কলকাতা, 2 অগাস্ট : সগৌরবে একশো বছর পার করল ইস্টবেঙ্গল ৷ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের বয়সও 130 ছুঁই ছুঁই ৷ দু'দলের সমর্থকদের আবেগ, তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই বাংলার ফুটবলকে পথ দেখিয়েছে মোহন-ইস্ট ৷ গতকাল ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে একথা বললেন মোহনবাগানের অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত ৷ বললেন, "মোহনবাগান বাঁচলে ইস্টবেঙ্গল বাঁচবে, ইস্টবেঙ্গল বাঁচলে মোহনবাগান বাঁচবে ৷"
গতকাল সকাল থেকে শতবর্ষ পালনে মেতে উঠেছিল ইস্টবেঙ্গল । প্রথমে প্রতিষ্ঠাতা সুরেশ চৌধুরির বাড়িতে ফলক উন্মোচিত হয় ৷ এরপর প্রাক্তন তারকাদের উপস্থিতিতে সচিব কল্যাণ মজুমদার ক্লাবে পতাকা উত্তোলন করেন ৷ বিকেলে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শতবর্ষের অনুষ্ঠান হল ৷ কপিল দেবকে ভারত গৌরব সম্মান দেওয়া হল ৷ জীবনকৃতি সম্মান পেলেন মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ভাস্কর গাঙ্গুলি । তাঁরাও সম্মানিত হলেন দায়সারাভাবে । মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঝটিকা সফরে লাল-হলুদ মঞ্চে ঘুরে গেলেন । ক্রীড়ামন্ত্রীকে নির্দেশ দিলেন, শতবর্ষের ইস্টবেঙ্গলকে সংবর্ধিত করতে । ক্রীড়ামন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস বলেন, "বাংলার ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভার ইস্টবেঙ্গলের । জেদ স্পর্ধা স্বপ্নের নাম ইস্টবেঙ্গল ।" মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পৌরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম । তাঁকেও বরণ করা হয় । এরই মধ্যে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের সঙ্গে সৌভ্রাতৃত্বের ছবি ফুটে উঠল ৷
প্রধান অতিথি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে বরণ করা হয় । মাঠে খেলা দেখতে আসা ও বন্ধু প্রদীপ ব্যানার্জির কাছ থেকে ময়দানের গল্প শোনার স্মৃতি আওড়ালেন কিংবদন্তি অভিনেতা । একইভাবে সমর্থকদের ভালোবাসা যে একটি প্রতিষ্ঠানকে কতদূর টেনে নিয়ে যেতে পারে তা ভেবে বিস্মিত তিনি ।
সেরা কোচ প্রদীপ ব্যানার্জির সাহচর্যের স্মৃতিতে ভাসলেন সুভাষ ভৌমিক, সুরজিৎ সেনগুপ্তরা । অনুষ্ঠানে মহম্মদ হাবিব উপস্থিত থাকলেও কোনও কথা বলেননি ।অন্যদিকে,লাল-হলুদ পৃথিবীতে নিজের দ্বিতীয় ঘর খুঁজে পাওয়ার গল্প বাইচুং ভুটিয়ার গলায় । নিজেকে ইস্টবেঙ্গলের সন্তান বললেন । সংবর্ধিত সুনীল ছেত্রীর কথায় উঠে এলে লাল-হলুদ জার্সি পরে খেলার স্মৃতি ।
অনুষ্ঠানে মোহনবাগানের তরফে হাজির ছিলেন দেবাশিস দত্ত ৷ পুস্পস্তবক দিয়ে ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষে শুভেচ্ছা জানান । তিনি মঞ্চের ওঠার সময় অবশ্য জয় ইস্টবেঙ্গল ধ্বনি উঠেছিল ৷ মিলনের দিনে তা শুনলেন দেবাশিস ৷ ইস্ট-মোহনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাই যে ভারতীয় ফুটবলকে সমৃদ্ধ করেছে তা জানান ৷ হাজার বিভেদ, প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও দুই দলই একে অপরের কাছে বাঁচার ঠিকানা ৷ তিনি বলেন, "দুটো ক্লাব পরস্পরের পরিপূরক ।" আর মাঝে একবার বলে দিলেন, "জয় মোহনবাগান ।" তখন নেতাজি ইন্ডোর চুপ । পরে অবশ্য ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা করতালি দিতে দিতে স্লোগান তুললেন, "জয় ইস্টবেঙ্গল ।"