ETV Bharat / sports

আর্জেন্টিনার কোপা জয়ে আড়মোড়া ভাঙল বাঙালির, মেসিতে মজে প্রাক্তনরা

author img

By

Published : Jul 11, 2021, 12:44 PM IST

Updated : Jul 11, 2021, 3:30 PM IST

মারাকানা থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, ভৌগোলিক দূরত্বটা কত ? চটজলদি বলাটা শক্ত । কিন্তু রবিবাসরীয় ভোরে নীল সাদা জার্সির দশ নম্বর মিলিয়ে দিল দুটো স্টেডিয়ামকে । কলকাতায় অধিনায়ক মেসির অভিষেক হয়েছিল যে । মেসি কোপা আমেরিকা জেতায় খুশি ফুটবল পাগল বাঙালি ৷

football
football

কলকাতা, 11 জুলাই : সেবার প্রথমবার কলকাতায় পা পড়েছিল লিওনেল মেসির । বছর দশেক আগে তাঁর খেলায় ছিল মধ্যদুপুরের রোদের তেজ । ভারতীয় ফুটবলের মক্কা তার আগেও বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তিদের দেখেছে । কিন্তু তাঁরা প্রায় সবাই এসেছিলেন বুটজোড়া তুলে রাখার পর । একমাত্র ফুটবল সম্রাট পেলে কলকাতায় খেলেছিলেন তাঁর ফুটবল জীবনের বেলাশেষে । অলিভার কান জীবনের শেষ ক্লাব ম্যাচ খেলেছিলেন তিলোত্তমায় । কিন্তু লিওনেল মেসির মতো কেউ জাতীয় দলের জার্সিতে ফুটবল জীবনের মধ্যগগনে আসেননি ।

28 বছর পরে কোপা আমেরিকা জিতল আর্জেন্টিনা । তাও আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে । অধিনায়ক মেসি প্রথমবার দেশের জার্সিতে সিনিয়র পর্যায়ে বিজয় মঞ্চে পা রাখলেন । তাঁর ফুটবল জীবনের অপূর্ণ স্বাদ পূরণ হল ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে ।

মারাকানা থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, ভৌগোলিক দূরত্বটা কত ? চটজলদি বলাটা শক্ত । কিন্তু রবিবাসরীয় ভোরে নীল সাদা জার্সির দশ নম্বর মিলিয়ে দিল দুটো স্টেডিয়ামকে । কলকাতায় অধিনায়ক মেসির অভিষেক হয়েছিল যে । শুনেই প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য বলে উঠলেন, "ঠিকই বলেছেন । আর্মব্যান্ড হাতে চড়িয়ে মেসি দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেছিলেন এই কলকাতাতেই । ফুটবলার হিসেবে লা জবাব । ক্লাব ফুটবলের সমস্ত ট্রফি জিতলেও দেশের জার্সিতে ফাঁড়া কাটছিল না । মারাকানা সেটাই কাটিয়ে দিল । 2014 সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা এই স্টেডিয়ামে জার্মানির কাছে হেরেছিল । সেদিনের ছবি আজও চোখে ভাসে । আজ মেসিকে এত উচ্ছ্বসিত হতে প্রথমবার দেখলাম । বোধহয় শাপমুক্তির আনন্দে ৷" প্রতিপক্ষ ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে প্রথমবার আর্মব্যান্ড হাতে জড়িয়ে মাঠে নেমেছিলেন এলএম টেন ।

আরও পড়ুন : Copa America final : মারাকানায় শাপমুক্তি, মেসির হাতে উঠল ট্রফি ; কোপা জয় আর্জেন্টিনার

উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া লিওনেল মেসির ছবি সেভাবে দেখা যায় না । তাঁর নিয়ন্ত্রিত পাসের মতই আবেগও নিয়ন্ত্রিত । কিন্তু ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ট্রফি ছোঁয়ার পরে মেসিও যেন বল্গাহীন ।


বিশ্ব ফুটবলে লিওনেল মেসি বনাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর অদৃশ্য দ্বৈরথ রয়েছে । ব্যালন ডি'অর জয় থেকে দেশের জার্সি, সবেতেই পরস্পর পরস্পরকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেন । ইউরো কাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পরে সিআর সেভেন নিশ্চিতভাবে কোপা ফাইনালে চোখ রেখেছিলেন । কারণ 2016 সালের দশ জুলাই রোনাল্ডো ইউরো জিতেছিলেন দেশের জার্সিতে। প্রিয় প্রতিপক্ষ দেশের জার্সিতে ট্রফি জয়ের অপূর্ণ স্বাদে স্পর্শ করতে পারেন কি না তা দেখার আগ্রহ ছিল । মেসি পাল্টা জবাব দিলেন সেই 11 জুলাই ।

2016 সালে কোপা আমেরিকা ফাইনালে টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হয়ে আর্ন্তজাতিক ফুটবল থেকে অবসর ঘোষণা করেছিলেন মেসি । প্রত্যাবর্তনের বিশ্বব্যাপী আকুল প্রার্থনায় সেদিন সিদ্ধান্ত বদল করেছিলেন । হয়তো ফুটবল দেবতা আজকের জন্যই অপেক্ষা করছিলেন ।

আরও পড়ুন : হতাশ নেইমারকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা মেসির, মুগ্ধ ফুটবল বিশ্ব

খেলা শেষে আর্জেন্টিনার বাকি ফুটবলাররা মেসিকে শূন্যে ছুড়ে উৎসব করছিলেন । আঠাশ বছর পরে বিশ্বকাপ জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়ে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সচিন তেন্ডুলকরকে কাঁধে করে মাঠ প্রদক্ষিণ করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনিরা । আইডলকে উপহার দেওয়ার সেরা কোলাজের প্রতিচ্ছবি দেখা গেল আবার । মেহতাব হোসেন বলছিলেন, "মেসির মতো ফুটবলার সর্বস্ব দিয়েও শেষরক্ষা করতে পারছিলেন না । তাঁর মানের ফুটবলার এই আর্জেন্টিনা দলে নেই । কোথায় যেন তালমিলের অভাব থাকত । হয়তো সেই খেদটা ছিল সাজঘরের অন্য সদস্যদের মধ্যেও । তাই অবশেষে প্রতিদান দিতে পেরে সতীর্থরাও স্বস্তি পেল ৷"

মাঝমাঠ থেকে ডি'পলের নিখুঁত লম্বা পাস খুঁজে নিয়েছিল ডি মারিয়াকে । পিএসজিতে নেইমারের সতীর্থ গোল করতে ভুল করেননি । বাংলার প্রাক্তন মিডফিল্ডার চন্দন দাস বললেন, "ওই জায়গা থেকে এত নিখুঁত পাস সত্যিই কঠিন । পুরো ব্রাজিল ডিফেন্স দাঁড়িয়ে গিয়েছিল । ডি মারিয়া মাথা ঠান্ডা রেখে বল জালে রাখল ৷ ক্লিনিক্যাল ফিনিশ ৷"

মেসির হাতে কাপ দেখে রবিবার সকালটা শুরু হল কলকাতার । পুরো দিনটাই খেলার মহা প্যাকেজ । রাতে ইউরো, সন্ধ্যায় উইম্বলডন ফাইনাল । ক্রীড়াপ্রিয় শহর কলকাতার চোখে রবিবারের ছুটি উপভোগ করার মাঝে মেসির অধিনায়কত্বের নান্দীমুখের তৃপ্তি একইসঙ্গে ।

আরও পড়ুন : Copa America 2021 : সর্বোচ্চ গোলদাতা, সেরা খেলোয়াড় ; ব্রাজিলের ফুটবলতীর্থ আজ মেসিময়

কলকাতা, 11 জুলাই : সেবার প্রথমবার কলকাতায় পা পড়েছিল লিওনেল মেসির । বছর দশেক আগে তাঁর খেলায় ছিল মধ্যদুপুরের রোদের তেজ । ভারতীয় ফুটবলের মক্কা তার আগেও বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তিদের দেখেছে । কিন্তু তাঁরা প্রায় সবাই এসেছিলেন বুটজোড়া তুলে রাখার পর । একমাত্র ফুটবল সম্রাট পেলে কলকাতায় খেলেছিলেন তাঁর ফুটবল জীবনের বেলাশেষে । অলিভার কান জীবনের শেষ ক্লাব ম্যাচ খেলেছিলেন তিলোত্তমায় । কিন্তু লিওনেল মেসির মতো কেউ জাতীয় দলের জার্সিতে ফুটবল জীবনের মধ্যগগনে আসেননি ।

28 বছর পরে কোপা আমেরিকা জিতল আর্জেন্টিনা । তাও আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে । অধিনায়ক মেসি প্রথমবার দেশের জার্সিতে সিনিয়র পর্যায়ে বিজয় মঞ্চে পা রাখলেন । তাঁর ফুটবল জীবনের অপূর্ণ স্বাদ পূরণ হল ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে ।

মারাকানা থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, ভৌগোলিক দূরত্বটা কত ? চটজলদি বলাটা শক্ত । কিন্তু রবিবাসরীয় ভোরে নীল সাদা জার্সির দশ নম্বর মিলিয়ে দিল দুটো স্টেডিয়ামকে । কলকাতায় অধিনায়ক মেসির অভিষেক হয়েছিল যে । শুনেই প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য বলে উঠলেন, "ঠিকই বলেছেন । আর্মব্যান্ড হাতে চড়িয়ে মেসি দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেছিলেন এই কলকাতাতেই । ফুটবলার হিসেবে লা জবাব । ক্লাব ফুটবলের সমস্ত ট্রফি জিতলেও দেশের জার্সিতে ফাঁড়া কাটছিল না । মারাকানা সেটাই কাটিয়ে দিল । 2014 সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা এই স্টেডিয়ামে জার্মানির কাছে হেরেছিল । সেদিনের ছবি আজও চোখে ভাসে । আজ মেসিকে এত উচ্ছ্বসিত হতে প্রথমবার দেখলাম । বোধহয় শাপমুক্তির আনন্দে ৷" প্রতিপক্ষ ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে প্রথমবার আর্মব্যান্ড হাতে জড়িয়ে মাঠে নেমেছিলেন এলএম টেন ।

আরও পড়ুন : Copa America final : মারাকানায় শাপমুক্তি, মেসির হাতে উঠল ট্রফি ; কোপা জয় আর্জেন্টিনার

উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া লিওনেল মেসির ছবি সেভাবে দেখা যায় না । তাঁর নিয়ন্ত্রিত পাসের মতই আবেগও নিয়ন্ত্রিত । কিন্তু ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ট্রফি ছোঁয়ার পরে মেসিও যেন বল্গাহীন ।


বিশ্ব ফুটবলে লিওনেল মেসি বনাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর অদৃশ্য দ্বৈরথ রয়েছে । ব্যালন ডি'অর জয় থেকে দেশের জার্সি, সবেতেই পরস্পর পরস্পরকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেন । ইউরো কাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পরে সিআর সেভেন নিশ্চিতভাবে কোপা ফাইনালে চোখ রেখেছিলেন । কারণ 2016 সালের দশ জুলাই রোনাল্ডো ইউরো জিতেছিলেন দেশের জার্সিতে। প্রিয় প্রতিপক্ষ দেশের জার্সিতে ট্রফি জয়ের অপূর্ণ স্বাদে স্পর্শ করতে পারেন কি না তা দেখার আগ্রহ ছিল । মেসি পাল্টা জবাব দিলেন সেই 11 জুলাই ।

2016 সালে কোপা আমেরিকা ফাইনালে টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হয়ে আর্ন্তজাতিক ফুটবল থেকে অবসর ঘোষণা করেছিলেন মেসি । প্রত্যাবর্তনের বিশ্বব্যাপী আকুল প্রার্থনায় সেদিন সিদ্ধান্ত বদল করেছিলেন । হয়তো ফুটবল দেবতা আজকের জন্যই অপেক্ষা করছিলেন ।

আরও পড়ুন : হতাশ নেইমারকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা মেসির, মুগ্ধ ফুটবল বিশ্ব

খেলা শেষে আর্জেন্টিনার বাকি ফুটবলাররা মেসিকে শূন্যে ছুড়ে উৎসব করছিলেন । আঠাশ বছর পরে বিশ্বকাপ জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়ে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সচিন তেন্ডুলকরকে কাঁধে করে মাঠ প্রদক্ষিণ করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনিরা । আইডলকে উপহার দেওয়ার সেরা কোলাজের প্রতিচ্ছবি দেখা গেল আবার । মেহতাব হোসেন বলছিলেন, "মেসির মতো ফুটবলার সর্বস্ব দিয়েও শেষরক্ষা করতে পারছিলেন না । তাঁর মানের ফুটবলার এই আর্জেন্টিনা দলে নেই । কোথায় যেন তালমিলের অভাব থাকত । হয়তো সেই খেদটা ছিল সাজঘরের অন্য সদস্যদের মধ্যেও । তাই অবশেষে প্রতিদান দিতে পেরে সতীর্থরাও স্বস্তি পেল ৷"

মাঝমাঠ থেকে ডি'পলের নিখুঁত লম্বা পাস খুঁজে নিয়েছিল ডি মারিয়াকে । পিএসজিতে নেইমারের সতীর্থ গোল করতে ভুল করেননি । বাংলার প্রাক্তন মিডফিল্ডার চন্দন দাস বললেন, "ওই জায়গা থেকে এত নিখুঁত পাস সত্যিই কঠিন । পুরো ব্রাজিল ডিফেন্স দাঁড়িয়ে গিয়েছিল । ডি মারিয়া মাথা ঠান্ডা রেখে বল জালে রাখল ৷ ক্লিনিক্যাল ফিনিশ ৷"

মেসির হাতে কাপ দেখে রবিবার সকালটা শুরু হল কলকাতার । পুরো দিনটাই খেলার মহা প্যাকেজ । রাতে ইউরো, সন্ধ্যায় উইম্বলডন ফাইনাল । ক্রীড়াপ্রিয় শহর কলকাতার চোখে রবিবারের ছুটি উপভোগ করার মাঝে মেসির অধিনায়কত্বের নান্দীমুখের তৃপ্তি একইসঙ্গে ।

আরও পড়ুন : Copa America 2021 : সর্বোচ্চ গোলদাতা, সেরা খেলোয়াড় ; ব্রাজিলের ফুটবলতীর্থ আজ মেসিময়

Last Updated : Jul 11, 2021, 3:30 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.