাঠ। সমাজে ঘটে চলা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সবুজ গালিচার দিকপালরা । এবার কাতারের ফুটবল বিশ্বকাপেও ধরা পড়ল সেই ছবি ।

ইরানের হিজাব আন্দোলনের ছায়া দেখা গেল কাতার বিশ্বকাপের মঞ্চে। সরকার বিরোধী হিজাব আন্দোলনে ইরানের মহিলাদের প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়ে ম্যাচের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলাননি ইরানের ফুটবলাররা (Iran football team refused to sing national anthem)। সমস্ত আর্ন্তজাতিক ম্যাচে প্রথামাফিক দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। খেলোয়াড়রা তাতে গলা মেলান এটাই স্বাভাবিক ছবি। বিশ্বকাপের আসরে দশকের পর দশক ধরে এই ছবি দেখতে কমবেশি সকলেই অভ্যস্ত । ইংল্যান্ড বনাম ইরান ম্যাচে অবশ্য উলটো ছবি দেখল বিশ্ব। বিশ্বকাপের মঞ্চকে প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে বেছে নিলেন ইরান ফুটবলাররা। জাতীয় সঙ্গীতের সময় তাদের নিশ্চুপ দেখে গ্যালারিতে ইরানি মহিলাদের চোখ ভিজে গেল জলে। পাশাপাশি তাবড় ক্রীড়া অনুরাগীদের হয়ত মনে পড়ে গেল এক আফ্রিকানের কথা । হেনরি ওলঙ্গা । জিম্বাবয়ের এই তারকাও তাঁর দেশে হয়ে চলা নানা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপকেই । মাঠে নেমেছিলেন কালো ব্যাচ পরে । পরিণাম হয়েছিল মারত্মক । মাতৃভূমি ছাড়তে হয়েছিল । আরও পরে ক্রিকেটেও ইতি টানেন ওলঙ্গা । তবে সংগ্রাম কবেই বা পরিণতির ভয়ে পিছিয়ে আসে !

আরও পড়ুন: সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজিমাত, সেনেগালের বিরুদ্ধে জয়ী ডাচরা

চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর কুর্দিশ তরুনী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে ইরান। নারীদের স্বাধীনভাবে বাঁচার এবং পোশাক পরার অধিকার দিতে হবে এই দাবিতে পথে নেমেছে ইরানের মেয়েরা। চুল কেটে,হিজাব পুড়িয়ে চলছে প্রতিবাদ । বন্দুকের নলের সামনেও তাঁদের কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে যায়নি। বরং প্রতিবাদের কণ্ঠ জোরালো হয়েছে দিনে দিনে। সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন ইরানের ফুটবলার সর্দার আজমুন। কঠোর দমনপীড়ন আন্দোলনকে যেন নয়া দিশা দিয়েছে। প্রতিবাদ যে এই পথে এগোতে পারে তার পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছিলেন ইরানের অধিনায়ক আলিরেজা জাহানবাকশ। তাই নব্বই মিনিটের ফুটবল যুদ্ধে ইংল্যান্ডের কাছে পরাজিত হলেও মানবতার লড়াইয়ে
জিতে গেছে ইরান!

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ইরানের ফুটবল টিম পরাজিত ইংল্যান্ডের কাছে । কিন্তু তবুও ইরানের লাল জার্সিরা জিতে গিয়েছে। তারা জিতে গিয়েছে মানবতার কাছে। খেমেইনি- রইসির জমানার বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ। মাহশা আমিনির খুনের পর গোটা দেশ নেমে এসেছে কার্যত রাস্তায়। প্রতিদিন প্রতিবাদ। পুলিশ মিলিটারির বুলেট অগ্রাহ্য করে, খুন হয়েও থামেনি ইরানের জনতার প্রতিবাদ। আজকে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সংহতিতে সামিল ইরানের ফুটবলাররাও । বাজল ইরানের জাতীয় সঙ্গীত। একজন ইরানের ফুটবলাররাও ঠোঁট মেলাননি জাতীয় সঙ্গীতে। হয়ত দেশে ফিরে শাস্তির মুখে পড়বেন । হয়তো বা জেল খাটবেন। তবুও হিম্মত দেখলেন ইরানের এগারো জন।

দোহা, 22 নভেম্বর: "আজ এ খেলা শুধু খেলা নয়, সংগ্রাম..." । বছর দশেক আগে বাঙালির মুখে মুখে ফিরত 'এগারো' ছবির এই গানটি । মোহনবাগান কীভাবে ইংরেজদের হারিয়ে 1911 সালের আইএফএ শিল্ড জিতেছিল সেই কাহিনী তুলে ধরেছিল ছবিটি । বাস্তবেও দেশে দেশে কালে কালে সংগ্রামের অনন্য প্রতীক হয়ে থেকেছে খেলার মাঠ। সমাজে ঘটে চলা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সবুজ গালিচার দিকপালরা । এবার কাতারের ফুটবল বিশ্বকাপেও ধরা পড়ল সেই ছবি ।

ইরানের হিজাব আন্দোলনের ছায়া দেখা গেল কাতার বিশ্বকাপের মঞ্চে। সরকার বিরোধী হিজাব আন্দোলনে ইরানের মহিলাদের প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়ে ম্যাচের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলাননি ইরানের ফুটবলাররা (Iran football team refused to sing national anthem)। সমস্ত আর্ন্তজাতিক ম্যাচে প্রথামাফিক দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। খেলোয়াড়রা তাতে গলা মেলান এটাই স্বাভাবিক ছবি। বিশ্বকাপের আসরে দশকের পর দশক ধরে এই ছবি দেখতে কমবেশি সকলেই অভ্যস্ত । ইংল্যান্ড বনাম ইরান ম্যাচে অবশ্য উলটো ছবি দেখল বিশ্ব। বিশ্বকাপের মঞ্চকে প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে বেছে নিলেন ইরান ফুটবলাররা। জাতীয় সঙ্গীতের সময় তাদের নিশ্চুপ দেখে গ্যালারিতে ইরানি মহিলাদের চোখ ভিজে গেল জলে। পাশাপাশি তাবড় ক্রীড়া অনুরাগীদের হয়ত মনে পড়ে গেল এক আফ্রিকানের কথা । হেনরি ওলঙ্গা । জিম্বাবয়ের এই তারকাও তাঁর দেশে হয়ে চলা নানা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপকেই । মাঠে নেমেছিলেন কালো ব্যাচ পরে । পরিণাম হয়েছিল মারত্মক । মাতৃভূমি ছাড়তে হয়েছিল । আরও পরে ক্রিকেটেও ইতি টানেন ওলঙ্গা । তবে সংগ্রাম কবেই বা পরিণতির ভয়ে পিছিয়ে আসে !

আরও পড়ুন: সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজিমাত, সেনেগালের বিরুদ্ধে জয়ী ডাচরা

চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর কুর্দিশ তরুনী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে ইরান। নারীদের স্বাধীনভাবে বাঁচার এবং পোশাক পরার অধিকার দিতে হবে এই দাবিতে পথে নেমেছে ইরানের মেয়েরা। চুল কেটে,হিজাব পুড়িয়ে চলছে প্রতিবাদ । বন্দুকের নলের সামনেও তাঁদের কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে যায়নি। বরং প্রতিবাদের কণ্ঠ জোরালো হয়েছে দিনে দিনে। সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন ইরানের ফুটবলার সর্দার আজমুন। কঠোর দমনপীড়ন আন্দোলনকে যেন নয়া দিশা দিয়েছে। প্রতিবাদ যে এই পথে এগোতে পারে তার পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছিলেন ইরানের অধিনায়ক আলিরেজা জাহানবাকশ। তাই নব্বই মিনিটের ফুটবল যুদ্ধে ইংল্যান্ডের কাছে পরাজিত হলেও মানবতার লড়াইয়ে
জিতে গেছে ইরান!

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ইরানের ফুটবল টিম পরাজিত ইংল্যান্ডের কাছে । কিন্তু তবুও ইরানের লাল জার্সিরা জিতে গিয়েছে। তারা জিতে গিয়েছে মানবতার কাছে। খেমেইনি- রইসির জমানার বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ। মাহশা আমিনির খুনের পর গোটা দেশ নেমে এসেছে কার্যত রাস্তায়। প্রতিদিন প্রতিবাদ। পুলিশ মিলিটারির বুলেট অগ্রাহ্য করে, খুন হয়েও থামেনি ইরানের জনতার প্রতিবাদ। আজকে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সংহতিতে সামিল ইরানের ফুটবলাররাও । বাজল ইরানের জাতীয় সঙ্গীত। একজন ইরানের ফুটবলাররাও ঠোঁট মেলাননি জাতীয় সঙ্গীতে। হয়ত দেশে ফিরে শাস্তির মুখে পড়বেন । হয়তো বা জেল খাটবেন। তবুও হিম্মত দেখলেন ইরানের এগারো জন।

Last Updated : Nov 22, 2022, 8:44 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.