দোহা, 17 ডিসেম্বর: বিশ্বমানের খেলোয়াড় এবং বারবার অর্থনৈতিক সংকটের জন্য পরিচিত একটি ফুটবল-পাগল দেশ আর্জেন্তিনা ৷ আর সেই দেশের ফুটবল দলের সামনে 36 বছর পর ফের বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি ৷ আর সেই মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে দোহায় উপস্থিত অসংখ্য আর্জেন্তাইন সমর্থক ৷ আর্জেন্তাইন সমর্থকদের উৎসাহ, কোলাহলের সঙ্গে ‘মুচাকোস’-এর ছন্দ ক্রমশ বাড়ছে দোহার রাস্তায় (Argentines Flock to Qatar for Chance to Win The World Cup) ৷ যা আর্জেন্তাইন সমর্থকদের আনঅফিসিয়াল অ্যান্থেম ৷ যার সুর দোহার অলিতে-গলিতে লিওনেল মেসি (Lionel Messi)-র দলের জয়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও চড়া হয়েছে ৷
রবিবার আর্জেন্তিনা গতবারের বিশ্বজয়ী তথা এবারের ফিফা বিশ্বকাপের (FIFA World Cup 2022) সবচেয়ে ধারাবাহিক দল ফ্রান্সের (Argentina vs France) মুখোমুখি হবে ৷ তার আগে দোহার সওক ওয়াকিফ বাজারে আর্জেন্তিনার নীল-সাদা জার্সি গায়ে অসংখ্য আর্জেন্তাইন সমর্থক এবং স্থানীয়দের উৎসবে মেতে থাকতে দেখা গেল ৷ সেখানেই এক যুবতীকে ইংরেজি এবং আরবিয়ান ভাষায় হাতে লেখা ব্যানারে দেখা গেল ৷ সেই ব্যানারে লুসেইল স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচের টিকিটের জন্য অনুরোধ করেছেন ওই যুবতী ৷ সেখানে মাটিতে রাখা একটি টুপিতে রাস্তা দিয়ে যাওয়া লোকজন পয়সা রেখে যাচ্ছেন ৷
বেলেন গোডোয় নামে ওই যুবতী বলেন, ‘‘ফুটবল আমার কাছে সবকিছু ৷’’ বেলেন গত একমাস ধরে কাতারে রয়েছেন ৷ জানিয়েছেন এভাবেই তিনি আর্জেন্তিনার প্রতিটি ম্যাচের টিকিট রিসেলে কিনেছেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি পরিবারকে ছেড়ে চলে এসেছি ৷ আমার সমস্ত সঞ্চয় শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ আমি বুয়েনস আইরেসে ফিরে যাব ৷ তবে, জানিনা কীভাবে বাড়ি ভাড়া দেব ৷ তবে, আমি যে জীবনযাপন করছি, সেটা আমার থেকে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না ৷’’
আরও পড়ুন: 15 রানে অল-আউট, টি-20 ক্রিকেটে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড সিডনি থান্ডারের
কাছাকাছি জায়গায়, ক্রিশ্চিয়ান মাচিনেলি গোলকধাঁধার ওই বাজারের একটি গলির মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন ৷ আর্জেন্তিনার পতাকা ও মেসি এবং প্রয়াত ফুটবলার দিয়েগো মারাদোনার ছবি নিয়ে ৷ যেখানে 1986 সালে শেষবার আর্জেন্তিনার বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্ত রয়েছে ৷ মারাদোনা বিশ্বকাপ ট্রফিতে চুম্বন করছেন ৷ 34 বছরের ক্রিশ্চিয়ান মাচিনেলি বলেন, ‘‘বিশ্বকাপে আসার জন্য আমি টয়োটা ট্রাক বিক্রি করে দিয়েছি ৷ এখানে আমি অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছি ৷ আর ফাইনালের টিকিট কেনার জন্য যথেষ্ঠ অর্থ এখনও রয়েছে আমার কাছে ৷’’ তিনি জানান, আর্জেন্তাইন সমর্থকরা ফুটবলের জন্য পাগল ৷ আর এর কোনও ব্যাখ্যা বা যুক্তি খোঁজা অর্থহীন ৷