কলকাতা, 30 জুলাই: প্রথা ভেঙে মোহনবাগান দিবস এবছর দু'দিন ধরে পালিত হল । 29 জুলাই মহরম থাকার জন্য মোহনবাগান দিবসের অনুষ্ঠান দু'দিন হল । 29 জুলাই এই অনুষ্ঠানের প্রথম দিন ছিল সুব্রত ভট্টাচার্যের জীবনী প্রকাশ অনুষ্ঠান । দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ আজ রবিবার ছিল 'মোহনবাগান রত্ন' পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান । এবছর 'মোহনবাগান রত্ন' সম্মান পেলেন প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম সরকার। ময়দানের ছোট বেকেনবাওয়ার গৌতম সরকারের নাম রত্ন সম্মানের জন্য বিবেচিত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত তিনি ।
তাঁর কথায়, "আমার নাম বিবেচিত করার জন্য খুশি হয়েছিলাম। ফুটবলার হিসেবে দুই বড় প্রধানে খেলেছি । মোহনবাগানের জার্সিতে ফুটবল সম্রাট পেলের বিরুদ্ধে খেলেছি । তাঁর প্রশংসাও পেয়েছি । সেই ক্লাব আমাকে রত্ন সম্মানিত করছে । আমি অভিভূত । পুরোটাই স্বপ্ন মনে হচ্ছে । বিদেশ-মানস না-থাকলে আজকের এই পর্যায়ে আসতে পারতাম না । কিছু পাওয়ার জন্য ফুটবল খেলিনি । সাফল্য পেতে স্বপ্ন, ইচ্ছে এবং জয়ের ইচ্ছে থাকা জরুরি ।"
জীবনকৃতি সম্মান পেলেন প্রাক্তন ফুটবলার শংকর বন্দ্যোপাধ্যায়। "আমি মোহনবাগানের," ছোট্ট প্রতিক্রিয়া সবুজ মেরুন জার্সিতে কোচ এবং ফুটবলার হিসেবে ছড়িয়ে থাকা মানুষটির। বর্ষসেরা ভারতীয় ফুটবলার শিবদাস ভাদুড়ী পুরস্কার উঠল গোলরকেষক বিশাল কাইথের হাতে । আগামী মরশুমে ফের নির্ভরতা দেওয়ার বার্তা দিলেন। বর্ষসেরা ক্রিকেটার অরুণলাল পুরস্কার পাচ্ছেন অর্ণব নন্দী। তাঁর গলায় কঠিন পরিস্থিতি থেকে ট্রফির আলো নিয়ে আসার লড়াইয়ের কথা । বর্ষসেরা ফরোয়ার্ড সুভাষ ভৌমিক ট্রফি পেলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। কিন্তু তিনি অনুপস্থিত । তাঁর পুরস্কার নিলেন বিশালই। বর্ষসেরা ক্রীড়া সংগঠক অঞ্জন মিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন নবাব ভট্টাচার্য। এছাড়াও সেরা সমর্থক উমাকান্ত পালোধী পুরস্কার দেওয়া হল শান্তি চক্রবর্তী এবং কমলেশ উপাধ্যায়কে।
আরও পড়ুন : আজ মোহনবাগান দিবস, প্রকাশিত হবে সুব্রত ভট্টাচার্যের আত্মজীবনী
উৎসবের আনন্দের মধ্যে মোহনবাগানের পাখির চোখ ফুটবল দলের সাফল্যে। আগামী তিনদিন ডুরান্ডের প্রস্তুতির জন্য বন্ধ দরজার আড়ালে অনুশীলন করবে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস । রত্ন প্রদান অনুষ্ঠানে মোহনবাগান সভাপতি টুটু বসুও অনুপস্থিত ছিলেন । তবে মোহনবাগানে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন এদিন । ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ছাড়া মন্ত্রী অরূপ পায়, সুজিত বসু ছিলেন । ছিলেন বাবুল সুপ্রিয় । তিনি গানও পরিবেশন করেন ।
গৌতম সরকারের রত্ন পাওয়ার দিনে মঞ্চে ছিলেন 'ঘরের ছেলে' সুব্রত ভট্টাচার্য । এসেছিলেন ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবেও। বললেন তাঁর ভারতীয় ফুটবলের সামনে তাকানোর কথা। পাশাপাশি নিজের প্রথমবার মোহনবাগানে খেলার কথাও শোনালেন। গান গাইলেন লোপামুদ্রা । তবে প্রথমবার ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা গান পরিবেশন করল । তাদের বেসুরো উপস্থাপনা মনকাড়ার চেয়ে বিরক্তির উদ্রেগ করল। অনেকেই ফ্যান ক্লাবের গান পরিবেশনে আগামী বছরের ক্লাব নির্বাচনের প্রস্তুতির গন্ধ পাচ্ছেন । যার ইঙ্গিত মিলল সহ-সভাপতি কুণাল ঘোষের বক্তব্যেও । সবমিলিয়ে মোহনবাগান রত্ন প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজনের ত্রুটি ছিল না । তবুও কোথাও বেসুরো বাজল কয়েকজনের বক্তব্য ।