আমেদাবাদ, 13 অক্টোবর: আর মাত্র কয়েকঘণ্টা পরেই মহারণ ৷ বিশ্বকাপের মেগা ম্যাচে আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান ৷ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত অপরাজেয় নীল জার্সিধারীরা ৷ ফলে শনিবারের মোতেরায় এগিয়ে থেকেই নামবেন বিরাট-রোহিতরা ৷
চলতি বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত দু’টি ম্যাচ খেলেছে ভারত ৷ প্রথম ম্যাচে জ্বলে উঠেছিল ভারতের বোলিং লাইন-আপ ৷ দ্বিতীয় ম্যাচে খেল দেখিয়েছে রোহিত-কোহলির চওড়া ব্যাট ৷ সেঞ্চুরি পেয়েছেন রোহিত শর্মা ৷ তিন অঙ্কের রানের খুব কাছে এসেও মাঠ ছাড়তে হয়েছে বিরাট কোহলিকে ৷ ফলে দলের সমস্ত ডিপার্টমেন্টই পরীক্ষিত ৷ অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় ছিনিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান ৷ দুরন্ত সেঞ্চুরি করেছেন মহম্মদ রিজওয়ান, তিন অঙ্কে পৌঁছেছিলেন দলের তরুণ ওপেনার আবদুল্লাই শফিকও ৷ যদিও সে অর্থে পরীক্ষার মুখে পড়েনি শাহিন শাহ আফ্রিদিরা ৷ শ্রীলঙ্কা ম্যাচে 4 উইকেট পেলেও আশা দেখাতে পারেননি হাসান আলিও ৷ ফলে মোতেরায় শনিবার ফের লড়াইটা ভারতীয় ব্যাটিং বনাম পাক বোলিং হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না ৷
যদিও আগাগোড়াই পাকিস্তানের মূল ভিত্তি তাদের বোলিং, বিশেষ করে পেস বিভাগ ৷ একদশক আগেও লড়াইটা ছিল ভারতীয় ব্যাটিং বনাম পাক বোলিং ৷ যদিও এখন ছবিটা আলাদা ৷ বদলেছে টিম ইন্ডিয়ার বোলিং ডিপার্টমেন্ট ৷ মেগা ম্যাচের আগে জসপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজের ফর্ম নিঃসন্দেহে বড় বিষয় ৷ সেটা মেগা ম্যাচের আগে অতিরিক্ত মাইলেজ দিচ্ছে ভারতকে ৷ দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন মহম্মদ শামিও ৷ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জ্বলে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে স্পিনারদের ৷ ফলে মেগা ম্যাচে দুরন্ত লড়াই দেখতে তৈরি ক্রিকেটপ্রেমীরা ৷
এগিয়ে কারা ?
পরিসংখ্যান বলছে, একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে এখনও পর্যন্ত 134 বার মুখোমুখি হয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ৷ পাকিস্তান জিতেছে 73 বার, ভারত পাক ‘বধ’ করেছে 56 বার ৷ ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে এশিয়া কাপকেই বেছে নিয়েছিল এশিয়ান জায়ান্টরা ৷ গ্রুপ পর্বে ‘মেন ইন ব্লু’র কঙ্কালসার চেহারা বেরিয়ে আসলেও নক-আউট পর্বে ‘বিরাট’ হুংকারে ম্যাচ বের করে নিয়েছিল ‘রোহিত অ্যান্ড কোং’ ৷
আরও পড়ুন: নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে নাশকতার হুমকি ইমেল পাঠিয়ে গ্রেফতার 1
ভারতে খেলার অভিজ্ঞতা না-থাকা: 7 বছর পর আবার ভারতে পা রেখেছে পাকিস্তান দল ৷ শেষবার 2016 সালে শাহিদ আফ্রিদির নেতৃত্বে ভারতে এসেছিল তারা ৷ পাকিস্তান দলে মাত্র দু'জন খেলোয়াড় রয়েছেন যাদের ভারতে আগে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে ৷ 15 সদস্যের এই দলে কেবলমাত্র মহম্মদ নওয়াজ এবং সলমন আলি আগা ছাড়া আর কেউই কখনও ভারত সফর করেননি ৷
যদিও ভারতের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা মহম্মদ নওয়াজের নেই ৷ 2016 সালে শাহিদ আফ্রিদি নেতৃত্বাধীন দলের প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ মেলেনি নওয়াজের ৷ অন্যদিকে সলমন আগা ভারতে এসেছিলেন 2014 সালে ৷ তবে জাতীয় দলের হয়ে নয় ৷ চ্যাম্পিয়নস লিগ টি-20 টুর্নামেন্টে তিনি খেলেছিলেন লাহোর লায়ন্স টিমের হয়ে ৷ চেন্নাইয়ের চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে ডলফিনসের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি ৷
ফ্যাক্টর হতে চলেছে সমর্থক: 1 লক্ষ 32 হাজার দর্শকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ৷ তার অর্ধেক ভরলেও চাপ বাড়বে ‘মেন ইন গ্রিন’-এর ৷ ভারতের 11 জন খেলোয়াড়ের সঙ্গে দর্শকদের শব্দব্রহ্মের চাপও সামলাতে হবে বাবরদের ৷ দলের দু’জন খেলোয়াড় বাদ দিতে কারও ভারতে খেলার অভিজ্ঞতা নেই ৷ ফলে শনিবারের মোতেরায় অ্যাডভান্টেজ ভারত ৷
অন্যদিকে, কূটনৈতিক সম্পর্কের জেরে এক যুগেরও বেশি সময় হল দু'দেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ বন্ধ ৷ স্বভাবতই আইসিসি কিংবা এসিসি'র কোনও ইভেন্টে পড়শি দু'টো দেশ মুখোমুখি হলে উন্মাদনা হয় লাগামছাড়া ৷ এশিয়া কাপে সেই ছবিটাই দেখা যায়নি ৷ গ্যালারিজুড়ে শব্দব্রহ্মের বালাই নেই ৷ গ্যালারি দেখে বোঝার উপায় ছিল না, স্টেডিয়ামে ক্রিকেটবিশ্বের সবচেয়ে আকাঙ্খিত ম্যাচ চলছে ৷ ফলে উদ্বোধনী ম্যাচে খাঁ খাঁ করা মোতেরা শনিবার সেই ছবিটা বদলাতে পারে কি না, তাই এখন দেখার ৷
আরও পড়ুন: ভারত-পাক মহারণ, বৈরিতার ব্যারিটোন ভেঙে সব পথ গিয়ে মিশছে মোতেরায়