কলকাতা, 30 অগস্ট : রবিবার নির্ধারিত সময়ে কল্যাণী স্টেডিয়ামে এটিকে মোহনবাগান বনাম জর্জ টেলিগ্রাফের কলকাতা লিগের ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু আন্তেনিও লোপেজ হাবাসের দলের অনুপস্থিতির কারণে তা হয়নি । প্রত্যাশিত মতোই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষার পর উপস্থিত জর্জ টেলিগ্রাফকে ওয়াকওভার দিয়ে মাঠ ছাড়লেন রেফারি ।
এই ঘটনা কলকাতা ময়দানে আলোড়ন ফেলেছে । কোভিড পরিস্থিতির বিধিনিষেধ মেনে মারণ ভাইরাসের চোখ রাঙানি কার্যত উপেক্ষা করে এই মরসুমে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ আয়োজন করেছে রাজ্য ফুটবল নিয়ামক সংস্থা আইএফএ । লিগে অংশগ্রহণকারী 14টি দল প্রথম থেকে সাধুবাদ দিয়ে এসেছে । এসসি ইস্টবেঙ্গল তাদের আভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে দলগঠনের প্রতিকূলতার কথা জানিয়েছিল । এখন সেসব সমস্যা মিটিয়ে দল গঠন শুরু করলেও তা চলতি কলকাতা লিগের মধ্যে কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে । যদিও ইতিমধ্যে আইএফএকে চিঠি দিয়ে ইস্টবেঙ্গল আরও সময় চেয়েছে । কিন্তু দু'বার সূচি পরিবর্তন করার পরে আইএফএ আর কতটা অপেক্ষা করবে সেটাই এখন দেখার ৷
এটিকে মোহনবাগানের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা । তারা এএফসি কাপে খেলার জন্য সূচিতে সমঝোতার পাশাপাশি কলকাতা লিগে অংশগ্রহণের ব্যাপারে আগ্রহের কথাও জানিয়েছিল । অথচ দেখা গেল মালদ্বীপে এএফসি কাপের প্রথম পর্ব শেষ করে হাবাস ফুটবলারদের ছুটি দিয়ে দিলেন । রয় কৃষ্ণা ঘুরে বেড়াচ্ছেন ও ডেভিড উইলিয়ামস গলফ খেলছেন, এই ছবিই তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার হ্যান্ডেলে ঘোরা ফেরা করছে ।
আরও পড়ুন : AFC Cup : পিছিয়ে পড়ে ড্র, এএফসি কাপের শেষ চারে এটিকে মোহনবাগান
জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে মাঠে না নামা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত । এই বিষয়ে এটিকে মোহনবাগানের সিইও রঘু আইয়ার জানান, তাঁরা শনিবার এই অপারগতার বিষয়টি আইএফএকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন । ফুটবলার না থাকার পাশাপশি দলের বেশ কিছু ফুটবলার জাতীয় শিবিরে । এএফসি কাপের খেলা রয়েছে, সেই কারণে তারা মাঠে নামতে পারেনি । যদিও আইএফএ বলেছে এটিকে মোহনবাগানের চিঠি প্রাপ্তির কোনও খবর তাদের কাছে নেই ।
সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, "বাংলার ফুটবলের স্বার্থে দুই প্রধানের যোগদান জরুরি ছিল । একটা কঠিন সময়ের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে । ভবিষ্যতে দুই প্রধানকে আইএফএর দ্বারস্থ হতে হলে তখন সমস্যা দেখা দিতে পারে ।’’
যদিও এই মরসুমে সম্ভব না হলেও পরের মরসুমে কলকাতা লিগে সবুজ মেরুনকে দেখা যাওয়ার কথা জানিয়েছেন রঘু আইয়ার । চ্যাম্পিয়ন হতেই তারা দল নামাবেন বলে আশ্বস্তও করেছেন ।
আরও পড়ুন : East Bengal : ফুটবলারদের নিয়ে খোঁজখবর শুরু, দল গঠনে তৎপরতা ইস্টবেঙ্গলে
এখানেই উঠছে প্রশ্ন ৷ বিশ্ব ফুটবলের নামী দামী লিগে বিশ্ব বিখ্যাত দলগুলো সমান্তরালভাবে দুটো টুর্নামেন্টে আকছার খেলে থাকে । অথচ ভারত এবং কলকাতার ফুটবলে যত বায়নাক্কা । কয়েক বছর আগেও আই লিগের মাঝে এএফসির টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে কলকাতার দুই প্রধান দল । সেই সময় সূচি অবশ্য বোঝাপড়া করে সামলানো হয়েছিল । তবে নিয়ামক সংস্থা কড়া ছিল বলেই কোনও দলের বায়নাক্কা করার সাহস হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে ।
শুনতে খারাপ লাগলেও আইএফএ কিছুটা হলেও নরম । তাই বোধহয় আঁচড়ানো সহজ । এক দলের প্রধানের দলগঠন নিয়ে আভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে । অন্য প্রধান এড়িয়ে যায় কীভাবে ? এই বছর কলকাতা লিগে অবনমন নেই । কোভিড পরিস্থিতির কারণেই নিয়ম শিথিল করা হয়েছে । তাই বলে এইরকম সুযোগ নেওয়ার যে দৃষ্টান্ত কল্যাণী স্টেডিয়ামে রাখল তা বাংলার ফুটবলের খারাপ উদাহরণ ।
আরও পড়ুন : East Bengal Sponsorship : শ্রী সিমেন্টই স্পনসর থাকছে, আইএসএল খেলবে ইস্টবেঙ্গল; জানিয়ে দিলেন মমতা