ETV Bharat / sports

Sachin's 50th Birthday: এ টু জেড... সচিনের জীবনের সঙ্গে যেভাবে জড়িয়ে ইংরেজি বর্ণমালার সবক'টি অক্ষর

ভারতীয় ক্রিকেটের এক এবং অদ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব সচিন তেন্ডুলকর ৷ বলতে গেলে বিশ্ব ক্রিকেটের ঈশ্বরের মর্যাদা পেয়েছেন তিনি ৷ কিন্তু, সেই সচিনের জীবনের অনেক ঘটনা রয়েছে ৷ যা তাঁর জীবনে চিরস্মরণীয় ৷ সচিনের 50 বছরের জন্মদিনে সেই সব স্মৃতির ফিরে দেখা ৷

Sachin's 50th Birthday ETV BHARAT
Sachin's 50th Birthday
author img

By

Published : Apr 24, 2023, 12:05 AM IST

Updated : Apr 24, 2023, 12:32 AM IST

কলকাতা, 24 এপ্রিল: গ্রীষ্ম-বর্ষা-শরৎ-হেমন্ত-শীত-বসন্ত, এই ছয় ঋতু আর সচিন তেন্ডুলকর ৷ সকল ভারতীয়ের কাছে দুই সমার্থক ৷ 1989 সালে ভারতের হয়ে অভিষেক থেকে 2013 সালে ওয়াংখেড়েতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানো ৷ দীর্ঘ এই 24 বছর এবং তার পরেও সচিনের জনপ্রিয়তা ভারত তথা ভূ-বিশ্বে এতটূকুও কমেনি ৷ ক্রিকেট থেকে অবসরের 10 বছর পরেও দেশের সকল ক্রিকেট অনুরাগী একবার সচিন দর্শনের জন্য আকুল হয়ে ওঠেন ৷ ভারতের তথা বিশ্ব ক্রিকেটের ঈশ্বর আজ 50 বছর পূর্ণ করলেন ৷ সচিন রমেশ তেন্ডুলকর ৷ এই নামটার সঙ্গে ইংরেজির ‘এ-জেড’ এই 24টি বর্ণমালার প্রতিটির কোনও না কোনও যোগ রয়েছে ৷ কিংবদন্তীর জীবনের হাফসেঞ্চুরিতে দেখে নেওয়া যাক সচিনের সেই সব কাহিনীর ঝলক ৷

এ- অঞ্জলি, অর্জুন এবং অজিত

মাস্টার ব্লাস্টারের জীবনে তাঁর সবচেয়ে কাছে বন্ধুটি হলেন, তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি তেন্ডুলকর ৷ যা তিনি শুরুর দিন থেকে বলে আসছেন ৷ আর তাঁর ছেলে অর্জুন বাবার মতো না হলেও, ক্রিকেট মাঠে বাবার ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করছেন ৷ 23 বছরের অর্জুন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক না করলেও ৷ আইপিএল-এ নিজের প্রভাব ফেলছেন ৷ সেখানেই সচিনের জীবনের তিন নম্বর ‘এ’ হলেন, তাঁর দাদা অজিত রমেশ তেন্ডুলকর ৷ যার পরিশ্রম না থাকলে ভারত হয়তো আজকের এই ক্রিকেট ঈশ্বরকে পেত না ৷

বি- ব্রিস্টল

ব্রিস্টলের মাঠে সঙ্গে সচিন তেন্ডুলকরের সবসময় একটা আবেগপূর্ণ সম্পর্ক ছিল এবং থাকবে ৷ কেনিয়ার বিরুদ্ধে এই মাঠেই সচিন 140 রানের ইনিংস খেলেছিলেন ৷ তবে, তার থেকেও বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকবে কারণ, বাবা অধ্যাপক রমেশ তেন্ডুলকরের মৃত্যুর এক সপ্তাহেরও কম সময়ে সেই সেঞ্চুরি করেছিলেন সচিন ৷

সি- সেঞ্চুরিয়ন

দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়নের স্টেডিয়ামে সচিন তাঁর জীবনের অন্যতম সেরা ওয়ান ডে ইনিংস খেলেছিলেন ৷ 2003 বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 98 রানের ম্যাচ উইনিং ইনিংস খেলেন সচিন ৷ যে ম্যাচে শোয়েব আখতারকে পয়েন্টের উপর দিয়ে কাট শটে মারা ছয় আজও অধিকাংশ ভারতীয়র স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে ৷

ডি- ডন ব্র্যাডম্যান

স্যার ডন ব্র্যাডম্যান তাঁর 99.94 গড়ের জন্য চিরকাল 'সর্বশ্রেষ্ঠ' হয়ে থাকবেন ৷ কিন্তু, সচিন সাক্ষাতে এই অজি যখন বলেছিলেন, ‘‘এই ছোট্ট ছেলেটার ব্যাটিংয়ের ধরন তাঁর সঙ্গে মেলে ৷’’ আধুনিক ক্রিকেটের সেরা ব্যাট কে ? এই প্রশ্নের ইতি হয়ে গিয়েছিল সেদিনই ৷

ই- ইডেন গার্ডেন্স

সচিনে 200 তম টেস্ট এবং বিশ্বকাপ জয়ের মাঠ ওয়াংখেড়ে, তাঁর প্রাণ হতে পারে ৷ কিন্তু, ইডেন গার্ডেন্স, যেখানে সচিন তাঁর 199 তম টেস্ট খেলেছিলেন ৷ সেই ইডেন সচিনের অন্যতম প্রিয় মাঠগুলির মধ্যে একটা ৷ 1993 সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হিরো কাপের সেমিফাইনালে মহাকাব্যিক শেষ ওভারে সচিনের বোলিং চিরস্মরণীয় ৷ সেদিন বোলার সচিনের সুপারস্টারডন দেখেছিল বিশ্ব ক্রিকেট ৷ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মাত্র 195 রান ডিফেন্ড করেছিল ভারত ৷ 50 নম্বর ওভারে সচিন মাত্র 3 রান দিয়েছিলেন ৷ আর সেই সঙ্গে প্রোটিয়াদের 9 উইকেটে 193 রানে আটকে দেন ৷

এফ- ফেরারি

সচিনের প্রিয় গাড়ি এবং তাঁর প্রিয় দল ফর্মুলা ওয়ান ৷ তিনি প্রথম ভারতীয় যিনি ফেরারি গর্বিত মালিক ছিলেন ৷ যখন 2002 সালে সংস্থার তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মাস্টার ব্লাস্টারকে লাল উজ্জ্বল রঙের ফেরারি উপহার দেওয়া হবে ৷ স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের 29টি সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করার পর এই উপহার দিয়েছিল সংস্থা ৷

জি- গুজরানওয়ালা

তেন্ডুলকর 49টি শতরানের সঙ্গে তাঁর ওয়ান ডে ক্যারিয়ারের ইতি টানেন ৷ কিন্তু তাঁর 463টি ওয়ান ডে ম্যাচের প্রথমটি পাকিস্তানের এই শহরেই খেলেছিলেন মাস্টার ৷ কতরান করেছিলেন ওয়ান ডে অভিষেকে ? স্কোরারকে উনি কোনও কষ্ট করতে দেননি ৷

এইচ- হ্যারিস শিল্ড

মুম্বইয়ের বিখ্যাত ইন্টার-স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হ্যারিস শিল্ড ৷ এই টুর্নামেন্টেই বিশ্ব প্রথম জেনেছিল সচিন রমেশ তেন্ডুলকরের নাম ৷ যখন তিনি বন্ধু তথা সতীর্থ বিনোদ কাম্বলির সঙ্গে 664 রানের পার্টনারশিপ করেন ৷

আই- ইনজামাম-উল-হক

পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়কের কাছে একটি মজার গল্প আছে বলার জন্য ৷ তাঁর ছেলে ইবতিসাম বাবার নয়, সচিন তেন্ডুলকরের বড় ভক্ত ৷ 2004 সালের পাকিস্তান সফরের সময় ইনিজি তাঁর স্কুলে পড়া ছেলেকে সচিনের সঙ্গে দেখা করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন, ভারতের অনুশীলনের সময় ৷

জে- জন ম্যাকেনরো

সচিন তেন্ডুলকর একজন টেনিস প্রেমিক ৷ তাঁর কিশোর বয়সে, সচিন আমেরিকান জন ম্যাকেনরোর একজন বড় ভক্ত ছিলেন ৷ প্রবীণদের মতে, 80-এর দশকের গোড়ার দিকে ম্যাকেনরোর মতো, কোঁকড়া চুলের ভারতীয় প্রতিভাকে লাল হেডব্যান্ড পরে, তাঁর হাউজিং সোসাইটির চারপাশে ঘুরতে দেখা যেত ৷

কে- বিনোদ কাম্বলি

সচিনের শৈশবের বন্ধু কাম্বলি হ্যারিস শিল্ডে 664 রানের বিশ্ব রেকর্ডের তাঁর সঙ্গী ছিলেন ৷ আর সচিনকে নিয়ে কাম্বলির একটি মন্তব্য আজও সেরা ৷ তা হল- ‘‘সচিন লিফ্টে চড়ে উপরে উঠে গেল ৷ আর আমাকে ওঠার জন্য সিঁড়ি ভাঙতে হল ৷’’

এল- ব্রায়ান লারা

সচিন না লারা, দুজনের মধ্যে কে বড় ক্রিকেটার ? তা নিয়ে বিতর্ক আগেও ছিল, আজও রয়েছে ৷ কিন্তু, সচিনের ব্যাটিং ক্লাস যাঁরা উপভোগ করেছেন ৷ তাঁরা একইভাবে ব্রায়ান লারার পাঞ্চও উপভোগ করেছেন ৷ এই দুই কিংবদন্তী 90 দশক থেকে বিশ্ব ক্রিকেটকে এক নতুন আলো দেখিয়েছিলেন ৷ আর সেই সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যেও সৌন্দর্য নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা ৷

এম- গ্লেন ম্যাকগ্রা

তেন্ডুলকর বনাম ম্যাকগ্রার দ্বৈরথ ছিল সেই প্রতিযোগিতা, যা টেস্ট ক্রিকেটকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছিল ৷ এই দুই মাস্টার যখ একে অপরের মুখোমুখি হতেন,তখন নিজেদের সেরাটা উজার কর দিতেন ৷ এমনকি একইঞ্চি জমিও একে অপরকে ছাড়তেন না সহজে ৷

আরও পড়ুন: 25 বছরে 'শারজার মরুঝড়', উদযাপনে মাতলেন লিটল মাস্টার

এন- নরসিং দেওনারাইন

নরসিং দেওনারাইনের আন্তর্জাতিক কেরিয়ার সম্পর্কে লেখার বা বলার কিছু নেই ৷ কিন্তু, একটা কারণে এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানকে বিশ্ব ক্রিকেট মনে রাখবে ৷ নরসিং দেওনারাইন সেই বোলার যিনি সচিন তেন্ডুলকরকে তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ইনিংসে আউট করেছিলেন ৷

ও- ওল্ড ট্র্যাফোর্ড

ম্যাঞ্চেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ড স্টেডিয়াম সচিনের সবচেয়ে প্রিয় মঠের একটা ৷ এটাই সেই মাঠ যেখানে কেরিয়ারে 100 সেঞ্চুরির প্রথমটি করেছিলেন মাস্টার ৷ 1990 সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে 119 রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দ্বিতীয় টেস্ট ড্র করেছিলেন তিনি ৷

পি- পেশোয়ার

এটি সেই স্টেডিয়াম যেখানে বিশ্ব ক্রিকেট প্রথম এক কিশোর ভারতীয়ের নাম নোট করে নিয়েছিল ৷ যেখানে মাত্র 18 বলে 53 রান করেছিলেন সচিন তেন্ডুলকর ৷ একটি প্রদর্শনী ম্যাচ ছিল ৷ যা বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যায় ৷ কিন্তু, সেই সময়ই সচিন বর্তমানের টি-20’র ঝলক দেখিয়ে দিয়েছিলেন ৷

কিউ- আব্দুল কাদির

আমরা পেশওয়ারের ম্যাচের কথা বললে, আব্দুল কাদিরের নাম আসবে না হতে পারে না ৷ সচিন বহুবার বলেছেন যে, মুস্তাক আহমেদকে মাঠের বাইরে পাঠানোর পর, কাদির তাঁকে স্লেজ করার চেষ্টা করেছিলেন ৷ ‘‘বাচ্চে কো ক্যায়া মারতে হো, হামে মারকে দিখাও ৷’’ বাকিটা ইতিহাস ৷ কাদিরকে এক ওভারে 28 রান নিয়েছিলেন সচিন ৷

আর- রাহুল দ্রাবিড়

ভারতীয় ক্রিকেটে রাহুল দ্রাবিড় অন্যতম সেরা একজন ব্যাটার ৷ যিনি নিজেই কিংবদন্তী ৷ সেই রাহুলের সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটে সচিনের মোট 20টি সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ রয়েছে ৷ সেই সঙ্গে দু’জনে মিলে টেস্টে 6 হাজার 920 রান করেছেন যুগলবন্দিতে ৷

আরও পড়ুন: ব্লু টিক হারালেন সচিন-কোহলি-ধোনি-সিন্ধু-নীরজরা, পালটা টুইটারকে চ্যালেঞ্জ লিটল মাস্টারের

এস- শিবাজী পার্ক জিমখানা

এই সেই মাটি ৷ যেখান থেকে সবকিছুর সূচনা হয়েছিল ৷ একটা প্রজন্ম, একটা ক্রিকেট যুগের সূচনা হয়েছিল ৷ রমাকান্ত আচরেকর স্যারের নজরদারিতে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছিল ভারতীয় ক্রিকেট তথা বিশ্ব ক্রিকেটের একটা উপন্যাস ৷ এই শিবাজী পার্ক জিমখানার মাঠ থেকেই সচিন তেন্ডুলকর শিখেছিলেন ক্রিকেটের অ-আ-ক-খ ৷ শিবাজী পার্ক জিমখানাকে মুম্বই ক্রিকেটে আঁতুড় ঘরও বলা হয় ৷

টি- টরন্টো

টরন্টোর স্কেটিং এবং কার্লিং ক্লাব মাঠ সবসময় ভারতীয় ক্রিকেটের 10 নম্বর জার্সির জন্য বিশেষ হয়ে থাকবে ৷ এখানেই তিনি অধিনায়ক হিসেবে প্রথম 'ম্যান অব দ্য ম্যাচ' পুরস্কার পান ৷ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 89 বলে 89 রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছিলেন ৷

ইউ- ইউ টু

সচিন তেন্ডুলকর লতা মঙ্গেশকরের ভক্ত ছিলেন ৷ কিন্তু, যখন ইংলিশ গানের প্রশ্ন আসে ৷ তেন্ডুলকর এখানে বিখ্যাত আইরিশ ব্যান্ড ইউ 2 এর ভক্ত ৷ তাঁর প্রিয় গান, ‘‘হোয়্যার স্ট্রিটস হ্যাভ নো নেম ৷’’

ভি- বিরাট কোহলি

যেদিন সচিন তেন্ডুলকর অবসর নিয়েছিলেন, বিরাট কোহলি তাঁর প্রিয় চেনটি উপহার দিয়েছিলেন সচিনকে ৷ যা বিরাটের বাবার স্মৃতি ছিল ৷ আর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমে সচিনকে উদ্দেশ্য করে বিরাট গেয়েছিলেন, ‘‘তুঝ মে রব দিখতা হ্যায় ৷’’

ডব্লিউ- উইম্বলডন

উইম্বলডন এমন একটা টুর্নামেন্ট ৷ যা তিনি খুব কম সময়ই মিস করেছেন ৷ কিংবদন্তি এসডব্লিই19-এ প্রতিবছর তীর্থযাত্রার মতো যেতেন ৷ ভিআইপি মার্কি জোনে বসে সেন্টার কোর্টের ম্যাচ দেখতে দেখা যায় তাঁকে ৷

এক্স- সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল

সেন্ট জেভিয়ার্স সেই বিশেষ স্কুল, যাদের বিরুদ্ধে শারদাশ্রম বিদ্যামন্দিরের হয়ে তেন্ডুলকর এবং কাম্বলি হ্যারিস শিল্ডে 664 রানের পার্টনারশিপ করেছিলেন ৷

ওয়াই- ইয়র্কশায়ার

ইংলিশ কাউন্টি দল ইয়র্কশায়ারের বিরুদ্ধে একাধিক বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ ছিল ৷ কিন্তু 1990 সালে, তারাই তেন্ডুলকরকে দু’হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানিয়েছিল ৷ ভারতীয় ই কিংবদন্তীকে প্রথম বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ক্লাবটি নিয়েছিল ৷

জেড- জিম্বাবোয়ে

জিম্বাবোয়ের বোলার হেনরি ওলোঙ্গার একটি বাউন্সার সচিনকে আঘাত করেছিল ৷ যেটি এই ভারতীয় ব্যাটে ঠেকিয়েছিলেন ৷ শারজাহ স্টেডিয়ামে 1998 সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির লিগ ম্যাচের সেই শট ক্লোজ-ইন ফিল্ডারের হাতে চলে যায় ৷ কিন্তু, ফাইনালে সচিন তেন্ডুলকর 124 রান করেন ৷ সেই ম্যাচ ভারত 120 বল বাকি থাকতে 10 উইকেটে জিতে নেয় ৷

কলকাতা, 24 এপ্রিল: গ্রীষ্ম-বর্ষা-শরৎ-হেমন্ত-শীত-বসন্ত, এই ছয় ঋতু আর সচিন তেন্ডুলকর ৷ সকল ভারতীয়ের কাছে দুই সমার্থক ৷ 1989 সালে ভারতের হয়ে অভিষেক থেকে 2013 সালে ওয়াংখেড়েতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানো ৷ দীর্ঘ এই 24 বছর এবং তার পরেও সচিনের জনপ্রিয়তা ভারত তথা ভূ-বিশ্বে এতটূকুও কমেনি ৷ ক্রিকেট থেকে অবসরের 10 বছর পরেও দেশের সকল ক্রিকেট অনুরাগী একবার সচিন দর্শনের জন্য আকুল হয়ে ওঠেন ৷ ভারতের তথা বিশ্ব ক্রিকেটের ঈশ্বর আজ 50 বছর পূর্ণ করলেন ৷ সচিন রমেশ তেন্ডুলকর ৷ এই নামটার সঙ্গে ইংরেজির ‘এ-জেড’ এই 24টি বর্ণমালার প্রতিটির কোনও না কোনও যোগ রয়েছে ৷ কিংবদন্তীর জীবনের হাফসেঞ্চুরিতে দেখে নেওয়া যাক সচিনের সেই সব কাহিনীর ঝলক ৷

এ- অঞ্জলি, অর্জুন এবং অজিত

মাস্টার ব্লাস্টারের জীবনে তাঁর সবচেয়ে কাছে বন্ধুটি হলেন, তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি তেন্ডুলকর ৷ যা তিনি শুরুর দিন থেকে বলে আসছেন ৷ আর তাঁর ছেলে অর্জুন বাবার মতো না হলেও, ক্রিকেট মাঠে বাবার ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করছেন ৷ 23 বছরের অর্জুন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক না করলেও ৷ আইপিএল-এ নিজের প্রভাব ফেলছেন ৷ সেখানেই সচিনের জীবনের তিন নম্বর ‘এ’ হলেন, তাঁর দাদা অজিত রমেশ তেন্ডুলকর ৷ যার পরিশ্রম না থাকলে ভারত হয়তো আজকের এই ক্রিকেট ঈশ্বরকে পেত না ৷

বি- ব্রিস্টল

ব্রিস্টলের মাঠে সঙ্গে সচিন তেন্ডুলকরের সবসময় একটা আবেগপূর্ণ সম্পর্ক ছিল এবং থাকবে ৷ কেনিয়ার বিরুদ্ধে এই মাঠেই সচিন 140 রানের ইনিংস খেলেছিলেন ৷ তবে, তার থেকেও বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকবে কারণ, বাবা অধ্যাপক রমেশ তেন্ডুলকরের মৃত্যুর এক সপ্তাহেরও কম সময়ে সেই সেঞ্চুরি করেছিলেন সচিন ৷

সি- সেঞ্চুরিয়ন

দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়নের স্টেডিয়ামে সচিন তাঁর জীবনের অন্যতম সেরা ওয়ান ডে ইনিংস খেলেছিলেন ৷ 2003 বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 98 রানের ম্যাচ উইনিং ইনিংস খেলেন সচিন ৷ যে ম্যাচে শোয়েব আখতারকে পয়েন্টের উপর দিয়ে কাট শটে মারা ছয় আজও অধিকাংশ ভারতীয়র স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে ৷

ডি- ডন ব্র্যাডম্যান

স্যার ডন ব্র্যাডম্যান তাঁর 99.94 গড়ের জন্য চিরকাল 'সর্বশ্রেষ্ঠ' হয়ে থাকবেন ৷ কিন্তু, সচিন সাক্ষাতে এই অজি যখন বলেছিলেন, ‘‘এই ছোট্ট ছেলেটার ব্যাটিংয়ের ধরন তাঁর সঙ্গে মেলে ৷’’ আধুনিক ক্রিকেটের সেরা ব্যাট কে ? এই প্রশ্নের ইতি হয়ে গিয়েছিল সেদিনই ৷

ই- ইডেন গার্ডেন্স

সচিনে 200 তম টেস্ট এবং বিশ্বকাপ জয়ের মাঠ ওয়াংখেড়ে, তাঁর প্রাণ হতে পারে ৷ কিন্তু, ইডেন গার্ডেন্স, যেখানে সচিন তাঁর 199 তম টেস্ট খেলেছিলেন ৷ সেই ইডেন সচিনের অন্যতম প্রিয় মাঠগুলির মধ্যে একটা ৷ 1993 সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হিরো কাপের সেমিফাইনালে মহাকাব্যিক শেষ ওভারে সচিনের বোলিং চিরস্মরণীয় ৷ সেদিন বোলার সচিনের সুপারস্টারডন দেখেছিল বিশ্ব ক্রিকেট ৷ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মাত্র 195 রান ডিফেন্ড করেছিল ভারত ৷ 50 নম্বর ওভারে সচিন মাত্র 3 রান দিয়েছিলেন ৷ আর সেই সঙ্গে প্রোটিয়াদের 9 উইকেটে 193 রানে আটকে দেন ৷

এফ- ফেরারি

সচিনের প্রিয় গাড়ি এবং তাঁর প্রিয় দল ফর্মুলা ওয়ান ৷ তিনি প্রথম ভারতীয় যিনি ফেরারি গর্বিত মালিক ছিলেন ৷ যখন 2002 সালে সংস্থার তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মাস্টার ব্লাস্টারকে লাল উজ্জ্বল রঙের ফেরারি উপহার দেওয়া হবে ৷ স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের 29টি সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করার পর এই উপহার দিয়েছিল সংস্থা ৷

জি- গুজরানওয়ালা

তেন্ডুলকর 49টি শতরানের সঙ্গে তাঁর ওয়ান ডে ক্যারিয়ারের ইতি টানেন ৷ কিন্তু তাঁর 463টি ওয়ান ডে ম্যাচের প্রথমটি পাকিস্তানের এই শহরেই খেলেছিলেন মাস্টার ৷ কতরান করেছিলেন ওয়ান ডে অভিষেকে ? স্কোরারকে উনি কোনও কষ্ট করতে দেননি ৷

এইচ- হ্যারিস শিল্ড

মুম্বইয়ের বিখ্যাত ইন্টার-স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হ্যারিস শিল্ড ৷ এই টুর্নামেন্টেই বিশ্ব প্রথম জেনেছিল সচিন রমেশ তেন্ডুলকরের নাম ৷ যখন তিনি বন্ধু তথা সতীর্থ বিনোদ কাম্বলির সঙ্গে 664 রানের পার্টনারশিপ করেন ৷

আই- ইনজামাম-উল-হক

পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়কের কাছে একটি মজার গল্প আছে বলার জন্য ৷ তাঁর ছেলে ইবতিসাম বাবার নয়, সচিন তেন্ডুলকরের বড় ভক্ত ৷ 2004 সালের পাকিস্তান সফরের সময় ইনিজি তাঁর স্কুলে পড়া ছেলেকে সচিনের সঙ্গে দেখা করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন, ভারতের অনুশীলনের সময় ৷

জে- জন ম্যাকেনরো

সচিন তেন্ডুলকর একজন টেনিস প্রেমিক ৷ তাঁর কিশোর বয়সে, সচিন আমেরিকান জন ম্যাকেনরোর একজন বড় ভক্ত ছিলেন ৷ প্রবীণদের মতে, 80-এর দশকের গোড়ার দিকে ম্যাকেনরোর মতো, কোঁকড়া চুলের ভারতীয় প্রতিভাকে লাল হেডব্যান্ড পরে, তাঁর হাউজিং সোসাইটির চারপাশে ঘুরতে দেখা যেত ৷

কে- বিনোদ কাম্বলি

সচিনের শৈশবের বন্ধু কাম্বলি হ্যারিস শিল্ডে 664 রানের বিশ্ব রেকর্ডের তাঁর সঙ্গী ছিলেন ৷ আর সচিনকে নিয়ে কাম্বলির একটি মন্তব্য আজও সেরা ৷ তা হল- ‘‘সচিন লিফ্টে চড়ে উপরে উঠে গেল ৷ আর আমাকে ওঠার জন্য সিঁড়ি ভাঙতে হল ৷’’

এল- ব্রায়ান লারা

সচিন না লারা, দুজনের মধ্যে কে বড় ক্রিকেটার ? তা নিয়ে বিতর্ক আগেও ছিল, আজও রয়েছে ৷ কিন্তু, সচিনের ব্যাটিং ক্লাস যাঁরা উপভোগ করেছেন ৷ তাঁরা একইভাবে ব্রায়ান লারার পাঞ্চও উপভোগ করেছেন ৷ এই দুই কিংবদন্তী 90 দশক থেকে বিশ্ব ক্রিকেটকে এক নতুন আলো দেখিয়েছিলেন ৷ আর সেই সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যেও সৌন্দর্য নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা ৷

এম- গ্লেন ম্যাকগ্রা

তেন্ডুলকর বনাম ম্যাকগ্রার দ্বৈরথ ছিল সেই প্রতিযোগিতা, যা টেস্ট ক্রিকেটকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছিল ৷ এই দুই মাস্টার যখ একে অপরের মুখোমুখি হতেন,তখন নিজেদের সেরাটা উজার কর দিতেন ৷ এমনকি একইঞ্চি জমিও একে অপরকে ছাড়তেন না সহজে ৷

আরও পড়ুন: 25 বছরে 'শারজার মরুঝড়', উদযাপনে মাতলেন লিটল মাস্টার

এন- নরসিং দেওনারাইন

নরসিং দেওনারাইনের আন্তর্জাতিক কেরিয়ার সম্পর্কে লেখার বা বলার কিছু নেই ৷ কিন্তু, একটা কারণে এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানকে বিশ্ব ক্রিকেট মনে রাখবে ৷ নরসিং দেওনারাইন সেই বোলার যিনি সচিন তেন্ডুলকরকে তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ইনিংসে আউট করেছিলেন ৷

ও- ওল্ড ট্র্যাফোর্ড

ম্যাঞ্চেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ড স্টেডিয়াম সচিনের সবচেয়ে প্রিয় মঠের একটা ৷ এটাই সেই মাঠ যেখানে কেরিয়ারে 100 সেঞ্চুরির প্রথমটি করেছিলেন মাস্টার ৷ 1990 সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে 119 রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দ্বিতীয় টেস্ট ড্র করেছিলেন তিনি ৷

পি- পেশোয়ার

এটি সেই স্টেডিয়াম যেখানে বিশ্ব ক্রিকেট প্রথম এক কিশোর ভারতীয়ের নাম নোট করে নিয়েছিল ৷ যেখানে মাত্র 18 বলে 53 রান করেছিলেন সচিন তেন্ডুলকর ৷ একটি প্রদর্শনী ম্যাচ ছিল ৷ যা বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যায় ৷ কিন্তু, সেই সময়ই সচিন বর্তমানের টি-20’র ঝলক দেখিয়ে দিয়েছিলেন ৷

কিউ- আব্দুল কাদির

আমরা পেশওয়ারের ম্যাচের কথা বললে, আব্দুল কাদিরের নাম আসবে না হতে পারে না ৷ সচিন বহুবার বলেছেন যে, মুস্তাক আহমেদকে মাঠের বাইরে পাঠানোর পর, কাদির তাঁকে স্লেজ করার চেষ্টা করেছিলেন ৷ ‘‘বাচ্চে কো ক্যায়া মারতে হো, হামে মারকে দিখাও ৷’’ বাকিটা ইতিহাস ৷ কাদিরকে এক ওভারে 28 রান নিয়েছিলেন সচিন ৷

আর- রাহুল দ্রাবিড়

ভারতীয় ক্রিকেটে রাহুল দ্রাবিড় অন্যতম সেরা একজন ব্যাটার ৷ যিনি নিজেই কিংবদন্তী ৷ সেই রাহুলের সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটে সচিনের মোট 20টি সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ রয়েছে ৷ সেই সঙ্গে দু’জনে মিলে টেস্টে 6 হাজার 920 রান করেছেন যুগলবন্দিতে ৷

আরও পড়ুন: ব্লু টিক হারালেন সচিন-কোহলি-ধোনি-সিন্ধু-নীরজরা, পালটা টুইটারকে চ্যালেঞ্জ লিটল মাস্টারের

এস- শিবাজী পার্ক জিমখানা

এই সেই মাটি ৷ যেখান থেকে সবকিছুর সূচনা হয়েছিল ৷ একটা প্রজন্ম, একটা ক্রিকেট যুগের সূচনা হয়েছিল ৷ রমাকান্ত আচরেকর স্যারের নজরদারিতে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছিল ভারতীয় ক্রিকেট তথা বিশ্ব ক্রিকেটের একটা উপন্যাস ৷ এই শিবাজী পার্ক জিমখানার মাঠ থেকেই সচিন তেন্ডুলকর শিখেছিলেন ক্রিকেটের অ-আ-ক-খ ৷ শিবাজী পার্ক জিমখানাকে মুম্বই ক্রিকেটে আঁতুড় ঘরও বলা হয় ৷

টি- টরন্টো

টরন্টোর স্কেটিং এবং কার্লিং ক্লাব মাঠ সবসময় ভারতীয় ক্রিকেটের 10 নম্বর জার্সির জন্য বিশেষ হয়ে থাকবে ৷ এখানেই তিনি অধিনায়ক হিসেবে প্রথম 'ম্যান অব দ্য ম্যাচ' পুরস্কার পান ৷ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 89 বলে 89 রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছিলেন ৷

ইউ- ইউ টু

সচিন তেন্ডুলকর লতা মঙ্গেশকরের ভক্ত ছিলেন ৷ কিন্তু, যখন ইংলিশ গানের প্রশ্ন আসে ৷ তেন্ডুলকর এখানে বিখ্যাত আইরিশ ব্যান্ড ইউ 2 এর ভক্ত ৷ তাঁর প্রিয় গান, ‘‘হোয়্যার স্ট্রিটস হ্যাভ নো নেম ৷’’

ভি- বিরাট কোহলি

যেদিন সচিন তেন্ডুলকর অবসর নিয়েছিলেন, বিরাট কোহলি তাঁর প্রিয় চেনটি উপহার দিয়েছিলেন সচিনকে ৷ যা বিরাটের বাবার স্মৃতি ছিল ৷ আর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমে সচিনকে উদ্দেশ্য করে বিরাট গেয়েছিলেন, ‘‘তুঝ মে রব দিখতা হ্যায় ৷’’

ডব্লিউ- উইম্বলডন

উইম্বলডন এমন একটা টুর্নামেন্ট ৷ যা তিনি খুব কম সময়ই মিস করেছেন ৷ কিংবদন্তি এসডব্লিই19-এ প্রতিবছর তীর্থযাত্রার মতো যেতেন ৷ ভিআইপি মার্কি জোনে বসে সেন্টার কোর্টের ম্যাচ দেখতে দেখা যায় তাঁকে ৷

এক্স- সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল

সেন্ট জেভিয়ার্স সেই বিশেষ স্কুল, যাদের বিরুদ্ধে শারদাশ্রম বিদ্যামন্দিরের হয়ে তেন্ডুলকর এবং কাম্বলি হ্যারিস শিল্ডে 664 রানের পার্টনারশিপ করেছিলেন ৷

ওয়াই- ইয়র্কশায়ার

ইংলিশ কাউন্টি দল ইয়র্কশায়ারের বিরুদ্ধে একাধিক বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ ছিল ৷ কিন্তু 1990 সালে, তারাই তেন্ডুলকরকে দু’হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানিয়েছিল ৷ ভারতীয় ই কিংবদন্তীকে প্রথম বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ক্লাবটি নিয়েছিল ৷

জেড- জিম্বাবোয়ে

জিম্বাবোয়ের বোলার হেনরি ওলোঙ্গার একটি বাউন্সার সচিনকে আঘাত করেছিল ৷ যেটি এই ভারতীয় ব্যাটে ঠেকিয়েছিলেন ৷ শারজাহ স্টেডিয়ামে 1998 সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির লিগ ম্যাচের সেই শট ক্লোজ-ইন ফিল্ডারের হাতে চলে যায় ৷ কিন্তু, ফাইনালে সচিন তেন্ডুলকর 124 রান করেন ৷ সেই ম্যাচ ভারত 120 বল বাকি থাকতে 10 উইকেটে জিতে নেয় ৷

Last Updated : Apr 24, 2023, 12:32 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.