ক্যান্ডি, 2 সেপ্টেম্বর: পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক না কেন, বাইশ গজে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানে ক্রিকেট এবং বিনোদনের সংমিশ্রণে এক চরম উপাদেয়, গ্যালারিতে হাজির থেকে যার সাক্ষী হতে চান ক্রিকেটপ্রেমী জনতা ৷ এমনিতেই কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির কারণে এক যুগেরও বেশি সময় হল দু'দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ ৷ স্বভাবতই আইসিসি কিংবা এসিসি'র কোনও ইভেন্টে পড়শি দু'টো দেশ মুখোমুখি হলে উন্মাদনা হয় লাগামছাড়া ৷ তবে শনিবাসরীয় ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আংশিক বিপরীত ছবি দেখল ভারত-পাক মহারণ ৷
গ্যালারিজুড়ে শব্দব্রহ্মের বালাই নেই ৷ শনিবাসরীয় পাল্লেকেলের গ্যালারি দেখে বোঝার উপায় নেই যে, স্টেডিয়ামে ক্রিকেটবিশ্বের সবচেয়ে আকাঙ্খিত ম্যাচটি চলছে ৷ কারণটা অবশ্যই দ্বীপরাষ্ট্রের বর্তমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট ৷ গতবছর দেউলিয়া হয়ে যাওয়া একটা রাষ্ট্রের বুকে এশিয়া কাপের মতো ক্রিকেট যজ্ঞের আয়োজন খানিক বাতুলতা ৷ যার প্রভাব পড়ল মাঠে ৷ ফ্যানেরা আছেন, উচ্ছ্বাস আছে, দু'দেশের জাতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে গ্যালারিতে ভিড় জমানো আছে ৷ তবে সবকিছুর মধ্যেও মহারণের উন্মাদনাটাই মিসিং কোথাও ৷
স্ট্যান্ড তো বটেই, মাঠের অধিকাংশ জায়গাই ভারত-পাক ম্যাচে রইল ফাঁকা ৷ দ্বীপরাষ্ট্রের ক্রিকেট বোর্ডের এক আধিকারিকের কথায়, "টিকিট সব বিক্রি হয়নি ৷ গতকাল সন্ধেবেলায়ও ক্যান্ডি এবং কলম্বো থেকে টিকিট বিক্রি চলছিল ৷ অথচ গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডর টিকিট নেওয়ার লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না ৷"
টিকিটের দাম যে আকাশছোঁয়া তেমনটাও নয় ৷ শুরুর দিকে টিকিটের দাম ভারতীয় মুদ্রায় 1500 টাকার আশেপাশে থাকলেও পরে তা কমিয়ে আনা হয় 400 ৷ পাকিস্তানের পাশাপাশি নেপাল ম্যাচের টিকিট কিনলে ছাড় দিয়ে ভারতের জোড়া ম্যাচের টিকিট বিকিয়েছে সাড়ে ছ'শো টাকার আশেপাশে ৷ তবু টিকিটের হাপিত্যেশ ছিল না ভারত-পাক ম্যাচের আগে ৷ যা খুব একটা ভালো বিজ্ঞাপন নয় ৷
আরও পড়ুন: তাঁর হাতেই বদলেছে বোলিং বিভাগ, পাক ‘বধে’ বুমরাই বাজি প্রাক্তন কোচ অরুণের
এ ব্যাপারে সে দেশের ক্রিকেট বোর্ডের এক আধিকারিক আবার বৃষ্টির ভ্রুকুটির কথা সামনে আনলেন ৷ হতাশার সুরে তিনি বলেন, "এটা খুবই আশ্চর্যের ৷ গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের টিকিটের দাম কিছুটা বেশি হলেও এমবার্কমেন্ট টিকিট যথেষ্ট সহজলভ্যই ছিল ৷ একইসঙ্গে উইকেন্ডে ম্যাচ ৷ হতে পারে বৃষ্টির পূর্বাভাসের জেরে মানুষ মুখ ফিরিয়েছে ৷"
আগামী মাসে বিশ্বকাপে ভারত-পাক মহারণের আগে যেখানে আমেদাবাদের হোটেল হাউসফুল, সেখানে ক্যান্ডির হোটেলগুলোতে বুকিংয়ের কোনও তাড়াহুড়ো নেই ৷ যা নিয়ে আক্ষেপ হোটেল মালিকদের গলাতেও ৷ এক হোটেল মালিকের কথায়, "আমরা এই ম্যাচটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম ৷ কিন্তু হোটেলের অধিকাংশ ঘরই খালি ৷" সবমিলিয়ে বাইশ গজের লড়াইয়ে পরতে পরতে মিশে রইল শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সংকট ৷ ফলত অনেকাংশেই ফিকে হয়ে রইল রোহিত-বাবরদের 'ক্ল্যাশ অফ দ্য টাইটানস' ৷