আসানসোল, 30 জুলাই: বাবা, মা দুই ভাই নিয়ে আসানসোলের তাপসের ভালো-বাসা । শান্তির আবহে বড় হয়ে ওঠা খেলার দুনিয়ার কড়া বাস্তবে পা দেওয়ার পর তাপস উপলব্ধি করেছিল সব কিছু সহজ নয় । কঠিন পরিস্থিতিতে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার অর্জিত মানসিকতা বরাবরই ৷ এই বছর মোহনবাগানের তরফে আয়োজিত সেরা অ্যাথলিটের সম্মান পেলেন তিনি ৷
বাবা বিশ্বজিৎ দে বাসের কন্ডাক্টর ছিলেন । এখন TB আক্রান্ত । কাজ করার শক্তি নেই । রোগ সারিয়ে ফের কন্ডাক্টরের ব্যাগ তুলে নিতে চান । মা সংসার সামলান । বড় দাদা অটোচালক । বাস্তবটাকে ছোটোবেলা থেকে বড্ড বেশিই দেখে ফেলেছেন তাপস ৷ ফের সুদিনের আশায় আথলেটিক্স ট্র্যাকে বছর আঠারোর ছেলেটি । দু'বছর ধরে সবুজ মেরুণ জার্সি পড়ে দৌড়াচ্ছেন । আসানসোলের স্থানীয় কোচের হাতে প্রাথমিক শিক্ষার শুরু ৷ বর্তমানে কল্যাণ চৌধুরির কোচিংয়ে উন্নততর পাঠ নিচ্ছেন । ফল মিলেছে । ইতিমধ্যে অনুর্ধ্ব 18 বিভাগের বেশ কয়েকটি রেকর্ড দখলে । 800 এবং 1500 মিটারের পদক জয়ের দৌড় দেশের জার্সিতে নিয়ে যেতে চান । এই ব্যাপারে তার সাম্প্রতিক প্রেরণা হিমা দাস ।
মোহনবাগান রত্ন পুরস্কারের পথ চলা 2001 সালে । ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলারদের রত্ন সম্মানে ভূষিত করাই এতদিন রীতি ছিল মোহনবাগানের ৷ ফুটবলাররদের সম্মান দেওয়ার পাশাপাশি অন্য অ্যাথলিটদেরও সেরার পুরস্কার দেওয়ার রীতি চালু হয়েছে এবার থেকে ৷ প্রতিবারের রীতি ভেঙে ফুটবলারের বাইরে মোহনবাগান রত্ন সম্মান দেওয়া হয়েছে ভারত গৌরব কেশব দত্তকে । প্রথম বছর সেই পুরস্কার পেলেন অ্যাথলিট তাপস দেও ৷ স্বভাবতই খুশির হাওয়া পরিবারে ৷
মোহনবাগান থেকে প্রাক স্বাধীনতা পর্বে অলিম্পিকে অংশগ্রহণের ইতিহাস রয়েছে । তাপস সেই ইতিহাস জানেন না । তবে তিনি জীবনের ছন্দ খুজে পেতে দৌড়ে যেতে চান । দারিদ্রের লড়াই থেকে সাফল্যের রাজপথে ওঠাই তাঁর লক্ষ্য ৷