কলকাতা, 21 জুন : কোরোনার দাপটে গৃহবন্দী মানুষ ৷ তাই দিন দিন বাড়ছে মানসিক চাপ ৷ প্রত্যহ প্রাতঃভ্রমণ যাদের অভ্যাস তাঁদেরও আপাতত তা বন্ধ রাখতে হয়েছে ৷ ফলে বাড়ছে শারীরিক সমস্যাও ৷ কিন্তু, এগুলি থেকে বেরিয়ে আসার উপায় আছে ৷ আর তা হল যোগাসন ৷ মত ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের ।
যেমন বাংলার ক্রিকেটার অনুষ্টুপ মজুমদার ৷ পরিবারের প্রিয় মানুষদের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি নতুন মরশুমের জন্য প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বাংলার এই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান । প্রথম দিকে লম্বা ছুটির হাতছানিতে খুশিই হয়েছিলেন তিনি ৷ কিন্তু, সময় যত এগিয়েছে ততই ঘরবন্দী জীবন ক্লান্তিকর মনে হয়েছে তাঁর কাছে । রসিকতার সুরে বাংলা দলের তারকা ব্যাটসম্যান বলছেন, "অক্লান্ত বিশ্রামে আমরা সকলে পরিশ্রান্ত ।" সেরা পারফরম্যান্স তুলে ধরতে ফিটনেসের তুঙ্গে থাকা জরুরি । তাই জিমের পাশাপাশি চিরকালই যোগাভ্যাসে আস্থা রাখেন বাংলা দলের এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান । সদ্য শেষ হওয়া মরশুমে বাংলার সাজঘরে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ত্রাতা । দল যখনই বিপদে পড়েছে, তখনই চওড়া হয়েছে তাঁর ব্যাট । লম্বা ইনিংসে দলকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছেন ।
দীর্ঘসময় বাইশগজে পড়ে থাকার মূলমন্ত্র ছিল যোগব্যায়াম, বলছেন অনুষ্টুপ । তাঁর কথায়, "আমি ছোটোবেলা থেকে নিয়মিত যোগব্যায়াম করি । এখন ব্যস্ত সূচিতে হয়তো নিয়মিত করা হয় না। কিন্তু, কোনও সন্দেহ নেই, যোগব্যায়ামের বিকল্প নেই ।" খেলোয়াড়দের চোট, আঘাত নিত্যসঙ্গী। অনুষ্টুপ বলছেন, চোট,আঘাত মুক্ত হতে যোগাভ্যাস সাহায্য করে। এছাড়া মেডিটেশনের উপরও জোর দেওয়ার কথা বলছেন তিনি ।
মনে সপ্তসাগর পার করার বাসনা ৷ ইতিমধ্যে পার করেছেন রটনেস্ট চ্যানেল, ইংলিশ চ্য়ানেল ও ক্যাটালিনা চ্যানেল ৷ মাত্র ছয় বছর বয়স থেকে সাঁতারু হিসেবে যাত্রা শুরু করেন সায়নি দাস ৷ বর্ধমানের কালনা শহরের সায়নি গ্রামের পুকুরে তাঁর প্রথমিক অনুশীলন শুরু করেন ৷ মাত্র ছয় মাসের অনুশীলনের পরই গঙ্গায় 10 কিলোমিটার সাঁতার কাটেন সায়নি ৷
কিন্তু, কোরোনার দাপটে আপাতত অনুশীলন বন্ধ সায়নির ৷ তাই নিজেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ রাখতে সায়নির এখন ভরসা যোগব্যায়াম ৷ সায়নি বলছেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে গৃহবন্দী হয়ে আমরা সকলেই প্রায় কমবেশি মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছি ৷ এই মানসিক অবসাদ কাটাতে যোগ অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ ৷ দীর্ঘক্ষণ সাঁতার কাটার জন্য মানসিক একাগ্রতার ভীষণভাবে দরকার পড়ে ৷ তাই আমি মেডিটেশন করি, যোগব্যায়াম করি ৷ খেলাধুলো, পড়াশোনা-সহ বাকি সমস্ত ক্ষেত্রে যোগের উপকারিতা প্রচুর ৷’'
প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে 21 তম কমনওয়েলথ টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতে ইতিহাস গড়েছিলেন বাংলার ঐহিকা মুখোপাধ্যায় ৷ ছয় বছর বয়সে টেবিল টেনিসে হাতেখড়ি ৷ বর্তমান ভারতীয় টেবিল টেনিসে মহিলাদের মধ্যে অন্যতম খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন তিনি ৷ টেবিল টেনিসই ধ্যান-জ্ঞান 21 বছরের ঐহিকার ৷ তাই নিজেকে ফিট রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন ৷ বর্তমানে তাঁর প্রস্তুতিতে বাধ সেধেছে লকডাউন ৷ কিন্তু, থেমে নেই ঐহিকা ৷ নিজেকে ফিট রাখতে ঐহিকার ভরসা এখন যোগব্যায়াম ৷
ঐহিকা বললেন, ‘‘যোগব্যায়াম আমাদের জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস ৷ আমাদের প্রত্যহ যোগ ও ব্যায়াম করা উচিত ৷ জিম, হাঁটা বা দৌড়ানোর পরেও যোগের গুরুত্ব অনস্বীকার্য ৷ যোগ আমাদের ফ্লেক্সিবেল হতে সাহায্য করে ৷ আমাদের এনার্জি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ৷ মানসিকভাবেও সুস্থ রাখে ৷ বর্তমানে ফিট থাকা একটা ট্রেন্ড ৷ তাই শুধুমাত্র খেলোয়াড়রাই নয়, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও যোগ খুব গুরুত্বপূর্ণ ৷’’ সবার জন্য ঐহিকার বার্তা, "অল্প হলেও প্রত্যহ যোগব্য়ায়াম করুন ৷ সুস্থ থাকুন ৷"