কলকাতা, 28 জানুয়ারি: 99 করে আউট ! এভাবে সেঞ্চুরি হাতছাড়া হওয়ার দুর্ভাগ্যজনক কাহিনি ক্রিকেট দুনিয়ায় কম নেই । সেইসব অভিশপ্ত নায়কদের নিয়ে গল্প কথা ক্রিকেটপ্রেমীদের মুখে মুখে ফেরে । এবার নিরানব্বইয়ের চক্রব্যুহে আটকে পড়া হতভাগ্যদের তালিকায় নতুন সংযোজন বাংলার অনুষ্টুপ মজুমদার ।
ইডেনে দিল্লির বিরুদ্ধে বড় রান তুলতে বাংলার বাজি ছিলেন অনুষ্টুপ । প্রাথমিক ঝটকা সামলে মজবুত ভিতের উপর দলকে নিয়ে যাওয়ার কাজটা প্রথম দিন কার্যত একাই করেছিলেন । দিল্লির বোলারদের সামলে সেই কাজটা দীর্ঘায়িত করার সংকল্প নিয়ে মাঠে নামলেও ভাগ্য সঙ্গ দিল না অনুষ্টুপের । ব্যক্তিগত নিরানব্বই রানে আউট হন তিনি । হিতেন দালাল যখন তাঁকে রান আউট করলেন তখন ইডেন জুড়ে পিন ড্রপ সাইলেন্স ৷ সেঞ্চুরির শুভেচ্ছা জানাতে তৈরি চলা বঙ্গ সাজঘর এই আউটের ধাক্কায় এতটাই মুহ্যমান হয়ে পড়ল যে পাঁচ উইকেটে 286 রান নিয়ে খেলা শুরু করে প্রথম ইনিংসে 318তে গুটিয়ে গেল বাংলা । ভাগ্য সহায় হল না শাহবাজ আহমেদেরও ৷ 74 বলে 46 রানে আউট হয়ে নিশ্চিত হাফ সেঞ্চুরি হাতছাড়া করলেন ৷ অবশ্য ইডেনে সবুজ উইকেটে 318 পুঁজি নিয়ে দিল্লিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ছাড়েননি বাংলার পেসাররা । নির্দিষ্ট লাইন লেন্থে অভ্রান্ত থেকে ধ্রুব সোরেদের হাত থেকে দিনের শেষে ব্যাটন ফের মনোজদের হাতে । দ্বিতীয় দিনের শেষে দিল্লির স্কোর ছয় উইকেটে 192। হাতে চার উইকেট নিয়ে দিল্লিকে আরও 126 রান করতে হবে।
দ্বিতীয় দিনের শেষ ওভারে দিল্লির খাতিজ শর্মা ও সিমরজিৎ সিংকে পরপর দু'বলে ফিরিয়ে ফের হ্যাটট্রিকের সামনে বাংলার বাঁহাতি স্পিনার শাহবাজ আহমেদ । হায়দরাবাদের পরে দিল্লির বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের প্রথম ডেলিভারিতে উইকেট তুলে নিতে পারলে পরপর দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিকের বিরল কৃতিত্ব অর্জন করবেন ।
বাংলার পেসারদের নিঁখুত বোলিংয়ে অধিনায়ক ধ্রুব সোরের 65,ওপেনার হিতেন দালালের 40 এবং নীতিশ রানার 24 রানের ইনিংস ডালপালা মেলতে পারল না। অভিষেককারী পেসার নীলকণ্ঠ দাস দিল্লির দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে ভাঙনের কাজ শুরু করেছিলেন । তার ভালো বোলিংয়ের ব্যাটনটা নিঃশব্দে বইলেন মুকেশ কুমার । প্রথমে নীতিশ রানা এবং পরে ধ্রুব সোরেকে অফস্ট্যাম্পের বাইরে প্রলোভিত করে আউট করলেন এবং তাতেই প্রতিপক্ষের ব্যাটিংয়ের কোমর ভেঙে যায় । জন্টি সিধু 32 রানে ক্রিজে রয়েছেন । কিন্তু তৃতীয় দিনের শুরুতে বাংলার আগ্রাসী বোলারদের সামলাতে তিনি কতটা সফল হবেন তার উপর সব নির্ভর করছে ।
বাংলার কোচ অরুণ লাল দলের বোলিং ও ফিল্ডিং দেখে খুশি । শাহবাজের বলে কাজি সইফি যেভাবে ক্যাচটি তালুবন্দি করেছেন তা দিনের সেরা ছবি এবং তার জন্যে কোনও বিশেষণই যথেষ্ট নয় । তবে ছেলেদের তিনি আত্মতুষ্ট হতে নিষেধ করেছেন ।