কলকাতা , 4 অক্টোবর : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধ এবং FSDL-এর তৎপরতায় ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে বাঙুর গোষ্ঠী । সেই মতো চুক্তি হয়েছে । এখন তা মানতে না চাইলে নয়া বিনিয়োগ সংস্থা বিচ্ছেদের পথে হাঁটতে বাধ্য হবে । শনিবার সন্ধেয় এভাবেই পালটা বার্তা আছড়ে পড়ল লেসলি ক্লডিয়াস সরণিতে । বিনিয়োগ সংস্থার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ক্লাবের কাছে পাঠানো আইনি কাগজ তাদের কাছে আসেনি । ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তাদের আইনজীবীরা আইনি কাগজ দেখছেন । দ্রুত পাঠানো হবে । ISL-এ অংশ নিতে ক্লাবগুলি যখন গোয়া যাওয়ার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত তখন ইস্টবেঙ্গলের কোচ নির্বাচন থেকে বিদেশি ফুটবলার বেছে নেওয়া সবকিছুই প্রশ্ন চিহ্নের মুখে । শুধু তাই নয়, ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি ফি থেকে প্রয়োজনীয় অন্য পদক্ষেপ করার বদলে তা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিনিয়োগ সংস্থা ।
গত মঙ্গলবার এক্সট্রা অর্ডিনারি জেনেরাল মিটিংয়ে উপস্থিত সদস্যদের অনেকে কম্পানি নির্ভরতায় ক্লাব চলার বিপক্ষে মত পোষণ করেছিলেন । কারণ তাদের মনে হয়েছে এই নয়া ব্যবস্থা ক্লাব সদস্যদের স্বার্থ রক্ষার পরিপন্থী । তাই ক্লাবের কার্যকরী কমিটির পদাধিকারীদের মতামত বোর্ড অব ডিরেক্টরে গুরুত্ব দিতে হবে । সদস্যদের এই দাবির আড়ালে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিনিয়োগ সংস্থার কর্তা ব্যক্তিরা । তাদের একটাই কথা , স্পোর্টিং রাইটস তাদের হাতে চলে আসার পর যাবতীয় সিদ্ধান্ত বোর্ড ঠিক করবে । সেখানে ক্লাবের বিভাগীয় পদাধিকারীদের মত শোনার দায় তাদের নেই । সেক্ষেত্রে কমিটির কার্যকারিতা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে । এই বিষয়টি নিয়ে সমস্যা হতে পারে ধরে নিয়ে বিনিয়োগ সংস্থা প্রথম থেকে শক্ত হাতে রাশ ধরতে চাইছে ।
বিনিয়োগ সংস্থার কর্তারা বলছেন ,"ইস্টবেঙ্গলের ঐতিহ্য, ইতিহাস,ভারতীয় ফুটবলে অবদান আমরা জানি । এখানে আমরা এসেছি ক্লাবকে পেশাদারি মানসিকতায় আধুনিকভাবে চালনা করতে । এই অর্থ আমরা অন্য ব্যবস্যায় বিনিয়োগ করতে পারতাম । তবুও ইস্টবেঙ্গলে এসেছি । কারণ মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ এবং FSDL-এর তৎপরতা । যেখানে আমরা অর্থ ঢালব তা ভালোভাবে চালানোর দায় আমাদের । সেখানে দ্বৈত সত্তা মানা সম্ভব নয় ।"
এই টানাপোড়েনের ফলে ISL প্রস্তুতি যে ধাক্কা খাচ্ছে তা মানছে বিনিয়োগ সংস্থা । যদি ক্লাব বিষয়টি নিয়ে অনড় থাকে তাহলে কী হবে ? বিনিয়োগ সংস্থার এক কর্তা বলেন, "আমরা অপেক্ষা করছি । আশা করছি যাবতীয় কাগজ চলে আসবে । তবে একান্তই যদি না হয় সেক্ষেত্রে আমাদের বিচ্ছেদের পথে হাঁটতে হবে । আমরা জানি, এই টানাটানিতে আমাদের সম্মানহানি হচ্ছে । তবুও ভালো কিছুর আশায় সহ্য করছি । কিন্তু সবকিছুর একটা সীমারেখা থাকে ।"
চুক্তির সময় সবকিছু বিনিয়োগ সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল । অথচ এখন নানা অজুহাত দেওয়া হচ্ছে । ক্লাবের তরফে যাঁরা সই করেছিলেন, তাঁরা সম্মত হয়ে স্বাক্ষর করেছিলেন । তারপরও কেন এই দ্বন্দ্ব বুঝতে পারছেন না বিনিয়োগ সংস্থার কর্তারা ।