নয়াদিল্লি, 31 ডিসেম্বর: গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম ঋষভ পন্থকে এয়ারলিফ্ট করা হতে পারে ৷ এখন দেরাদুনের ম্যাক্স হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন ভারতের এই কিপার- ব্যাটার । সেখানে দিল্লি ডিস্ট্রিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের একটি দল গিয়েছে ৷ সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে ডিডিসিএ-এর ডিরেক্টর শ্যাম শর্মা জানিয়েছেন, প্রয়োজন পড়লে ঋষভকে দিল্লিকে নিয়ে আসা হবে (Injured Rishabh Pant May be Airlift to Delhi As Per DDCA Director) ৷ একটা সম্ভাবনা রয়েছে যে, ওকে প্লাস্টিক সার্জারির জন্য দিল্লিতে উড়িয়ে নিয়ে আসা হতে পারে ৷
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোরে দিল্লি থেকে নিজের গাড়ি চালিয়ে উত্তরাখণ্ডের রুরকিতে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন ঋষভ ৷ পথে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন ভারতীয় ক্রিকেটার ৷ তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ড্রাইভিং সিটে বসে তাঁর চোখ বুজে এসেছিল ৷ আর খনিকের সেই অসতর্কতায় এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে ৷ দুর্ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ এবং একাধিক ভিডিয়ো সামনে এসেছে ৷ ঋষভের গাড়ি দুর্ঘটনার কারণে সম্পূর্ণভাবে জ্বলে গিয়েছে ৷ পুরো ঘটনাটি পুলিশ খতিয়ে দেখছে ৷
বিসিসিআই জানিয়েছে, ঋষভের ডান হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছে ৷ সেই সঙ্গে পায়ের আঙুল, ডানহাতের কবজিতে চোট লেগেছে ৷ তবে, দুর্ঘটনার পর ঋষভ পন্থ প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন হরিয়ানা রোডওয়ে বাসের চালক এবং কনডাক্টরের তৎপরতায় ৷ দুর্ঘটনার পর বেশ কিছুক্ষণ গাড়িতেই আটকে ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার ৷ সেই সময় হরিয়ানা রোডওয়ে বাসের চালক সুশীল এবং কনডাক্টর পরমজিত গাড়ির দরজার কাচ ভেঙে ঋষভকে বাইরে বের করে আনেন ৷ আর তারপরেই গাড়িতে আগুন ধরে যায় ৷ তাঁদের এই মহান কাজের জন্য পানিপথ ডিপোর জেনারেল ম্যানেজার কুলদীপ ঝাংগরা তাঁদের সম্মানিত করেন ৷ দু’জনে সম্মান স্বরূপ একটি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে ৷
সুশীল জানিয়েছেন, তিনি এবং কনডাক্টর পরমজিত পানিপথ ডিপোতে পোস্টেড ৷ তাঁরা হরিদ্বার থেকে পানিপথে ফিরছিলেন ৷ সেই সময় রাস্তায় ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনার সাক্ষী হন ৷ বাস থামিয়ে গাড়ির কাছে গিয়ে দেখেন, একজন ব্যক্তি ভিতরে আটকে রয়েছেন ৷ আর তিনি গুরুতর ভাবে জখম ৷ সুশীল ইটিভি ভারতকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার বলেছেন, "তাঁকে গাড়ি থেকে উদ্ধার করার পর আমরা পুলিশ ও অ্যাম্বুল্যান্সে খবর দিই ৷ একটা কাপড় ওর গায়ে জড়িয়ে দিয়েছিলাম, যাতে অ্যাম্বুল্যান্স আসা পর্যন্ত ঠান্ডা থেকে বাঁচানো যায় ৷ আমরা জানতামও না, যে উনি ভারতীয় ক্রিকেটার ছিলেন ৷ একজন মানুষ হিসেবে আমরা আমাদের কর্তব্য পালন করেছি ৷"
আরও পড়ুন: ঋষভের দ্রুত আরোগ্য কামনায় টিম ইন্ডিয়ার সতীর্থ ও প্রাক্তনীরা
সুশীল ইটিভি ভারতকে বলেছেন, "উনি আমাদের বলেছিলেন, তাঁর ফোন থেকে মা-কে কল করতে ৷ কিন্তু, তাঁর মায়ের ফোন সুইচ অফ ছিল ৷ অ্যাম্বুল্যান্স আসা পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে ছিলাম ৷ যাতে জ্ঞান না হারান, তাই ওনার সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছিলাম ৷ আমরা তাঁকে জিজ্ঞেসও করেছিলাম, তাঁর সঙ্গে গাড়িতে আর কেউ ছিল কিনা ৷ কিন্তু, উনি একাই গাড়ি চালিয়ে আসছিলেন বলে জানান ৷"
ঋষভের কাছে সেই মুহূর্তে কোনও নগদ টাকা ছিল না ৷ সেটা বুঝতে পেরে, অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে দেওয়ার সময়, ঋষভের হাতে 8 হাজার টাকা দিয়েছিলেন সুশীল এবং পরমজিত ৷ কনডাক্টর পরমজিত বলেন, "ঋষভকে উদ্ধার করার সময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ছিলেন ৷ তাঁর গাড়ির পিছনের দিকে আগুন ধরে গিয়েছিল ৷ তাই দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করতে হয়েছিল ৷ আমরা খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম এবং ওঁর জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করতে থাকি ৷" বর্তমানে দেরাদুনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ঋষভ পন্থ ৷ অর্থপেডিক এবং প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন ৷