দেশভাগের যন্ত্রণা আজও বয়ে নিয়ে যাচ্ছে দুই বাংলার মানুষ। সেই ঘটনার উপর ভিত্তি করেই একটি নাটক লিখেছেন নাট্য পরিচালক প্রবীর মণ্ডল। নাটকটির নাম 'হিন্দুচোর'। আজ সন্ধ্যে 6:30টায় সুধাসদনে নাটকটি মঞ্চে উপস্থাপনা করছেন সরস্বতী কলামন্দির নাট্যদল। বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দু সংখ্যালঘুদের নিত্যদিনের লড়াইকে মঞ্চে তুলে ধরেছে এই নাটক। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু মানুষের ক্ষোভপ্রকাশ পাওয়ায় নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছিল গতবছর।
বিতর্ক এতটাই হয় যে বাধ্য হয় নাটকটি বন্ধ করতে হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। একদল অভিযোগ তুলেছিল যে ছবিটি হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করতে পারে। এমনকী, নাটকটির একটি পোস্টারও সমালোচিত হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। 2018 সালের 17 জুন সুমন্ত্র মাইতি কলকাতা পুলিশের কাছে FIR করে হিন্দুচোরের বিরুদ্ধে। অভিযোগ এখটাই, নাটকটি বিপুলভাবে তাঁর হিন্দুভাবাবেগকে আঘাত করেছে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে 18 জুন কলকাতা পুলিশ নাটকের সমস্ত পোস্টার সরিয়ে ফেলে। এরপর নাট্য পরিচালক প্রবীর মন্ডলকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয় শিশির মঞ্চ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে তার নাটক 'হিন্দু চোর'। যেটি মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল 25 শে জুন 2018। আজ প্রায় 9 মাস পর ফের নাটকটি মঞ্চস্থ হতে চলেছে।
প্রবীর বলেন, "নাটকে এমন কোনও বিষয়বস্তু নেই, যা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির লঙ্ঘন করতে পারে। বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দু সংখ্যালঘুদের দৈনন্দিন টানাপোড়েনের কথা বলবে এই নাটক। তিনি সাদরে সকলকে এই নাটক দেখতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
সেই সঙ্গে একটি আশঙ্কার কথাও বলেছেন প্রবীরবাবু, "ফেসবুকে একটি পেজে লেখা হয়েছে, আগামীকাল আমার নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার আগে তাঁরা বিক্ষোভ করতে পারেন। যে বা যাঁরা সেই বিক্ষোভ করতে ইচ্ছুক, আমি তাঁদের সকলকে একবার হলে নাটকটি দেখতে অনুরোধ করছি। নাটক দেখার পর যদি তাঁরা মনে করেন আমি ভুল, সেই ভুল আমি স্বীকার করে নেব।"
নাটকের মূল চরিত্র গিরেন সে একজন হিন্দুচোর। বাড়ি বাংলাদেশের সাতখিরা জেলায়। ওই জেলায় একমাত্র গিরানই একজন হিন্দু চোর। এ এমন একটি চরিত্র যাকে এলাকার মুসলমানরাও সম্মান করেন। কেন সম্মান করেন, তা অবশ্য নাটকে বলা আছে।
যেহেতু এটি একটি একক নাটক এবং একজনই অভিনেতা। তাই তিনিই অভিনয় করবেন চারটি চরিত্রে। সেই চরিত্রগুলি গিরেন চোর, হাজি সাহেব, সালমার আম্মা এবং ইমাম। কেমনভাবে সেই নাটক মঞ্চস্থ হবে, তাতেও রয়েছে চমক। সংলাপ বিনিময়ের সময় 20 থেকে 30 সেকেন্ডের জন্য মঞ্চ অন্ধকার হয়ে যাবে এবং সেই 20-30 সেকেন্ডের মধ্যে পোশাক পরিবর্তন করে ফেলবেন অভিনেতা প্রবীর।