ETV Bharat / sports

IFA vs CRA: রাজ্য ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ও রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের সংঘাতে উত্তাল ময়দান

author img

By

Published : Oct 27, 2021, 5:11 PM IST

কলকাতা লিগের মহমেডান ও টালিগঞ্জ ম্যাচে রেফারি তন্ময় ধরের লাল কার্ড দেখানোকে কেন্দ্র করে সংঘাতে কলকাতার রেফারি অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজ্য ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ৷ মহামেডানের বিদেশি ডিফেন্ডারকে লাল কার্ড দেখানোয় রেফারিকে ডেকে সাবধান করে দেওয়ার অভিযোগে সংঘাত শুরু হয়েছে দুই পক্ষের ৷

conflict-between-ifa-and-calcutta-referee-association-in-kolkata-maidan
রাজ্য ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা এবং রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের সংঘাতে উত্তাল ময়দান

কলকাতা, 27 অক্টোবর : কলকাতা লিগের শেষ পর্বে এসে সংঘাতে জড়াল রাজ্য ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা এবং ক্যালকাটা রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন ৷ এই সময়টা ময়দানে বিজয়া সম্মিলনীর আবহ থাকে ৷ কিন্তু, সেখানে পারস্পরিক সৌহার্দ্য বিনিময় ছেড়ে রীতিমত যুযুধান দুই পক্ষ ৷ আইএফএ বনাম রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে চলা বিতর্ক ময়দানের উত্তাপ ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে ৷ সুতারকিন স্ট্রিট এবং রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের পদাধিকারীদের বেলাগাম আচরণেই এই বিতর্ক শুরু হয়েছে বলে মনে করছে ময়দানের সঙ্গে জড়িত লোকজন ৷

বলা হচ্ছে , আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের কিছি আচরণ বিরক্তি বাড়িয়েছে বাংলার রেফারিদের একাংশের মধ্যে ৷ আবার বাংলার প্রথম সারির বেশ কয়েকজন রেফারি আছেন, যাঁরা কলকাতা রেফারিজ অ‍্যাসোসিয়েশনের সচিব সুকৃতি দত্তের আচরণেও ক্ষুব্ধ । এ নিয়ে এক প্রাক্তন ফিফা রেফারি জানান, ‘‘রেফারি হল মাঠের বিচারক ৷ তাঁকে যদি রাজ‍্য ফুটবল নিয়ামক সংস্থা নিজের দফতরে ডেকে সমঝে চলার কথা বলে ৷ তাহলে সে মাঠে নেমে স্বাধীনভাবে বাঁশি বাজাতে পারবে ? যা ঘটেছে তা বাংলা রেফারিদের পক্ষে অনভিপ্রেত এবং এটা একটা কালো অধ‍্যায় হয়ে থেকে যাবে ৷ অতীতে এমন হয়নি ৷ কিছুদিন অপেক্ষা করুন ৷ সব জানতে পারবেন ৷’’

এখানেই প্রশ্ন, কী এমন ঘটল ? যে রেফারির একটা অংশ রাজ্যের ফুটবল নিয়ামক সংস্থার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছেন ৷ আর সেই ক্ষোভ এখন সামনেও চলে এসেছে ৷ এই ঘটনার সূত্রপাত, কলকাতা লিগের একটি ম্যাচকে ঘিরে ৷ চলতি মরসুমে লিগের নকআউট পর্বে কোয়ালিফাইয়ারে মহমেডান ও টালিগঞ্জ ম‍্যাচ রেফারি তন্ময় ধরের একটি সিদ্ধান্ত যাবতীয় গন্ডগোলের নেপথ্যে ৷ মহমেডানের বিদেশি ডিফেন্ডার হ‍্যান্ডবল করায়, তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়েছিলেন রেফারি ৷ সেই থেকেই যত বিতর্ক ৷

আরও পড়ুন : Sourav Ganguly : স্বার্থের সংঘাত, এটিকে-মোহনবাগানের পদ ছাড়ছেন সৌরভ

এই ঘটনার পর সবাইকে অবাক করে রেফারিদের বিরুদ্ধে কিছু মন্তব‍্য করেন আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ৷ আর সেটাও তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় ৷ সেখানে তিনি বলেছিলেন, 1. রেফারিং নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠছে 2. রেফারিদের মান উন্নত হচ্ছে না 3. রেফারিরা পোস্টিং নিয়ে ভাবছেন 4. মান যদি না বাড়ে তাহলে রেফারিজ বোর্ড গঠন নিয়ে ভাবতে হবে ৷ প্রয়োজন হলে 9 ওয়াই ধারা অনুযায়ী সিআরএ ভেঙে দিতে পারে আইএফএ 5. রেফারিদের মধ‍্যে অন্তর্কলহ বেশি এবং 6. এই ভাবে চলতে থাকলে আসন্ন আইএফএ শিল্ডে বাইরের রেফারি দিয়ে ম‍্যাচ খেলানো হবে ৷

আরও পড়ুন : CFL : ডুরান্ডের পর কলকাতা লিগ, ভবানীপুরের বিরুদ্ধে হার মহমেডানের

সোশ্যাল মিডিয়ায় আইএফএ সচিব ওই পোস্ট করার পরেই ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে ডাক পড়ে মহমেডান বনাম টালিগঞ্জ ম‍্যাচ রেফারি তন্ময় ধরের ৷ সেই ম‍্যাচের বিতর্কিত অংশ অর্থাৎ, হ‍্যান্ডবল ও লাল কার্ডের ভিডিয়ো ফুটেজ দেখিয়ে সেদিন তন্ময় ধরকে নাকি বলা হয়েছিল, তাঁর অবস্থান ঠিক ছিল না ৷ তিনি ঘটনাস্থল থেকে দূরে ছিলেন ৷ আর বল মহমেডানের ফুটবলারটির হাতে লেগেছে কি না, তা স্পষ্ট নয় ৷ সূত্রের খবর, এর পর আত্মপক্ষ সমর্থনের যথাযথ সুযোগ পাননি তন্ময় ধর ৷ এখানেও প্রশ্ন রয়েছে ৷ লিগের মাঝপথে মডালিটি বদল করে আইএফএ । জানিয়ে দেয়, গ্রুপ লিগের (নকআউট কোয়ালিফাইয়ের ম‍্যাচও এর মধ‍্যে পড়ছে) লাল কার্ড বা হলুদ কার্ড নকআউট পর্বে অর্থাৎ, কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে গ্রাহ‍্য হবে না ৷ তাহলে নতুন মডালিটি অনুযায়ী, রেফারি তন্ময় ধরের দেখানো লাল কার্ড এমনিতেই পরের ম‍্যাচে গ্রাহ‍্য হত না ৷ তাহলে রেফারি তন্ময়কে ডেকে সমঝে দেওয়া হল কেন ? প্রকাশ‍্যে এই ভাবে রেফারিদের সমালোচনা আইএফএ-তে হয়তো প্রথম ঘটল ৷ এই ঘটনার কয়েকদিন পরেই ছিল মহমেডানের ম‍্যাচ ৷ তার আগে আইএফএর এই অতি সক্রিয়তায় সকলেই বিস্মিত করে এবং ক্ষোভের সূত্রপাত এখান থেকে শুরু হয় ৷

আরও পড়ুন : Sunil Chhetri: সতীর্থদের পরিশ্রমেই কাপ জয় সম্ভব হয়েছে, প্রশংসা সুনীলের

রেফারিদের বড় দলকে ‘টেনে’ খেলানোর অভিযোগ নতুন নয় ৷ রাস্তার বাতিস্তম্ভে আলো জ্বলার পরও খেলা চালানো, ক্লাব পতাকা নামিয়ে ফেলার পরেও শেষ বাশি না বাজানোর অভিযোগ ‘আর্কাইভে’ জায়গা করে নিয়েছে ৷ অতীতে লিগের ইস্টবেঙ্গল বনাম ইস্টার্ন রেলের ম‍্যাচে 17 মিনিট বেশি খেলানো হয়েছিল ৷ শোনা যায় সেই দিন নাকি রেড রোডের লাইটও জ্বলে উঠেছিল ৷ তবুও ম‍্যাচ চালানো হয় ৷ তাই নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল ৷ কিন্তু, কখনই প্রকাশ‍্যে আইএফএ-তে ডেকে রেফারির কাছে কৈয়ফত চাওয়া হয়নি বা ভুল ধরানো হয়নি ৷ হলেও তা প্রকাশ্যে আসেনি ৷ প্রাক্তন ফিফা রেফারি প্রদীপ নাগ বলছেন, ‘‘ওই ম‍্যাচে অতিরিক্ত 17 মিনিট ম‍্যাচ খেলানো হয়েছিল ঠিকই ৷ কিন্তু, ম‍্যাচটা মাঝখানে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ সেটাই খেলানো হয়েছিল ৷ তবে, তন্ময় ধরকে ডেকে বিষয়টা যা করা হয়েছে এবং তা যেভাবে প্রকাশ‍্যে আনা হয়েছে, তার দরকার ছিল না ৷ অবাক হয়েছি শুনে যে, যাঁরা তন্ময়ের বিচার করলেন ৷ তাঁদের মধ‍্যে কেউ টেকনিক্যাল লোক ছিলেন না ৷’’

আরও পড়ুন : IND vs PAK : ভারত-পাক ম্যাচ নিয়ে সারারাত সোশ্যাল মিডিয়ায় কাদা ছোড়াছুড়ি ভাজ্জি-আমিরের

বিতর্কে জড়াতে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র রেফারি বলছিলেন, ‘‘রেফারিদেরও ভুল হতেই পারে ৷ তাঁরা মানুষ ৷ তার জন‍্য নিদিষ্ট কমিটি আছে ৷ ভুল হলে সেই রেফারিকে ফ্রিজ করার নিয়ম আছে ৷ সব দেশে তাই হয় ৷ কখনও প্রকাশ‍্যে, সবাইকে জানিয়ে কাউকে ছোট করা হয় না ৷ আইএফএ প্রকাশ‍্যে রেফারিদের অপমান করল ৷ এই ভাবে চললে নতুন ছেলেরা আর রেফারি হতে আসবে না ৷ আর যে কটা ভাল রেফারি আছেন, তাঁরা যদি ভিন রাজ‍্যে চলে গেলে কার মুখ পুড়বে ? সিআরএ না আইএফএ-র ?’’

আইএফএ-র এহেন ভূমিকা মেনে নিতে পারছেন না রেফারি সংস্থার একাংশ ৷ বিধিনিষেধ থাকায় তাঁরা মুখ খুলতে পারছেন না ৷ তাঁরা আরও বেশি বিরক্ত হয়েছেন সিআরএর ভূমিকায় ৷ বিশেষ করে সংস্থার সচিব সুকৃতি দত্তের উপর ৷ কারণ তিনি এই ঘটনার পরে কোনও শব্দ ব্যয় করেননি ৷ সিআরএ সচিব অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ ৷ এই বিষয়ে সুকৃতি দত্ত বলছেন, ‘‘এই নিয়ে এখন কিছু বলব না ৷ আগামী সাতদিনের মধ‍্যেই উত্তর পেয়ে যাবেন, সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে ৷’’

আরও পড়ুন : Quinto De Cock : হাঁটু মুড়ে প্রতিবাদ না জানিয়ে শাস্তির মুখে ডি'কক !

প্রসঙ্গত, সুকৃতি দত্তের সৎ এবং দাপুটে ভাবমূর্তি রয়েছে ময়দানে ৷ সিআরএর কোষাধ্যক্ষ থাকাকালীন তহবিলের গড়মিল নিয়ে সরব হয়েছিলেন ৷ এখন সচিবের চেয়ারে বসে তাঁর নরম মনোভাবে সকলেই অবাক ৷ শোনা যাচ্ছে সুকৃতি দত্ত চেয়ারে থাকলেও সংস্থার প্রশাসনিক রাশ প্রাক্তন রেফারি কাশীনাথ সেন ও চিত্তদাস মজুমদারের হাতে ৷ যদিও সুকৃতি দত্ত এই অভিযোগে পাত্তা দিতে নারাজ ৷ বরং অপেক্ষা করে কী হয় ? তা দেখার কথা বলছেন ৷

আরও পড়ুন : Mohammed Shami : কঠিন সময় বোর্ডকে পাশে পেলেন শামি

তবে, এবারের আইএফএ বনাম রেফারি বিতর্ক নিয়ে একাধিক ক্লাব কর্তাও অবাক ৷ কারণ, এই ধরনের ঘটনা ময়দানে নতুন নয় ৷ অনেকের ধারণা অনর্থক বিতর্ক করা হচ্ছে ৷ বড় ক্লাবকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও নতুন নয় ৷ তবে, একাধিক প্রশ্ন উঠছে এর সঙ্গে । ভিএআর (ভিডিয়ো অ‍্যাসিস্ট‍্যান্ট রেফারি) নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ৷ মহমেডান বনাম ভবানীপুর ম‍্যাচে ভিএআর ব্যবহার করা হয়েছিল ৷ অথচ মহমেডান বনাম ইউনাটেড স্পোর্টসের ম‍্যাচে বিতর্কিত ফাউলের ক্ষেত্রে (পেনাল্টি) ভিএআর প্রয়োগ হয়নি কেন ? ইউনাইটেডের ম‍্যাথ‍্যুকে যেভাবে ফাউল করা হয়েছিল ৷ সেখানেও ভিএআর-এর প্রয়োগ হয়নি ৷ প্রদীপ নাগ বলছেন, ‘‘ভিএআর সিস্টেম প্রয়োগ করার মত ব্যবস্থা আমাদের লিগে নেই ৷ সেই পরিকাঠামোই নেই ৷’’ এখানে প্রশ্ন তাহলে ভবানীপুর ম‍্যাচে হল কি করে ?

কলকাতা, 27 অক্টোবর : কলকাতা লিগের শেষ পর্বে এসে সংঘাতে জড়াল রাজ্য ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা এবং ক্যালকাটা রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন ৷ এই সময়টা ময়দানে বিজয়া সম্মিলনীর আবহ থাকে ৷ কিন্তু, সেখানে পারস্পরিক সৌহার্দ্য বিনিময় ছেড়ে রীতিমত যুযুধান দুই পক্ষ ৷ আইএফএ বনাম রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে চলা বিতর্ক ময়দানের উত্তাপ ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে ৷ সুতারকিন স্ট্রিট এবং রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের পদাধিকারীদের বেলাগাম আচরণেই এই বিতর্ক শুরু হয়েছে বলে মনে করছে ময়দানের সঙ্গে জড়িত লোকজন ৷

বলা হচ্ছে , আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের কিছি আচরণ বিরক্তি বাড়িয়েছে বাংলার রেফারিদের একাংশের মধ্যে ৷ আবার বাংলার প্রথম সারির বেশ কয়েকজন রেফারি আছেন, যাঁরা কলকাতা রেফারিজ অ‍্যাসোসিয়েশনের সচিব সুকৃতি দত্তের আচরণেও ক্ষুব্ধ । এ নিয়ে এক প্রাক্তন ফিফা রেফারি জানান, ‘‘রেফারি হল মাঠের বিচারক ৷ তাঁকে যদি রাজ‍্য ফুটবল নিয়ামক সংস্থা নিজের দফতরে ডেকে সমঝে চলার কথা বলে ৷ তাহলে সে মাঠে নেমে স্বাধীনভাবে বাঁশি বাজাতে পারবে ? যা ঘটেছে তা বাংলা রেফারিদের পক্ষে অনভিপ্রেত এবং এটা একটা কালো অধ‍্যায় হয়ে থেকে যাবে ৷ অতীতে এমন হয়নি ৷ কিছুদিন অপেক্ষা করুন ৷ সব জানতে পারবেন ৷’’

এখানেই প্রশ্ন, কী এমন ঘটল ? যে রেফারির একটা অংশ রাজ্যের ফুটবল নিয়ামক সংস্থার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছেন ৷ আর সেই ক্ষোভ এখন সামনেও চলে এসেছে ৷ এই ঘটনার সূত্রপাত, কলকাতা লিগের একটি ম্যাচকে ঘিরে ৷ চলতি মরসুমে লিগের নকআউট পর্বে কোয়ালিফাইয়ারে মহমেডান ও টালিগঞ্জ ম‍্যাচ রেফারি তন্ময় ধরের একটি সিদ্ধান্ত যাবতীয় গন্ডগোলের নেপথ্যে ৷ মহমেডানের বিদেশি ডিফেন্ডার হ‍্যান্ডবল করায়, তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়েছিলেন রেফারি ৷ সেই থেকেই যত বিতর্ক ৷

আরও পড়ুন : Sourav Ganguly : স্বার্থের সংঘাত, এটিকে-মোহনবাগানের পদ ছাড়ছেন সৌরভ

এই ঘটনার পর সবাইকে অবাক করে রেফারিদের বিরুদ্ধে কিছু মন্তব‍্য করেন আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ৷ আর সেটাও তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় ৷ সেখানে তিনি বলেছিলেন, 1. রেফারিং নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠছে 2. রেফারিদের মান উন্নত হচ্ছে না 3. রেফারিরা পোস্টিং নিয়ে ভাবছেন 4. মান যদি না বাড়ে তাহলে রেফারিজ বোর্ড গঠন নিয়ে ভাবতে হবে ৷ প্রয়োজন হলে 9 ওয়াই ধারা অনুযায়ী সিআরএ ভেঙে দিতে পারে আইএফএ 5. রেফারিদের মধ‍্যে অন্তর্কলহ বেশি এবং 6. এই ভাবে চলতে থাকলে আসন্ন আইএফএ শিল্ডে বাইরের রেফারি দিয়ে ম‍্যাচ খেলানো হবে ৷

আরও পড়ুন : CFL : ডুরান্ডের পর কলকাতা লিগ, ভবানীপুরের বিরুদ্ধে হার মহমেডানের

সোশ্যাল মিডিয়ায় আইএফএ সচিব ওই পোস্ট করার পরেই ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে ডাক পড়ে মহমেডান বনাম টালিগঞ্জ ম‍্যাচ রেফারি তন্ময় ধরের ৷ সেই ম‍্যাচের বিতর্কিত অংশ অর্থাৎ, হ‍্যান্ডবল ও লাল কার্ডের ভিডিয়ো ফুটেজ দেখিয়ে সেদিন তন্ময় ধরকে নাকি বলা হয়েছিল, তাঁর অবস্থান ঠিক ছিল না ৷ তিনি ঘটনাস্থল থেকে দূরে ছিলেন ৷ আর বল মহমেডানের ফুটবলারটির হাতে লেগেছে কি না, তা স্পষ্ট নয় ৷ সূত্রের খবর, এর পর আত্মপক্ষ সমর্থনের যথাযথ সুযোগ পাননি তন্ময় ধর ৷ এখানেও প্রশ্ন রয়েছে ৷ লিগের মাঝপথে মডালিটি বদল করে আইএফএ । জানিয়ে দেয়, গ্রুপ লিগের (নকআউট কোয়ালিফাইয়ের ম‍্যাচও এর মধ‍্যে পড়ছে) লাল কার্ড বা হলুদ কার্ড নকআউট পর্বে অর্থাৎ, কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে গ্রাহ‍্য হবে না ৷ তাহলে নতুন মডালিটি অনুযায়ী, রেফারি তন্ময় ধরের দেখানো লাল কার্ড এমনিতেই পরের ম‍্যাচে গ্রাহ‍্য হত না ৷ তাহলে রেফারি তন্ময়কে ডেকে সমঝে দেওয়া হল কেন ? প্রকাশ‍্যে এই ভাবে রেফারিদের সমালোচনা আইএফএ-তে হয়তো প্রথম ঘটল ৷ এই ঘটনার কয়েকদিন পরেই ছিল মহমেডানের ম‍্যাচ ৷ তার আগে আইএফএর এই অতি সক্রিয়তায় সকলেই বিস্মিত করে এবং ক্ষোভের সূত্রপাত এখান থেকে শুরু হয় ৷

আরও পড়ুন : Sunil Chhetri: সতীর্থদের পরিশ্রমেই কাপ জয় সম্ভব হয়েছে, প্রশংসা সুনীলের

রেফারিদের বড় দলকে ‘টেনে’ খেলানোর অভিযোগ নতুন নয় ৷ রাস্তার বাতিস্তম্ভে আলো জ্বলার পরও খেলা চালানো, ক্লাব পতাকা নামিয়ে ফেলার পরেও শেষ বাশি না বাজানোর অভিযোগ ‘আর্কাইভে’ জায়গা করে নিয়েছে ৷ অতীতে লিগের ইস্টবেঙ্গল বনাম ইস্টার্ন রেলের ম‍্যাচে 17 মিনিট বেশি খেলানো হয়েছিল ৷ শোনা যায় সেই দিন নাকি রেড রোডের লাইটও জ্বলে উঠেছিল ৷ তবুও ম‍্যাচ চালানো হয় ৷ তাই নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল ৷ কিন্তু, কখনই প্রকাশ‍্যে আইএফএ-তে ডেকে রেফারির কাছে কৈয়ফত চাওয়া হয়নি বা ভুল ধরানো হয়নি ৷ হলেও তা প্রকাশ্যে আসেনি ৷ প্রাক্তন ফিফা রেফারি প্রদীপ নাগ বলছেন, ‘‘ওই ম‍্যাচে অতিরিক্ত 17 মিনিট ম‍্যাচ খেলানো হয়েছিল ঠিকই ৷ কিন্তু, ম‍্যাচটা মাঝখানে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ সেটাই খেলানো হয়েছিল ৷ তবে, তন্ময় ধরকে ডেকে বিষয়টা যা করা হয়েছে এবং তা যেভাবে প্রকাশ‍্যে আনা হয়েছে, তার দরকার ছিল না ৷ অবাক হয়েছি শুনে যে, যাঁরা তন্ময়ের বিচার করলেন ৷ তাঁদের মধ‍্যে কেউ টেকনিক্যাল লোক ছিলেন না ৷’’

আরও পড়ুন : IND vs PAK : ভারত-পাক ম্যাচ নিয়ে সারারাত সোশ্যাল মিডিয়ায় কাদা ছোড়াছুড়ি ভাজ্জি-আমিরের

বিতর্কে জড়াতে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র রেফারি বলছিলেন, ‘‘রেফারিদেরও ভুল হতেই পারে ৷ তাঁরা মানুষ ৷ তার জন‍্য নিদিষ্ট কমিটি আছে ৷ ভুল হলে সেই রেফারিকে ফ্রিজ করার নিয়ম আছে ৷ সব দেশে তাই হয় ৷ কখনও প্রকাশ‍্যে, সবাইকে জানিয়ে কাউকে ছোট করা হয় না ৷ আইএফএ প্রকাশ‍্যে রেফারিদের অপমান করল ৷ এই ভাবে চললে নতুন ছেলেরা আর রেফারি হতে আসবে না ৷ আর যে কটা ভাল রেফারি আছেন, তাঁরা যদি ভিন রাজ‍্যে চলে গেলে কার মুখ পুড়বে ? সিআরএ না আইএফএ-র ?’’

আইএফএ-র এহেন ভূমিকা মেনে নিতে পারছেন না রেফারি সংস্থার একাংশ ৷ বিধিনিষেধ থাকায় তাঁরা মুখ খুলতে পারছেন না ৷ তাঁরা আরও বেশি বিরক্ত হয়েছেন সিআরএর ভূমিকায় ৷ বিশেষ করে সংস্থার সচিব সুকৃতি দত্তের উপর ৷ কারণ তিনি এই ঘটনার পরে কোনও শব্দ ব্যয় করেননি ৷ সিআরএ সচিব অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ ৷ এই বিষয়ে সুকৃতি দত্ত বলছেন, ‘‘এই নিয়ে এখন কিছু বলব না ৷ আগামী সাতদিনের মধ‍্যেই উত্তর পেয়ে যাবেন, সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে ৷’’

আরও পড়ুন : Quinto De Cock : হাঁটু মুড়ে প্রতিবাদ না জানিয়ে শাস্তির মুখে ডি'কক !

প্রসঙ্গত, সুকৃতি দত্তের সৎ এবং দাপুটে ভাবমূর্তি রয়েছে ময়দানে ৷ সিআরএর কোষাধ্যক্ষ থাকাকালীন তহবিলের গড়মিল নিয়ে সরব হয়েছিলেন ৷ এখন সচিবের চেয়ারে বসে তাঁর নরম মনোভাবে সকলেই অবাক ৷ শোনা যাচ্ছে সুকৃতি দত্ত চেয়ারে থাকলেও সংস্থার প্রশাসনিক রাশ প্রাক্তন রেফারি কাশীনাথ সেন ও চিত্তদাস মজুমদারের হাতে ৷ যদিও সুকৃতি দত্ত এই অভিযোগে পাত্তা দিতে নারাজ ৷ বরং অপেক্ষা করে কী হয় ? তা দেখার কথা বলছেন ৷

আরও পড়ুন : Mohammed Shami : কঠিন সময় বোর্ডকে পাশে পেলেন শামি

তবে, এবারের আইএফএ বনাম রেফারি বিতর্ক নিয়ে একাধিক ক্লাব কর্তাও অবাক ৷ কারণ, এই ধরনের ঘটনা ময়দানে নতুন নয় ৷ অনেকের ধারণা অনর্থক বিতর্ক করা হচ্ছে ৷ বড় ক্লাবকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও নতুন নয় ৷ তবে, একাধিক প্রশ্ন উঠছে এর সঙ্গে । ভিএআর (ভিডিয়ো অ‍্যাসিস্ট‍্যান্ট রেফারি) নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ৷ মহমেডান বনাম ভবানীপুর ম‍্যাচে ভিএআর ব্যবহার করা হয়েছিল ৷ অথচ মহমেডান বনাম ইউনাটেড স্পোর্টসের ম‍্যাচে বিতর্কিত ফাউলের ক্ষেত্রে (পেনাল্টি) ভিএআর প্রয়োগ হয়নি কেন ? ইউনাইটেডের ম‍্যাথ‍্যুকে যেভাবে ফাউল করা হয়েছিল ৷ সেখানেও ভিএআর-এর প্রয়োগ হয়নি ৷ প্রদীপ নাগ বলছেন, ‘‘ভিএআর সিস্টেম প্রয়োগ করার মত ব্যবস্থা আমাদের লিগে নেই ৷ সেই পরিকাঠামোই নেই ৷’’ এখানে প্রশ্ন তাহলে ভবানীপুর ম‍্যাচে হল কি করে ?

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.