কলকাতা, 5 জুন : থমথমে পরিবেশ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অন্দরে ৷ বিনিয়োগ সংস্থা বাঙ্গুর গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তিপত্রের চুড়ান্ত স্বাক্ষর ঘিরে অবস্থা এতটাই জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে, যে নতুন মরশুমে লাল-হলুদ ব্রিগেড ফুটবল মাঠে নামতে পারবে কিনা তা নিয়ে সদস্য, সমর্থকদের মধ্যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ৷
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শনিবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ৷ এ হল সমাজের প্রতি ক্লাবের দায়িত্ব পালনের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা ৷ প্রাক্তন ফুটবলার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্য়ায় এবং ক্রিকেটার সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন অনুষ্ঠানে ৷ কিন্তু লাল হলুদ জনতার যে বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ, সেই বিনিয়োগ সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি এখনও ঘোর অন্ধকারে ৷
চলতি সপ্তাহে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে তাঁরা চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবেন না ৷ প্রয়োজনে গণপদত্যাগ করতেও রাজি আছেন তাঁরা ৷ এই পদত্যাগের ইঙ্গিতে কর্তারা আদতে ‘সাপও মরবে এবং লাঠিও ভাঙবে না’ অবস্থান নিতে চাইছেন ৷ কারণ, মউ স্বাক্ষরের পর চূড়ান্ত স্বাক্ষর না হলে বিনিয়োগ সংস্থা বাঙ্গুর গোষ্ঠী দল গঠন যেমন করবে না জানিয়েছে, তেমনই আইএসএলে না খেলার অপারগতার কথা এফএসডিএলকে জানাবে ৷ শুধু তাই নয় তাদের হাতে থাকা স্পোর্টিং রাইটস ক্লাবকে ফেরতও দেবে না। ফলে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কোনও ধরনের খেলাধুলোয় অংশগ্রহণ করতে পারবে না ৷ যা শতবর্ষ প্রাচীন ক্লাবের কাছে সবচেয়ে বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে ৷
এখানেই শেষ নয় ৷ গত আইএসএলে অংশগ্রহণের জন্য ব্যয় হওয়া বিশাল অঙ্কের আর্থিক দায়ভার ক্লাবের ওপর চাপিয়ে দেবে ৷ এই বিষয়গুলি ক্লাব কর্তাদের অজানা নয় ৷ তাই গণপদত্যাগের কথা বলে পাল্টা চাপের খেলায় নেমেছেন ৷
পাশাপাশি তাঁরা ক্লাবের সংবিধানের ফাঁক দিয়ে সম্মান রক্ষার চেষ্টা করছেন ৷ সংবিধান বলছে, কার্যনির্বাহী কমিটি গণপদত্যাগ করলে ক্লাব প্রেসিডেন্ট কয়েকজনের একটি কমিটি তৈরি করে কার্যক্রম চালু রাখতে পারেন ৷ তাঁর হাতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে ৷ অর্থাৎ প্রণব দাশগুপ্ত এই কমিটির মাথায় বসে বিনিয়োগ সংস্থার চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারবেন ৷ এর ফলে ক্লাব যেমন খেলার মাঠ থেকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে মুক্ত হবে, তেমনই না বুঝে মউ স্বাক্ষরের দায় থেকে বাঁচতে পারবেন কর্তারা ৷
আরও পড়ুন : ভারতীয় মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপা করোনা আক্রান্ত
শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বলছেন, ‘‘এই রকম একটি নিয়ম আছে ৷ তবে তা প্রয়োগের পরিস্থিতি এখনই তৈরি হয়নি ৷" পরিস্থিতি প্রতি মিনিটে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে বদল হচ্ছে ৷ সমাধানের উপায় বের করার চেষ্টা চলছে ৷’