কলকাতা, 6 এপ্রিল : গত সাতদিন ধরে আইএফএ অফিসে আসছেন না জয়দীপ মুখােপাধ্যায় । এই মুহূর্তে সচিব, তিন সহ সচিব, কোষাধ্যক্ষ এবং সভাপতি কেউ রাজ্য ফুটবল নিয়ামক সংস্থার অফিসে আসছেন না । ফলে ছয় পদাধিকারী ছাড়া আইএফএতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে । যা সংস্থার ইতিহাসে নজিরবিহীন।
কেন এই পরিস্থিতি?
জানতে হলে ফ্ল্যাশব্যাকে যেতে হবে । তিনমাস আগে আইএফএ প্রেসিডেন্ট অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্টবেঙ্গল প্রীতির দিকে পরোক্ষে আঙুল তুলে এবং স্বাধীনভাবে কাজ না করতে পারার কথা বলে সচিবের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় । সেই সময় বলেছিলেন আই লিগ শেষ হলেই তিনি দায়িত্ব সামলাবেন, তারপর সুতারকিন স্ট্রিট মুখোমুখি হবেন না । 27 মার্চ আইলিগ শেষ হয়েছে । তারপর 30 মার্চ থেকে আইএফএ-র অফিসে আসছেন না সচিব। এখনও পর্যন্ত ময়দানের কোনও ক্লাব কর্তা তাঁকে পদত্যাগ পত্র ফিরিয়ে নেওয়ার আর্জি জানায়নি বলে, পুরো বিষয়টি এমন একটি জায়গায় চলে গিয়েছে সেখান থেকে পদত্যাগী সচিবের ফেরার পথ নেই ৷ তাই বাকি পদাধিকারীরা বুঝতে পারছেন না এই অবস্থায় তাঁদের কী করা উচিত ।
প্রসঙ্গত বলে রাখা ভাল, আইএফএর তিন সহ সচিবের পদের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে । এই অবস্থায় সমস্যা মিটতে পারে একমাত্র আইএফএ প্রেসিডেন্ট অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে। কিন্তু তিনিও অপেক্ষার নীতি আঁকড়ে। জয়দীপ মুখােপাধ্যায়কে সুতারকিন স্ট্রিটে ফিরতে হলে প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের চিঠি দিতে হবে । সেক্ষেত্রে তিনমাস আগে পদত্যাগ করার সময় যে সমস্ত অভিযোগ করেছিলেন তা লিখিতভাবে প্রত্যাহার করতে হবে। যা তার পক্ষে অস্বস্তিকর। নিজে পদত্যাগ করার পাশাপাশি তিন সহ সভাপতি তনুময় বসু, পার্থসারথি গাঙ্গুলি ও শ্যামল মিত্রকে পদত্যাগ করিয়েছিলেন।
অবস্থা বিশ বাঁও জলে যেত না যদি 5 মার্চ আইএফএ-র স্পেশাল এজিএম-এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হত। ময়দানের কয়েকজন কর্তা সেদিন সচিব জয়দীপকে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব তুলেছিলেন। কিন্তু আইএফএ-র চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত বলেছিলেন, সচিবের পদত্যাগের বিষয়টি স্পেশাল এজিএম-এর অ্যাজেন্ডায় নেই। যদি তা করতে হয় তাহলে সভাপতির কাছে করতে হবে। তখন সভাপতি তা গভর্নিং বডির কাছে পাঠাবে। তারপর গভর্নিং বডি সিদ্ধান্ত নেবে। এটাই নিয়ম।
আরও পড়ুন : ভাগ্যের জোরে শেষ ম্যাচ জিতে ইংরেজ বাহিনীকে তিন সিরিজ়েই বিরাট ধাক্কা কোহলিদের
কিন্তু পরবর্তী একমাসে এই ধরনের কোনও প্রস্তাব কোনও ক্লাবকর্তা জমা করেননি। ফলে অচলাবস্থা অব্যাহত। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্লাবকর্তা না কি আইএফএর প্রেসিডেন্ট অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে অনুরোধ করেছিলেন । তাঁর বক্তব্য ছিল, প্রেসিডেন্ট যদি সচিবকে ফোন করেন তাহলে বিষয়টি মিটে যাবে। এক্ষেত্রে অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় না কি বলেছেন, তিনি পদত্যাগ করতে বলেননি। তাই ফিরিয়ে নিতেও বলবেন না। তাঁর এই অবস্থানে পদত্যাগী সচিব যেমন প্রত্যাবর্তনের পথ পাচ্ছেন না তেমনই আইএফএতে অচলাবস্থা কাটছে না ।