কলকাতা, 10 অক্টোবর: ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি কে হবেন ? ক্রিকেট দুনিয়ার কাছে সবথেকে জরুরি প্রশ্ন এটাই । সেই দৌড়ে বর্তমান সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) অবস্থান কী হতে চলেছে তা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই । অনেকেরই মনে হয়েছিল সৌরভ বোধহয় এই লড়াই থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে পারেন । তাঁদের জন্য সম্ভবত চমক অপেক্ষা করছে । ক্রিকেট জীবনে কঠিন পিচে ম্যাচ জেতানো একাধিক ইনিংস উপহার দেওয়া ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সম্ভবত নতুন স্ট্যান্সে 18 অক্টোবর বোর্ডের প্রশাসনিক যুদ্ধে নামতে চলেছেন। সূত্রের খবর, সোমবার বিকেল অথবা মঙ্গলবার সৌরভ দিল্লি রওনা হতে পারেন । সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার একজন হেভিওয়েট মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর (Sourav Ganguly can meet a central minister in Delhi) । তারপর মুম্বইতে প্রেসিডেন্ট (BCCI president election 2022) পদের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে পারেন বলে খবর। বুধবার বোর্ড নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। অর্থাৎ সবকিছু পরিকল্পনামতো চললে সৌরভের মঙ্গলে উষা আর বুধে পা।
সৌরভ ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ালে রজার বিনি (Roger Binny) হবেন পরবর্তী বোর্ড সভাপতি। গত কয়েকদিন ধরে এই সংবাদটি আসমুদ্র হিমাচলে ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের আসন্ন নির্বাচনের আবহে খবরটি গতি পেয়েছে। কিন্তু যে গতিতে খবরটি ছড়িয়ে পড়েছিল তা গত আটচল্লিশ ঘণ্টায় অনেকটাই স্থিমিত হয়ে এসেছে বলে মনে করছে ক্রিকেট বিশ্বের একটা অংশ । 1983 সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য রজার বিনি বোর্ড সভাপতি হতে পারেন কি না সেই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে বোর্ড-রাজনীতির কয়েকটি সমীকরণে। দক্ষিণ ভারতের এন শ্রীনিবাসন লবি এবং হরিয়ানার অনিরুদ্ধ চৌধুরী প্রভাবিত উত্তর ভারতীয় লবির একাংশ এই অঙ্কের পৃষ্ঠপোষক। গত বৃহস্পতিবার বোর্ডের শীর্ষ পদাধিকারীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছিলেন। সেখানে বর্তমান সভাপতি ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে বসতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করতে অনিচ্ছুক বলে জানিয়েছিলেন। তারপর থেকেই সৌরভ বিদায়ের খবর ছড়িয়ে যায় । পাশাপাশি এটাও রটে যায় স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন রজার বিনি ।
আরও পড়ুন: পাঁচ হেভিওয়েট বাবার পাঁচ পুত্র এবার ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনে !
কিন্তু এই মুহূর্তের পরিস্থিতি যা তাতে রজার বিনির সভাপতি হওয়ার বিষয়টি কোনওদিক থেকে নিশ্চিত নয় । যদিও সৌরভ-বিদায়ের সমর্থনে থাকা অংশ ইতিমধ্যে বলতে শুরু করেছে প্রাক্তন ক্রিকেটাররা সুপ্রশাসক হবেন তার কোনও যুক্তি নেই। সৌরভ বোর্ড সভাপতি থাকাকালীন করোনার ধাক্কা সামলাতে হয়েছে। নৈশালোকে টেস্ট ক্রিকেট আয়োজন ছাড়া প্রশাসক সৌরভের মুন্সিয়ানা চোখে পড়েনি বলে তাদের মত । এমনকী বিরাট কোহলিকে নেতৃত্বের পদ থেকে সরানোর কাজটা আরও ভালোভাবে করা যেত বলেও মনে করে ওই বিশেষ অংশ।
আরও পড়ুন: বিসিসিআইয়ের বিশ্বকাপের কমিটিতে থাকতে পারেন অভিষেক ডালমিয়া
ঠিক এখানেই ওই অংশের কেউ কেউ মনে করেন সৌরভের বদলে আরেকজন প্রাক্তন ক্রিকেটারকেই বসাতে হবে এমন কোনও মানে নেই। বদলে রাজনৈতিক মহলের সঙ্গে সখ্য রয়েছে এমন কাউকে তারা চাইছে । সেই বার্তাই ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাদের এই বাসনা যে বোর্ড সচিব জয় শাহকে ঘিরে গড়ে উঠছে তা বুঝতে বিশেষ অসুবিধা হয় না ।
কিন্তু দেশের বর্তমান সরকারের পরোক্ষ নীতি ক্রীড়াপ্রশাসনের সর্বোচ্চ চেয়ারে কোনও একজন প্রাক্তন খেলোয়াড়কে নিয়ে আসা। এআইএফএ-র মাথায় কল্যাণ চৌবকে নিয়ে আসা, কিংবা হকি ইন্ডিয়ার প্রধান হিসেবে দিলীপ তিরকে সর্বসম্মতিক্রমে নিয়ে আসা সেই পরোক্ষ নীতিকেই সমর্থন করছে। বিসিসিআই এর ক্ষেত্রেও সেই মত মান্যতা পাওয়ার কথা। তাই দিল্লিতে বৈঠক করে সৌরভের মনোনয়ন জমা দেওয়ার মধ্যে হয়তো সর্বসম্মত প্রার্থী বাছাইয়ের বার্তা ছড়িয়ে চেষ্টা থাকবে। সবমিলিয়ে এটা বলাই যায় 18 তারিখের নির্বাচন এবং তার আগের এই একটা সপ্তাহ ভারতীয় ক্রিকেটে প্রশাসনের জন্য সবদিক থেকে বিশেষ হতে চলেছে ।