ETV Bharat / sports

WTC : বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও বিতর্ক - ICC

প্রথমবার এতবড় মাপের কোনও টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে আইসিসি ৷ তাই বলাই যায় ভবিষ্যতে এই ভুলগুলি থেকে অবশ্যই শিক্ষা নেবে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা ৷ রাউন্ড রবিন ফর্ম্যাটের পর হয়ত দেখা যেতে পারে নক আউট, আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা ৷

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ
author img

By

Published : Jun 22, 2021, 6:46 PM IST

সাউদাম্পটন, 22 জুন : টেস্ট ক্রিকেটের মরা গাঙে বান আনতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ৷ ভাল সাড়াও পাওয়া যায় ৷ প্রায় দীর্ঘ 2 বছরের লড়াই ৷ কয়েকটি অসাধারণ ম্যাচের সাক্ষী থেকেছেন ক্রিকেট ভক্তরা ৷ দেখা গিয়েছে কয়েকটি ব্যক্তিগত দুরন্ত পারফরমেন্সেও ৷ এতদিনের লড়াইয়ের পর ফাইনালে মুখোমুখি ভারত ও নিউজ়িল্যান্ড ৷ কিন্তু এত কিছু করেও কি বিতর্কমুক্ত আইসিসির প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ?

প্রথমেই আসা যাক বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফর্ম্যাট নিয়ে ৷ যেকোনও আইসিসি ইভেন্টে মূলত দুই রকমভাবে ফর্ম্যাট তৈরি করা হয় ৷ একটিতে গ্রুপ বিন্যাস করা হয় ৷ অন্যটিতে রাউন্ড রবিন ফর্ম্যাটে খেলা হয় ৷ কিন্তু বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে সেই নিয়মের ধার ধারেনি আইসিসি ৷ স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হয় বিতর্ক ৷ এখানে সবকটি দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে খেলেনি ৷ যেমন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলেনি ভারত ও অস্ট্রেলিয়া, তেমনই পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও খেলেনি ভারত ৷ এক্ষেত্রে বলাই যায়, ভারত বনাম পাকিস্তান টেস্ট খেলানোর এক সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ৷

হোম ও অ্যাওয়ে টেস্টে একই পয়েন্ট বিভাজন নিয়েও তৈরি হয় একাধিক বিতর্ক ৷ কারণ আইসিসির তরফে ঠিক করা হয়, ঘরের মাঠে ও অ্যাওয়ে মাঠেও পয়েন্ট থাকবে একই ৷ প্রতিটি সিরিজ়ে 120 পয়েন্ট করে ধার্য্য করা হয় ৷ অর্থাৎ একটি দল ঘরের মাঠে কম ম্যাচ খেলেও 120 পয়েন্ট অর্জন করতে পারে ৷ অন্যদিকে প্রথম সারির তিনটি দল, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ড নিজেদের মধ্যে চার-পাঁচটি টেস্টের সিরিজ় খেলেছে ৷ অথচ তাঁরা কম পয়েন্ট অর্জন করেছে ৷ তাই অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দেশগুলি নিউজ়িল্যান্ডের থেকে বেশি ম্যাচ জিতেও ফাইনাল খেলতে ব্যর্থ ৷ অন্যদিকে নিজেদের 7টি ম্যাচ জয়ের মধ্যে ঘরের মাঠে কিউয়িরা জিতেছে 6টি ম্যাচ ৷

এছাড়া কোভিড প্যানডেমিকের কথা ভেবে টুর্নামেন্টের মাঝপথে পয়েন্ট সিস্টেমে পরিবর্তন করে আইসিসি ৷ নতুন নিয়মে মোট অর্জিত পয়েন্টের শতাংশের বিচার করা হয় ৷ অর্থাৎ যত পয়েন্ট দলগুলি অর্জন করেছে, তার শতাংশের বিচারে ঠিক হবে কোন দল ফাইনাল খেলবে ৷ নতুন পয়েন্ট সিস্টেমে সমস্যায় পড়ে ভারত ৷ কারণ আগে 360 পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে ছিল বিরাট কোহলির ভারত ৷ কিন্তু নতুন পয়েন্ট সিস্টেম আসতেই বিরাটরা দুই নম্বরে নেমে আসে ৷ একে উঠে আসে অস্ট্রেলিয়া ৷ অন্যদিকে নতুন পয়েন্ট সিস্টেমে লাভ হয় নিউজ়িল্যান্ডের ৷ ঘরের মাঠে শেষ দুটি সিরিজ়ে সর্বাধিক 240 পয়েন্ট তোলার অবকাশ ছিল নিউজ়িল্যান্ডের ৷ কিউয়িরা সেই 240 পয়েন্ট অর্জন করে ৷ অর্থাৎ শতাংশের বিচারে একশো শতাংশ ৷ যা তাঁদের প্রথম দুই স্থানে শেষ করতে সাহায্য করে ৷ ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিও বিষয়টি নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করেন ৷

তবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজনের সবথেকে বড় ত্রুটি অবশ্যই লর্ডস থেকে ম্যাচ সরিয়ে সাউদাম্পটনে নিয়ে আসা ৷ কোভিড 19-এর কারণে পূর্ব নির্ধারিত লর্ডস থেকে ফাইনাল ম্যাচ সরানো হয় সাউদাম্পটনের রোজ বোলে ৷ ইংল্যান্ডের আবহওয়ার কথা জানার পরও এই সিদ্ধান্ত সবথেকে বড় ভুল বলছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ কেভিন পিটারসনের মতো ক্রিকেটারও আইসিসির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সরব হয়েছেন ৷

আরও পড়ুন : Copa America 2021 : প্যারাগুয়েকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে মেসিরা

প্রথমবার এতবড় মাপের কোনও টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে আইসিসি ৷ তাই বলাই যায় ভবিষ্যতে এই ভুলগুলি থেকে অবশ্যই শিক্ষা নেবে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা ৷ রাউন্ড রবিন ফর্ম্যাটের পর হয়ত দেখা যেতে পারে নক আউট, আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা ৷ সামনের 10 বছরে একাধিক বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করার ভাবনায় আইসিসি ৷ তবে তা করতে হলে ও বিতর্ক থামাতে হলে অবশ্যই নিজেদের ভুল ত্রুটি শোধরাতে হবে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থাকে ৷

সাউদাম্পটন, 22 জুন : টেস্ট ক্রিকেটের মরা গাঙে বান আনতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ৷ ভাল সাড়াও পাওয়া যায় ৷ প্রায় দীর্ঘ 2 বছরের লড়াই ৷ কয়েকটি অসাধারণ ম্যাচের সাক্ষী থেকেছেন ক্রিকেট ভক্তরা ৷ দেখা গিয়েছে কয়েকটি ব্যক্তিগত দুরন্ত পারফরমেন্সেও ৷ এতদিনের লড়াইয়ের পর ফাইনালে মুখোমুখি ভারত ও নিউজ়িল্যান্ড ৷ কিন্তু এত কিছু করেও কি বিতর্কমুক্ত আইসিসির প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ?

প্রথমেই আসা যাক বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফর্ম্যাট নিয়ে ৷ যেকোনও আইসিসি ইভেন্টে মূলত দুই রকমভাবে ফর্ম্যাট তৈরি করা হয় ৷ একটিতে গ্রুপ বিন্যাস করা হয় ৷ অন্যটিতে রাউন্ড রবিন ফর্ম্যাটে খেলা হয় ৷ কিন্তু বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে সেই নিয়মের ধার ধারেনি আইসিসি ৷ স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হয় বিতর্ক ৷ এখানে সবকটি দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে খেলেনি ৷ যেমন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলেনি ভারত ও অস্ট্রেলিয়া, তেমনই পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও খেলেনি ভারত ৷ এক্ষেত্রে বলাই যায়, ভারত বনাম পাকিস্তান টেস্ট খেলানোর এক সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ৷

হোম ও অ্যাওয়ে টেস্টে একই পয়েন্ট বিভাজন নিয়েও তৈরি হয় একাধিক বিতর্ক ৷ কারণ আইসিসির তরফে ঠিক করা হয়, ঘরের মাঠে ও অ্যাওয়ে মাঠেও পয়েন্ট থাকবে একই ৷ প্রতিটি সিরিজ়ে 120 পয়েন্ট করে ধার্য্য করা হয় ৷ অর্থাৎ একটি দল ঘরের মাঠে কম ম্যাচ খেলেও 120 পয়েন্ট অর্জন করতে পারে ৷ অন্যদিকে প্রথম সারির তিনটি দল, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ড নিজেদের মধ্যে চার-পাঁচটি টেস্টের সিরিজ় খেলেছে ৷ অথচ তাঁরা কম পয়েন্ট অর্জন করেছে ৷ তাই অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দেশগুলি নিউজ়িল্যান্ডের থেকে বেশি ম্যাচ জিতেও ফাইনাল খেলতে ব্যর্থ ৷ অন্যদিকে নিজেদের 7টি ম্যাচ জয়ের মধ্যে ঘরের মাঠে কিউয়িরা জিতেছে 6টি ম্যাচ ৷

এছাড়া কোভিড প্যানডেমিকের কথা ভেবে টুর্নামেন্টের মাঝপথে পয়েন্ট সিস্টেমে পরিবর্তন করে আইসিসি ৷ নতুন নিয়মে মোট অর্জিত পয়েন্টের শতাংশের বিচার করা হয় ৷ অর্থাৎ যত পয়েন্ট দলগুলি অর্জন করেছে, তার শতাংশের বিচারে ঠিক হবে কোন দল ফাইনাল খেলবে ৷ নতুন পয়েন্ট সিস্টেমে সমস্যায় পড়ে ভারত ৷ কারণ আগে 360 পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে ছিল বিরাট কোহলির ভারত ৷ কিন্তু নতুন পয়েন্ট সিস্টেম আসতেই বিরাটরা দুই নম্বরে নেমে আসে ৷ একে উঠে আসে অস্ট্রেলিয়া ৷ অন্যদিকে নতুন পয়েন্ট সিস্টেমে লাভ হয় নিউজ়িল্যান্ডের ৷ ঘরের মাঠে শেষ দুটি সিরিজ়ে সর্বাধিক 240 পয়েন্ট তোলার অবকাশ ছিল নিউজ়িল্যান্ডের ৷ কিউয়িরা সেই 240 পয়েন্ট অর্জন করে ৷ অর্থাৎ শতাংশের বিচারে একশো শতাংশ ৷ যা তাঁদের প্রথম দুই স্থানে শেষ করতে সাহায্য করে ৷ ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিও বিষয়টি নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করেন ৷

তবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজনের সবথেকে বড় ত্রুটি অবশ্যই লর্ডস থেকে ম্যাচ সরিয়ে সাউদাম্পটনে নিয়ে আসা ৷ কোভিড 19-এর কারণে পূর্ব নির্ধারিত লর্ডস থেকে ফাইনাল ম্যাচ সরানো হয় সাউদাম্পটনের রোজ বোলে ৷ ইংল্যান্ডের আবহওয়ার কথা জানার পরও এই সিদ্ধান্ত সবথেকে বড় ভুল বলছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ কেভিন পিটারসনের মতো ক্রিকেটারও আইসিসির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সরব হয়েছেন ৷

আরও পড়ুন : Copa America 2021 : প্যারাগুয়েকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে মেসিরা

প্রথমবার এতবড় মাপের কোনও টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে আইসিসি ৷ তাই বলাই যায় ভবিষ্যতে এই ভুলগুলি থেকে অবশ্যই শিক্ষা নেবে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা ৷ রাউন্ড রবিন ফর্ম্যাটের পর হয়ত দেখা যেতে পারে নক আউট, আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা ৷ সামনের 10 বছরে একাধিক বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করার ভাবনায় আইসিসি ৷ তবে তা করতে হলে ও বিতর্ক থামাতে হলে অবশ্যই নিজেদের ভুল ত্রুটি শোধরাতে হবে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থাকে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.