কলকাতা, 29 জুন : লড়াই জারি রয়েছে রিতিকা কর্মকারের ৷ হাসপাতালের বেডে বসেই ক্যানসারকে হারিয়ে শুটিং রেঞ্জে ফেরার স্বপ্ন দেখেন ৷ রিতিকার লড়াইয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল ক্রীড়া দফতর ৷ আজ ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস রীতিকার মা সুমনা কর্মকারের হাতে দু লাখ টাকার চেক তুলে দেন ৷ ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি । পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে বাংলার ক্রীড়ামহল ৷
বয়স মাত্র উনিশ ৷ একবছরের বেশি সময় ধরে রাজ্যের প্রতিভাবান শুটার রিতিকা কর্মকার ব্লাড ক্যানসারে ভুগছেন । কার্যত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন । একবছর আগে তার দুর্গানগরের বাড়িতে বসে শ্যুটিং রেঞ্জে ফিরে গিয়ে ফের পদক জয়ের স্বপ্নের কথা ইটিভি ভারতকে বলেছিলেন । সেদিনের সেই উচ্ছল কিশোরীর চোখে ছিল জীবনকে নতুনভাবে জয় করার প্রতিজ্ঞা । কিন্তু রিতিকার সামনে সেই প্রতিজ্ঞা পূরণ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷
2019 সালের মাঝামাঝি সময়ে রিতিকা ক্যানসারে আক্রান্ত । রাজারহাট ক্যানসার হাসপাতালে কয়েক মাস চিকিৎসাধীন থাকেন । একসময় ক্যানসার থেকে দুর্দান্ত কামব্যাক করেন ৷ কিন্তু যে ব্লাড ক্যানসারকে হারানো সম্ভব হয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল তা ফের বাসা বাঁধে রিতিকার শরীরে ৷ অসুস্থ হয়ে বর্তমানে টাটা ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অলিম্পিয়ান জয়দীপ কর্মকারের ছাত্রী । বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে ৷ চিকিৎসা চালাতে প্রচুর খরচ ৷ রিতিকার চিকিৎসার জন্য হাত বাড়য়ে দিল রাজ্যের ক্রীড়া দফতর ৷ বাংলার ক্রীড়ামহল উনিশের রিতিকাকে জীবনযুদ্ধে জয়ী দেখতে চায় ৷
জাতীয় স্কুল গেমস এবং রাজ্য শুটিংয়ের আসরের নজরকাড়া পারফরম্যান্স বলছিল শুটিংয়ে রিতিকার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল ৷ কোচ জয়দীপ কর্মকার বলছেন, "মেয়েটির মধ্যে হার না মানা মনোভাব রয়েছে ।যেকোনও জিনিস দ্রুত শিখে নিতে পারে । আবার অসুস্থ হয়ে পড়ার খবরে সত্যিই খারাপ লাগছে । ওর চিকিৎসা চালাতে বিপুল খরচ । সবাই মিলে এই প্রতিভাবান শুটারকে সুস্থ করার চেষ্টা করতে হবে । চেষ্টা চলছে ৷ ক্রীড়ামন্ত্রীর আর্থিক সাহায্য এবং পাশে থাকার আশ্বাস এই অবস্থায় বড় ভরসা ।"
প্রাণচঞ্চল সতীর্থকে নিয়ে চিন্তায় ভারতের অন্যতম সেরা শুটার মেহুলি ঘোষ । বলছেন, "আশা করব লড়াইটা জিতে দ্রুত শ্যুটিং রেঞ্জে ফিরবে রিতিকা । ফাইটার রীতিকার সুস্থ হয়ে ফেরার ব্যাপারে আমি আশাবাদী ।"
আরও পড়ুন : ফাইট রিতিকা ফাইট
প্রথমবার সুস্থ হওয়ার পরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল রিতিকার পরিবার । মায়ের চোখে ছিল যুদ্ধ জয়ের আনন্দাশ্রু । কয়েক মাস আগেই বলেছিলেন, ফের ক্যানসার ফিরলেও রিতিকা ভাল আছে । দ্রুত শুটিংয়ে ফিরবে । মাঝের সময়ে অবস্থার অবনতি হয়েছে । বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা অস্থি মজ্জা প্রতিস্থাপন জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে । চিকিৎসার জন্য 30 লাখ টাকা প্রয়োজন । রিতিকার মা সুমনা কর্মকার বলেছেন, "আমার 19 বছরের মেয়েটার চিকিৎসার জন্য 30 লাখ টাকা দরকার । ব্লাড ক্যানসারে ভুগছে । এখন অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করতে হবে । তাহলেই ভাল কিছু আশা করা যেতে পারে । সবার কাছ থেকে সাহায্য চাইছি আমরা । এই বিপুল খরচ বহন করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে ।"
রিতিকার মা বলছেন, "এই অবস্থায় ক্রীড়ামন্ত্রীর পাশে থাকা, আর্থিক সাহায্য লড়াইয়ে জোর বাড়াবে । বেশ কয়েকটি সংস্থা এবং কিছু মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন । আমার মেয়ের সুস্থতার জন্য সবার সাহায্য জরুরি ৷"