কলকাতা, 8 ফেব্রুয়ারি: হার, ড্র, জয়, হার । গত চার ম্যাচের পরিসংখ্যানে এটিকে মোহনবাগানের বিবর্ণ ছবিটা ক্রমেই ফুটে উঠছে ৷ ধারাবাহিকতা একেবারেই নেই বলে চলে ৷ আর তাই দেখে সদস্য এবং সমর্থক সকলেই আশা হারাচ্ছেন ৷ যে দলকে ঘিরে মরশুমের শুরুতে ছিল আশার ছটা ৷ এখন সেটাই নিভতে বসেছে ৷ প্রথম পাঁচে আপাতত থাকলেও তা ধরে রাখা যাবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে জয় না-পেলে ৷ তাদের পরবর্তী ম্যাচ জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে ( Jamshedpur FC vs ATK Mohun Bagan FC) ৷
“ঘুরে দাঁড়াবে দল”, আশাবাদী এটিকে মোহবাগানের মিডফিল্ডার হুগো বুমোস ৷ ফরাসি মিডফিল্ডারের গলায় ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তায় ইস্পাতনগরীতে সবুজ-মেরুন জেগে উঠে কি না, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৷ তবে, এটা ঠিক এক ম্যাচ আগেও আইএসএল-এর প্রথম দুইয়ে শেষ করার বিষয়ে আশাবাদী ছিল মোহনবাগান শিবির ৷ কিন্তু, বেঙ্গালুরু এফসি-র কাছে হারের পর হঠাৎই বদলে গিয়েছে ছবিটা ৷ লিগ টেবিলে এটিকে মোহবাগান নেমে গিয়েছে পাঁচ নম্বরে ৷
এখান থেকেও ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছেন মোহনবাগানের বিদেশি মিডফিল্ডার হুগো বুমোস ৷ জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে খেলতে যাওয়ার আগে বললেন, “আমরা মোহনবাগান, আমরা প্রত্যাবর্তন করবই ৷ বেঙ্গালুরুর কাছে হার নিয়ে আমরা আর ভাবছি না ৷ দলের ফোকাসে শুধুই জামশেদপুর ম্যাচ ৷” কার্ড সমস্যায় বেঙ্গালুরু ম্যাচ খেলতে পারেননি বুমোস । সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তাঁর বার্তা, “আমাদের আরও আক্রমণাত্মক মানসিকতা দেখাতে হবে ৷ পুরো ম্যাচ একইভাবে খেলতে হবে ৷ আমাদের স্কোয়াডে ভাল দেশি-বিদেশি ফুটবলার আছে ৷ অধিকাংশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ফুটবল খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে ৷ ফলে আমাদের এভাবে পয়েন্ট নষ্ট করা ঠিক না ৷”
ফুটবলারদের মানসিকভাবে আরও শক্তিশালী হতে হবে বলে মনে করছেন সবুজ-মেরুন কোচ জুয়ান ফেরান্দো ৷ তাঁর কথায়, “আমরা সুযোগ তৈরি করলেও তা কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছি ৷ প্রতি ম্যাচে গোল লক্ষ্য করে 8-9টা শট নিলেও গোল আসছে না ৷ হয়তো ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাসের অভাব হচ্ছে ৷ আবার কখনও ভাগ্য আমাদের সঙ্গে থাকছে না ৷”
ভুল শুধরে শেষ চার ম্যাচে ভাল পারফরম্যান্স করার উপর জোর দিচ্ছেন ফেরান্দো ৷ কোচ বলছেন মানসিক জোর বাড়ানোর কথা ৷ হুগো বুমোস বলছেন, ঘুরে দাঁড়ানোর কথা ৷ অর্থাৎ, সমস্যা কোথায় তাই ঠিক করতে পারছে না টিম ম্যানেজমেন্ট ৷ প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের সামনে যাবতীয় আক্রমণ দিগভ্রষ্ট হচ্ছে ৷ লিস্টন কোলাসোকে টু্র্নামেন্টের শুরু ছন্দে পাওয়া যাচ্ছে না ৷ দ্রিমিত্রি পেত্রাতোস গোল করলেও ধারাবাহিক নন ৷ নবাগত গ্যালেগো আস্থা অর্জন করতে পারেননি ৷ সবমিলিয়ে মেরিনার্সরা ছন্দ খুঁজে পেতে ব্যর্থ হচ্ছেন ৷
আরও পড়ুন: অঙ্কিতকে শো-কজ, বাকি ম্যাচে সুপার কাপের প্রস্তুতি সারতে চান কনস্ট্যান্টাইন
ফুটবলারদের মানসিকতার বিষয়ে একমত হলেও, গ্যালারির চাপ নিয়ে ভিন্ন সুর ফেরান্দো ও বুমোসের গলায় ৷ শেষ দুই মরসুম কোভিডের জন্য ফাঁকা গ্যালারিতেই খেলেছেন লিস্টন কোলাসোরা ৷ সেখানে এবার স্টেডিয়ামে সমর্থকদের উপস্থিতি চাপ বাড়াচ্ছে তাঁদের ? ফেরান্দোর জবাব, “দলের অনেকেই, বিশেষত ভারতীয় ফুটবলারদের একাংশ আগে এত সমর্থকের সামনে খেলেনি ৷ ফলে সেটা পারফরম্যান্সের উপর প্রভাব ফেলছে ৷”
যদিও বুমোসের মতে, “ফুটবলে সমর্থকরাই সব ৷ ওদের আনন্দ দেওয়ার জন্যই আমরা ফুটবল খেলি ৷ এটুকু চাপ তো নিতেই হবে ৷ ওরা নতুন হওয়ায় হয়তো সমস্যায় পড়ছে ৷ তবে, এর সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়াই ভাল ৷” বাস্তবেও সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা যত দ্রুত চাপের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন, তত ভাল ৷ কারণ বেঙ্গালুরু-ওড়িশা এফসির সঙ্গে মোহনবাগানের ব্যবধান এখন সামান্য ৷