কলকাতা, 13 জুলাই: ড্র দিয়ে কলকাতা ফুটবল লিগ শুরু করল ইস্টবেঙ্গল ৷ বৃহস্পতিবার রেনবো অ্যাথলেটিক ক্লাবের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষ হয় গোলশূন্য ভাবে । অন্য দুই প্রধান যখন প্রতি ম্যাচে গোলের উৎসবে মেতেছে, সেখানে ইস্টবেঙ্গলের গোলশূন্য ম্যাচ যেন দক্ষিণবঙ্গের ভ্যাবসা গরমের অস্বস্তিকর আবহাওয়ার মতো । এদিন কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গল বনাম রেনবো অ্যাথলেটিক ক্লাবের ম্যাচ দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় হাজার দেড়েক দর্শক । প্রিয় দলের সমর্থনে তাঁরা ড্রাম বাজানো, চান্টিং সব করলেন । কিন্তু তাঁরা যে আশায় মাঠে এসেছিলেন সেই গোলটাই তো হল না ।
প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম চন্দ বহু বছর পরে বৃহস্পতিবার কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন । আগে নিয়মিত কলকাতা ময়দানে ফুটবল জীবনের জন্য যাওয়া আসা ছিল তাঁর । এখন আর যাওয়া হয়ে ওঠে না । সোনালি সত্তরের সোনাঝরা বিকেলের স্মৃতি আজও সজীব তাঁর মনে । বর্তমানে কলকাতা ময়দানে না গেলেও নিয়মিত খবরটা রাখেন । কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গলের খেলা পড়েছে বলে উপস্থিত হয়েছিলেন । ম্যাচ শেষে হতাশায় মাথা নাড়তে নাড়তে স্টেডিয়াম ছাড়লেন তিনি ।
ভিআইপি বক্সে বসেছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার অলোক মুখোপাধ্যায়ও । সাতে পাঁচে থাকতে অপছন্দ করা অলোক মুখোপাধ্যায়ের মুখেও ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্স ঘিরে আশাব্যঞ্জক শব্দ বের হল না । নিশ্চুপ অর্নব মণ্ডল, দীপঙ্কর রায় । ড্র দিয়ে কলকাতা লিগ ইস্টবেঙ্গল আগেও শুরু করেছে । কিন্তু খেলোয়াড়দের মান নিয়ে প্রথম ম্যাচের পরে প্রশ্ন ওঠার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি ।
ম্যাচ পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে ইস্টবেঙ্গল কোচ বিনো জর্জ জানিয়েছেন, সময়াভাবে ম্যাচ প্র্যাকটিস না-করতে পারার জন্যই এই ছন্নছাড়া ফুটবল দলের । একাধিক ফুটবলারের অসুস্থতায় সমস্যা কঠিন করেছে । তবে কয়েকটা ম্যাচ পরে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলে চেনা ছন্দ দেখা যাবে । ইস্টবেঙ্গল লিগ জয়ের দৌঁড়ে থাকবে এমনটাই দাবি, বিনো জর্জের ৷
রেনবো অ্যাথলেটিক ক্লাবের কোচের আক্ষেপ, তার দলের অভিজ্ঞ ফুটবলাররা সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ । তবে ইস্টবেঙ্গল নিয়ে আশাবাদী তিনি । গোটা পাঁচেক নতুন ফুটবলারের খেলা দেবজিতের ভালো লেগেছে । তাঁর কথায়, “একটা দল তিনদিন প্র্যাকটিস করে খেলতে নেমেছে । তারপরেও যা খেলেছে আমি ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে আশাবাদী । সময় পেলে ভালো খেলবে ৷” খেলা শুরুর প্রথম পাঁচ মিনিটে মাঠে গুরুতর চোট পান ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক আদিত্য পাত্র ৷ ঘাড়ে চোট পাওয়ায় তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় । আপাতত সুস্থ তিনি ।
আরও পড়ুন: জোড়া হ্যাটট্রিকে গোল উৎসব, ময়দানে 'প্রাণ' ফেরালেন সাদা-কালো সমর্থকরা
তবে এদিন বিনো জর্জ ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের হতশ্রী ফুটবলের কারণ ব্যাখা করেছেন । কিন্তু ফুটবলাররা কেন প্রাথমিক ভুলগুলো বারবার করলেন তার ব্যাখ্যা দিতে পারলেন না তিনি । রক্ষণে বোঝাপড়া নেই, মাঝমাঠে কুশ ছেত্রী ছাড়া প্রায় সকলেরই হতশ্রী ফুটবল । আক্রমণে স্ট্রাইকাররাও তথৈবচ । ফলে অন্তত দু'বার বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে গোল করার মত পরিস্থতি তৈরি করেও লাল হলুদ ফুটবলাররা কাজের কাজটি করতে ব্যর্থ । সব মিলিয়ে অন্য দুই প্রধানের সমর্থকদের উল্লাস যদি হয় সাফল্যের আনন্দ প্রকাশ তাহলে বৃহস্পতিবার কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের চিৎকার হাহাকারের নামান্তর ।
