কলকাতা, 18 সেপ্টেম্বর: আট থেকে আশি, তাঁকে সকলেই চেনেন যমুনা মাসি (Jamuna Masi) নামে ৷ কখন, কীভাবে যে ময়দানে তিনি সকলের 'যমুনা মাসি' হয়ে গিয়েছেন তার সঠিক দিনক্ষণ বলা সম্ভব নয়। বাড়ি সোদপুরে। কয়েকবছর আগে প্রয়াত হয়েছেন স্বামী। ইস্টবেঙ্গল অন্তপ্রাণ যমুনা মাসির কপালে আগে তাই লাল-হলুদ টিপ এখন বদলে গিয়েছে কালোতে। তবে মনটা যে এখনও লাল-হলুদ। দু'দশকের বেশি সময় ধরে সোদপুর নিবাসী মানুষটি বহু ফুটবলারের উত্থান-পতনের সাক্ষী। এমনই এক অনন্য মহিলা সমর্থককে দলের মধ্যাহ্নভোজে সামিল করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বেঙ্গালুরু এফসি।
সমর্থককুল ছাপিয়ে যমুনা মাসি এখন ফুটবলারদেরও কাছের মানুষ। ভারতীয় ফুটবলাররা তো ছেড়ে দিন, ময়দানে খেলতে আসা সব দেশি-বিদেশি ফুটবলাররাও যমুনা মাসি'কে জানেন। ডুরান্ড ফাইনালে (Durand Cup Final 2022) নামার কয়েক ঘণ্টা আগে বেঙ্গালুরু এফসি'র (Bengaluru FC) সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ করার আমন্ত্রণ জানানো হয় যমুনা মাসিকে। তাঁকে সোদপুরের বাড়ি থেকে গাড়ি করে নিয়ে আসার ব্যবস্থাও করে বিএফসি। হোটেলে অভ্যর্থনা জানাতে অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri) নিজেই অপেক্ষা করছিলেন।
আরও পড়ুন: সব পেলেও অধরা ডুরান্ড, শ্বশুরবাড়ির মাঠে লক্ষ্যপূরণে মরিয়া সুনীল
"ময়দানের দুই প্রধানকে ঘিরে অনেক আবেগ। সেই আবেগ অনেক ব্যক্তির মধ্যেও দেখা যায়। যা বিস্মিত করে। আমি সেরকম মানুষের অপেক্ষায় ছিলাম। কলকাতা ময়দানে খেলার দিন থেকে তাঁকে আমি চিনি। এই রকম একজন মানুষকে দলের মধ্যাহ্ন ভোজে আমন্ত্রিত করতে পেরে আমরা সকলেই আপ্লুত।" যমুনা মাসিকে পাশে বসিয়ে বললেন সুনীল।
যমুনা মাসিকে নিয়ে দলের মধ্যাহ্নভোজনের ঘরে যখন অধিনায়ক প্রবেশ করেন তখন গোটা দল হাততালি দিয়ে অভ্যর্থনা জানায় তাঁকে। বেঙ্গালুরুর প্রবীর দাস নিজেও সোদপুরের ছেলে। তাই পরিচিতি বেশি। ক্লাবের তরফে প্রকাশিত ভিডিয়োয় তাঁকে দেখা গেল যমুনা মাসির সঙ্গে আলাপচারিতায়। গুরপ্রীত সিং সান্ধুকে 'ছোটু' বলে ডাকেন যমুনা মাসি। তাঁর বেড়ে ওঠার দিনের সাক্ষী। তাই পুরানো দিনের গল্প প্রিয় ছোটু'কে শোনালেন যমুনা মাসি। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নেওয়ার পাশাপাশি ভালো আছে কি না তা জিজ্ঞাসা করলেন সন্দেশ ঝিঙ্গান।
-
For decades, she's the one with all the sweets at the Salt Lake. Default mother to so many footballers. Iron voice, softest heart. Jamuna 'Lozenge Maashi' Das is every bit a legend of #IndianFootball. For all the love she's given, we wanted to give back just a little ♥️ #WeAreBFC pic.twitter.com/HZYEuMYTmn
— Bengaluru FC (@bengalurufc) September 18, 2022 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">For decades, she's the one with all the sweets at the Salt Lake. Default mother to so many footballers. Iron voice, softest heart. Jamuna 'Lozenge Maashi' Das is every bit a legend of #IndianFootball. For all the love she's given, we wanted to give back just a little ♥️ #WeAreBFC pic.twitter.com/HZYEuMYTmn
— Bengaluru FC (@bengalurufc) September 18, 2022For decades, she's the one with all the sweets at the Salt Lake. Default mother to so many footballers. Iron voice, softest heart. Jamuna 'Lozenge Maashi' Das is every bit a legend of #IndianFootball. For all the love she's given, we wanted to give back just a little ♥️ #WeAreBFC pic.twitter.com/HZYEuMYTmn
— Bengaluru FC (@bengalurufc) September 18, 2022
আরও পড়ুন: প্রস্তুতি ম্যাচে তিন গোলে জয়, প্রস্তুতিতে খুশি স্টিফেন
"ওরা সকলেই আমার ছোট ভাই। আমি ওদের অনেক দিন ধরে চিনি। বহু জায়গায় গিয়েছি। ওরা আমার পাশে থেকেছে। আজ যেভাবে সম্মানিত করল তা আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেল", বললেন আবেগতাড়িত যমুনা মাসি। তবে সুনীল ছেত্রীর আপ্যায়ণে বিস্মিত তিনি। যেভাবে পাশে বসিয়ে যত্ন করে খাইয়েছেন তা স্বপ্ন মনে হচ্ছে। "সবাই মেসি বা অন্য বিখ্যাত বিদেশিদের কথা বলে। আমার কাছে সুনীলই সেরা" এমনটাই বললেন যমুনা মাসি। একজন মহিলার এহেন ফুটবল আবেগ দেখে বিস্মিত বেঙ্গালুরু এফসি কোচ। দলের বাকি তরুণ ফুটবলাররাও সম্মোহিত। বিদেশের ক্লাব সংস্কৃতিতে বিশেষ কোনও অতিথিকে এমন মধ্যাহ্নভোজ বা নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানোর ছবি আকছার দেখা যায় ৷ এবার ভারতীয় ফুটবলেও সেই ছবি তুলে ধরে দৃষ্টান্তমূলক ছবি দেখা গেল ব্লুজ-দের অন্দরমহলে। এদিন লাল-হলুদ সমর্থক যমুনা মাসির হাতে তুলে দেওয়া হল বেঙ্গালুরু এফসির জার্সি।