কলকাতা : 10 জুন থেকে শুরু হচ্ছে সিনেমা ও ওয়েব সিরিজ়ের শুটিং । সেটে 35জনকে নিয়ে, 10 বছরের নিচের বাচ্চাদের বাদ দিয়ে, সরকার প্রণীত স্বাস্থ্য-সুরক্ষা বিধিনিষেধ মেনে করতে হবে শুটিং । সিনিয়াররা আসবেন নিজেদের দায়িত্বে । এই গোটা বিষয়টি নিয়ে কী বলছেন পরিচালকরা ? ETV ভারত সিতারা কথা বলল তাঁদের সঙ্গে ।
'চাঁদের পাহাড়', 'মেঘে ঢাকা তারা'র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় শুটিং শুরু করার বিষয়েকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন । বলেছেন, "শুটিং শুরু করতেই হবে । যতই আমাদের বাধাবিপত্তি আসুক না কেন, অনেক মানুষের জীবিকার সঙ্গে জড়িত বিষয়টা । সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে । যা যা নিয়মাবলী বলা হয়েছে, সেগুলোও মানতে হবে । তাতে হয়তো কিছুটা ক্রিয়েটিভ লিমিটেশন তৈরি হবে । কিন্তু এখন সেই দিকে তাকিয়ে সবকিছু আটকে রাখলে চলবে না । শুটিং করাটা আবশ্যক ।"
অন্যদিকে 'ভূতের ভবিষ্যৎ', 'আশ্চর্য প্রদীপ', 'বরুণবাবুর বন্ধু'র পরিচালক অনীক দত্ত বললেন, "আমি তাঁদেরকে গুডলাক জানাতে চাই, যাঁরা শুটিং শুরু করছেন । এই জিনিসটা অর্থকড়ির দিক থেকে খুবই প্রয়োজন । কিন্তু ফিচার ছবি এতকিছু নিয়মের মধ্যে করা সম্ভব কিনা জানি না । একটা মজার বিষয় রয়েছে, পোস্ট কোরোনা পৃথিবীতে মানুষ এমনিতেই দূরত্ব বজায় রেখে চলছে । সেটা নিয়ে যদি কেউ কিছু করে খুব ইন্টারেস্টিং হবে ব্যাপারটা ।"
জুনিয়র টেকনিশিয়ানদের কথা ভেবে বেশ খুশি 'রং বেরঙের কড়ি', 'আহারে' ছবির পরিচালক রঞ্জন ঘোষ । বললেন, "আমার ভালো লাগছে যে শুটিং শুরু হচ্ছে । আমার টেকনিশিয়ান ভাই-বোনরা, যাঁরা এতদিন ধরে কাজ পাচ্ছিলেন না, তাঁরা যে আবার একটা কর্মসংস্থানের মধ্যে ঢুকতে পারছেন, এটা আমার সবচেয়ে ভালো লাগছে ।" তবে সিনেমার ক্ষেত্রে সব নিয়মাবলী পালনের ব্যাপারে তিনি বললেন, "সিরিয়ালের ব্যাপারটা আমি জানি না তবে সিনেমার ক্ষেত্রে ওই ভাবে দূরে দূরে দাঁড়িয়ে কাজ করা তো হয় না । সিনেমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা খুব আলাদা । ওয়েব সিরিজ়ের নিয়মও আলাদা । এটা থিয়েটারও নয়, যে লোকজন দূরে দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলবে । পরিস্থিতি আর একটু স্বাভাবিক হোক, তারপর হয়তো সিনেমার বিষয়ে ব্যাপারটা ঠিক থাকবে । তবে এখন যে শুটিং শুরু হচ্ছে, বিষয়টাকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি ।"শিলাদিত্য মৌলিক যেসব ছবি পরিচালনা করেছেন, 'সোয়েটার', 'হৃদপিণ্ড', অধিকাংশই আউটডোর । তিনি খুবই দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন । শিলাদিত্য আমাদের বললেন, "যে যে নিয়ম বলা হয়েছে, সেভাবে তো সিনেমার শুটিং হয় না । সিনেমার ক্ষেত্রে খুবই অসুবিধা হবে। শুধু ইন্টিমেসি বা অ্যাকশন সিন তো নয় । ধরুন কোন পার্টি সিন, দেখাবো কীভাবে ? তারপর ভিড়ের সিন, দেখাবো কীভাবে ? এত কম্প্রোমাইজ়ের মধ্যে তো কাজ করা খুব মুশকিল । তার উপর আবার আউটডোর আছে । কীভাবে হবে ? সেটার অনুমতি তো সরকার এখনও দেয়নি । ঘরের মধ্যে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে, সেটা কতটা ইন্টারেস্টিং করা যাবে, আমি জানি না । এসবে ক'জন প্রযোজক রাজি হবেন আমি জানি না । হলে লোক যাবে না, রিকভারিও হবে না । আমি ভীষনই দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে রয়েছি ।"
শুটিং শুরুর সিদ্ধান্ত সবাই খুশি হলেও, কীভাবে সব মেনে শুটিং চালিয়ে যাওয়া যাবে সেই নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে । রুজি রোজগারের কারণে প্রাণের সংশয় হয়ে যাবে না তো ? দ্বিধায় টলিপাড়া ।