লন্ডন, 11 জুলাই : 28 বছরের খরা কাটিয়ে কোপার ট্রফিতে আর্জেন্টিনার নাম তুলেছেন লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল দি মারিয়ারা ৷ রবিবাসরীয় রাতে ইংল্যান্ড কি পারবে 55 বছরের খরা কাটতে ৷ প্রশ্নটা উঠছে ? ছুটির দিন সকালে, চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বাঙালি আলমোড়া ভেঙেছে কোপার ফাইনাল দেখতে দেখতে ৷ রাতে আবার ইউরোর খেতাবি লড়াই ৷ সম্মুখ সমরে ইংল্যান্ড ও ইতালি ৷ ইউরোর ফাইনাল তাই লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে ৷ তবে রাত জেগে খেলা দেখার আগে দেখে নিন কোন দলের শক্তি কতটা ৷
মিডফিল্ডের শক্তি
ফুটবলে একটা কথা চালু আছে ৷ তা হল মাঝমাঠ যাঁর, ম্যাচ তাঁর ৷ অর্থাৎ খেলায় দখল নিতে হলে মাঝমাঠে দাপিয়ে খেলতে হবে ৷ প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখতে হবে এই মাঝমাঠেই ৷ এককথায় দলের আক্রমণ ও ডিফেন্সের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখে মিডফিল্ড ৷
ইউরো 2020-র ফাইনালের দুই দলের মিডফিল্ডের প্রশ্নে বিশেষজ্ঞদের বাজি ইতালি ৷ তাঁদের কথায়, ইংল্যান্ডের মিডফিল্ড ভাল তবে, এই ডিপার্টমেন্টে সামান্য হলেও হ্যারি কেনের দলকে টেক্কা দিচ্ছে আজুরিরা ৷ নিঃসন্দেহে বিশ্বমানের মিডফিল্ডারের কথা উঠলে সেই তালিকায় থাকবেন মার্কো ভেরাত্তি ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি ইউরোয় অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার ভেরাত্তি ৷ ইতালির মিডফিল্ডে ভেরাত্তির পাশাপাশি আছেন টুচেলের চেলসির হয়ে সদ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা জর্জিনহো ৷ এই দুই অভিজ্ঞ মিডফিল্ডারের মাঝে আছেন তরুণ নিকোলা বারেল্লা ৷ 24 বছরের এই তরুণ ইন্টার মিলানের হয়ে ইতালির জাতীয় লিগ জিতেছেন ৷
অন্যদিকে ইংল্যান্ডের মাঝমাঠের কাণ্ডারি ডিক্লেন রাইস ও কালভিন ফিলিপ্স ৷ এখনও পর্যন্ত টুর্নামেন্টে থ্রি লায়নসদের যথেষ্ট ভরসা জুগিয়েছেন ৷ তবে ফাইনালে নিজেদের ছাপিয়ে যেতে হবে এই জুটিকে ৷ এছাড়া ইংল্যান্ডের হাতে আছে ম্যাসন মউন্ট ৷ তবে খেতাবি লড়াইয়ের ম্যাচে কিছুটা নেমে রাইস ও ফিলিপ্স জুটিকে সাহায্য করতে হবে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ম্যাসন মাউন্টকে ৷
আরও পড়ুন : হতাশ নেইমারকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা মেসির, মুগ্ধ ফুটবল বিশ্ব
বেঞ্চের শক্তি
বলা হয়, বড় টুর্নামেন্ট জিততে হলে দলের বেঞ্চের শক্তি বাড়াতে হয় ৷ এই কথাটি ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউদগেট অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন ৷ দলের বেঞ্চের শক্তির বিচারে খেলার আগেই ইতালিকে চার গোল দিয়ে রেখেছে ইংল্যান্ড ৷ চেলসির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা ফুলব্যাক রিস জেমস ও বেন চিলওয়েল মাত্র একটি ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন ৷ এছাড়া ডেনমার্কের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালের অতিরিক্ত সময়ে জর্ডন হান্ডারসন ও ফিল ফডেনকে মাঠে নামাতে পেরেছিলেন সাউদগেট ৷ ইংল্যান্ড ফুটবলে ইতিমধ্যে এই দুই ফুটবলারকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ এছাড়া মার্কাস রাশফোর্ড ও জর্ডন স্যাঞ্চো এখনও পর্যন্ত একটিও ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি ৷
অন্যদিকে আক্রমণে ইতালির হাই প্রোফাইল নাম নেই ৷ তবে তাঁদের আছে ম্যানুয়েল লোকাত্তেলি ৷ গ্রুপ স্টেজে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি ৷ তবে বেঞ্চে আছেন বেশ কয়েকজন ভরসাযোগ্য ডিফেন্ডার ৷
দুর্বলতা
সেমিফাইনালে দুই দলের কিছু দুর্বলতা সবার সামনে এসেছে ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, গোলরক্ষক জর্ডন পিকফোর্ড ইংল্যান্ডের সবথেকে বড় দুর্বলতা ৷ ডেনমার্কের বিরুদ্ধে তাঁকে বেশ নড়বড়ে দেখিয়েছে ৷ পাশাপাশি বল ক্লিয়ারেন্সের ক্ষেত্রেও তাঁর দুর্বলতা সবার সামনে এসেছে ৷ অন্যদিকে ইতালির সবথেকে বড় চিন্তার কারণ অবশ্যই লেফ্ট ব্যাক ইমারসন পালমিরি ৷ সেমিফাইনাল ম্যাচের দিতে তাকালে দেখা যাবে স্পেন বারবার বাঁ দিক থেকেই আক্রমণে উঠেছে ৷ মূলত ইতালি আক্রমণে ওঠার সময় ইমারসনের পিছনে বড় জায়গা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে ৷ ফলে বারবার আক্রমণ তুলছেন বিপক্ষের স্ট্রাইকাররা ৷
আরও পড়ুন : Euro 2020 : মেসি পেরেছেন, ইংল্যান্ড কি পারবে 55 বছরের খরা কাটাতে ?
দুরন্ত রক্ষণ
ফাইনালে লড়াইটা মূলত হবে দুটি অন্যতম শক্তিশালী রক্ষণের মধ্যে ৷ টুর্নামেন্টে মাত্র একটি গোল খেয়েছে ইংল্যান্ড ৷ তাও এসেছে সরাসরি ফ্রি-কিক থেকে ৷ ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউদগেট সবসময় দুজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারকে চারজন ডিফেন্ডারের উপরে রাখেন ৷ তাই মাঝমাঠে কিছুটা হলেও খেলার সুযোগ পায় প্রতিপক্ষরা ৷
অন্যদিকে রক্ষণ নিয়ে বরাবরই সুনাম আছে ইতালির ৷ মানচিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর একটি ম্যাচ ছাড়া 38টি ম্যাচে ইতালির বিরুদ্ধে দুটি গোল করতে পারেনি কোনও দলই ৷ তার মধ্যে আছে 23টি ক্লিন শিট ৷ অর্থাৎ ওই 23টি ম্যাচে একটিও গোল খায়নি ৷ ইতালির রক্ষণের দুই স্তম্ভ লিওনার্দো বানুচি ও জর্জিও চিয়ালিনির মধ্যে বোঝাপড়াও দুরন্ত ৷ তাই ইতালি দুর্গে থাবা বসাতে বানুচি ও চিয়ালিনির বাধা টপকাতে হবে হ্যারি কেন, রহিম স্টারলিংদের ৷