কলকাতা, 21 মার্চ: পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং সমর্থকদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য মোহনবাগানকে 50 লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata at Mohun Bagan)। সোমবার আইএসএল চ্যাম্পিয়ন ট্রফি দেখতে এসে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত জনতার মন জিততে নস্টালজিক, কুশলী এবং স্বপ্ন বিক্রেতার ভূমিকায় । মোহনবাগানের খেলা থাকলে মায়ের কালী মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার গল্প, ফুটবলকে নিয়ে রসিকতার আদলে দাদা-বৌদির পারিবারিক অশান্তি, পাড়ার ক্লাবে নিজের বাবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার অজানা গল্প এদিন শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর মুখে । যা একেবারেই অভাবনীয় ।
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে তথ্য বিভ্রাট অবশ্যই রয়েছে । যখন তিনি বলেন, গোর্খা ব্রিগেডের বিরুদ্ধে খালি পায়ে ফুটবল খেলেছিলেন গোষ্ঠ পাল ৷ তখন উপস্থিত জনতা মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে । আবার যখন তিনি বললেন, মোহনবাগান ভবিষ্যতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবে কিংবা ব্রাজিল-ইতালি-পোল্যান্ডের সঙ্গে খেলবে তখন চাপা হাসির রোল উপস্থিত জনতার মধ্যে । এরই মধ্যে তিনি যখন খেলা হবে আরও আরও বড় খেলা হবে বললেন মঞ্চ থেকে তখন আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল নেত্রীর বার্তা মনে হয় ।
আরও পড়ুন : 'এটিকে শুনতে ভালো লাগে না, সঞ্জীবকে পালটাতে বলেছিলাম', নাম বদলে সবুজ-মেরুনের আবেগ ছুঁলেন মমতা
আনন্দের আবহে মোহনবাগান কর্তারা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে পাত্তা দিতে নারাজ । তাঁর দেওয়া 50 লক্ষ টাকা পরিকাঠামোর উন্নয়নের কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়েই পরিকল্পনা সাজাতে চান তাঁরা । চলতি সপ্তাহে 24 মার্চ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অমল দত্তর কন্যার উপস্থিতিতে জিমের উদ্বোধন হবে । 2 এপ্রিল শিলিগুড়িতে মোহনবাগানের নামে রাস্তার সূচনা রয়েছে । সচিব দেবাশিস দত্ত জানান, তিনি আগামী দিনে সমস্ত জেলায় মোহনবাগানের নামে রাস্তার সূচনা করতে চান । সেই ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন বলেও জানিয়েছেন । পয়লা বৈশাখে চুনী গোস্বামীর নামাঙ্কিত প্রবেশদ্বারের উদ্বোধন করার কথাও জানান তিনি ।
সোমবার তিনি বলেন,"সচিবের চেয়ারে বসার পরে মোহনবাগানের নামের আগে এটিকে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল । সঞ্জীব গোয়েঙ্কা আশ্বস্ত করেছিলেন । তবে ঘোষণার বিষয়টি নিজের হাতে রাখার কথাও বলেছিলেন । সেইমতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রাতে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার নাম পরিবর্তনের ঘোষণা পূর্বপরিকল্পিত । ইস্টবেঙ্গল সমস্যার কারণে দল গড়তে পারেনি বলে সওয়াল করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী । তাঁর এই সওয়ালে মোহনবাগান সমর্থকরা আওয়াজ তুললেও থামেননি ।"
দেবাশিস দত্তের কথায়, যেহেতু তিনি পেশায় শিল্পপতি তাই ক্লাব এবং লগ্নিকারীর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা সহজ হয়েছে । যা হয়তো অন্য দলে নেই । তবে ইস্টবেঙ্গলও বাংলার ফুটবলের স্বার্থে ঘুরে দাঁড়াক তা চান । সামনেই দুই প্রধানের ডেভেলপমেন্ট দলের ডার্বি । এই বিষয়ে তাঁর সাফ বক্তব্য, "দর্শকরা বলছে, যতবার ডার্বি ততবার হারবি ।"
আরও পড়ুন : আগামী মরশুমে নাবিক ফেরান্দোই, সোমবার বাগান তাঁবুতে মুখ্যমন্ত্রী