কলকাতা, 26 নভেম্বর : চার মিনিটে দুই গোল । দুটি গোলই তাঁর । দ্বিতীয় গোলটিকে "গোল অফ দা সেঞ্চুরি" বলা হয় । কিন্তু, তাঁর প্রথম গোলটি নিয়ে চর্চা বেশি হয় । সেই গোল নিয়ে বিতর্কও রয়েছে । যা নিয়ে ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো মারাদোনা নিজেই বলেছেন, হ্যান্ড অফ গড ।
আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরসের বস্তি থেকে বিশ্ব ফুটবলের রাজপথে জনমোহিনী দৌড় । পেলে যদি প্রতিষ্ঠানের দূত হন, তাহলে দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা মাটিতে পা রেখে আকাশ ছোঁয়ার গল্প। তাই তো তিনি বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে বুয়েনস আইরসের বস্তিতে থাকার দিনের সহবাসীদের উড়িয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। নেপোলিকে সিরি এ লিগে দ্বিতীয় ডিভিশন থেকে প্রথম ডিভিশনে তুলে নিয়ে এসে থামলেন না, প্রথম ডিভিশনে চ্যাম্পিয়ন করে থামলেন । এমনই এক ছকভাঙা ফুটবল ব্যক্তিত্ব মারাদোনা । তিনি জবাব দেওয়ার জন্য বারবার ফুটবলের মাঠকে বেছে নিয়েছিলেন ।
ফকল্যান্ড যুদ্ধে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার বিপর্যয়ের জবাব দেওয়ার জন্য মেক্সিকো বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচকে বেছে নিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে দুটি গোল করেছিলেন । প্রথম গোলটি করার সময় বল তাঁর মাথায় লাগার আগে বাঁ হাতে লেগেছিল । তারপর মাথা ছুঁয়ে বল গোলে ঢুকেছিল ।
যার নাগাল সেদিন ম্যাচ অফিশিয়ালরা পাননি, টিভি ক্যামেরাও ধরতে ব্যর্থ । ইংল্যান্ড অধিনায়ক গোলরক্ষক পিটার শিলটন সেদিন অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু ধোপে টেকেনি। সাংবাদিক সম্মেলনে নিজের হাত দিয়ে গোল করার বিষয়টি লুকোননি সেদিনের আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। বরং অনেকটা অশ্বথামা ইতি গজ ঢংয়ে গোলটিকে ফুটবল দেবতার হাতের জাদু বলে বর্ণনা করেছিলেন।
তবে অসততা ঢেকেছিলেন ফুটবল শৈলীর চুড়ান্ত রূপ তুলে ধরার মধ্যে দিয়ে । চার মিনিট পরই মাঝমাঠ থেকে সর্পিল দৌড়ে পাঁচজন ইংলিশ ফুটবলারকে কাটিয়ে গোল করেছিলেন । যে গোলকে বলা হয় গোল অফ দা সেঞ্চুরি ।
আসলে দিয়েগো মারাদোনা প্রহেলিকার নাম । যার পাশে সত্য এবং শঠতা একসঙ্গে বিরাজ করে । তাই তাঁর মৃত্যু বিশ্বের অন্যতম সেরা রঙিন চরিত্রের যবনিকা ।