কলকাতা : লামা চিঠিতে লিখেছেন, "তখন খুব ছোটো,আমি আর জন দুজনে কুপি ধরতাম,বাবা ভুসো কালী দিয়ে দেওয়ালে পদ্মফুল আঁকতো। আর এস এস করেছি। বিজেপিতে যোগদান করার জন্য কিছু মানুষের ক্রমাগত আক্রমণে বড় ব্যাথিত হয়েছি। বিশেষ করে তারা অনেকেই আমার পরিচিত। আমি অভিনেতা,অভিনয় আমার পেশা। সেই পেশায় দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ঠার সাথে কাজ করে চলেছি,আগামীতেও করব। প্রতিটি পেশার মানুষেরই রাজনৈতিক ভাবে সচেতন হওয়া উচিত বলেই মনে করি। বিশেষ করে অভিনয়ের ক্ষেত্রে তো রাজনীতি সচেতন হওয়া কর্তব্য। সেখানে কে কোন রাজনীতিতে বিশ্বাস করবে সে প্রশ্ন ভিন্ন। ভিন্ন ভিন্ন মতধারার মানুষ থাকবেন সেখানে,মতভেদ থাকবে,তর্ক থাকবে কিন্তু শত্রুতা থাকবে না। এটাই তো গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি হওয়া উচিত। যখন কিছু শহুরে সিউডো সেকুলার চোখে ঠুলি লাগিয়ে নাকঘুরিয়ে পরিকল্পিত ভাবে সমাজে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে বামপন্থার ঠিকা নেয় এবং আমার বিজেপিতে যোগদান করাকে নিন্দা করে, তখন করুণা হয়। অথবা অভিনয়ের অ টুকুও রপ্ত হয়নি এরকম অভিনেতা অভিনেত্রীরা যখন তৃণমূলের মঞ্চে সামনের সারিতে বসে থাকে,আর বাংলা সিনেমার জগতে একটি অবৈধ রাজনৈতিক জোট তৈরি করে যোগ্য অভিনেতা বা কলাকুশলীদের অপমান করে তখন কোথায় থাকে প্রতিবাদ। শিক্ষা ক্ষেত্রে,স্বাস্থ্য় ক্ষেত্রে সর্বত্র দুর্নীতির প্র্যাক্টিস করে চলেছে তৃণমুল। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে রোজ হনন করা হচ্ছে,মানুষ খুন হচ্ছে, তৃণমুল না করলে মিথ্যে কেস দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে,যতরকমের দুর্নীতি অভিধানে আছে তার সবকটিই প্রয়োগ করছে তৃণমুল। তখন শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ হিসেবে ঘরে বসে থাকতে পারিনা। অনেকে আমায় আক্রমণ করছে কদর্য ভাষায়, তাদের ভালো হোক। কিন্তু বন্ধু কেউ বলে দিতে পারবেন জীবনে কোনোদিন কোনো রাজনৈতিক দল থেকে সুবিধে নিয়েছি?? বরং ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দিকে তাকান,দেখবেন কত অদক্ষ অভিনেতা গলায় উত্তরীয় নিয়ে দিদির মঞ্চ আলোকিত করছেন। তাদের হিসেব গুলো দেব নাকি??? প্রশ্ন করলে তাদের করুন। ধান্দাবাজির ইতিহাস তৃণমুলপন্থীরা যতটা লিখেছেন তা বোধহয় পৃথিবীর সব রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে। অতএব আমায় যারা আক্রমণ করছেন তাদের ভালো হোক এই কামনাই করি। সারা ভারতের স্লোগান সবকা সাথ সবকা বিকাশ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও বলবৎ করতে চাই, তাই বিজেপিতে যোগদান করেছি। যারা বিরোধিতা করছেন তারাও আসুন সবাই মিলে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে দুর্নীতি মুক্ত করি। শুধু আমার রাজনৈতিক ধর্ম আমায় পালন করতে দিন আর আপনারটা আপনি করুন,কু ভাষা প্রয়োগ করেবনা প্লিজ়।"
ETV ভারত সিতারার পক্ষ থেকে লামা হালদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "রাজনৈতিক সচেতনতা থাকতেই পারে। কোনও একটি দলে যোগদান করতেই পারি আমি। সেটা নিয়ে কত লোকে কত কথা বলছে। আমাকে ধান্দাবাজ বলছে। এখানে ধান্দাবাজির কী আছে? আমি তো কোনদিনও সরকারের থেকে কোনও সাহায্য নিইনি। আমি তো ছোটোবেলা থেকেই RSS করেছি। আর শাসকগোষ্ঠীর কোনও অনুষ্ঠানে যাওয়া মানে এটা নয়, যে আমি শাসকগোষ্ঠীর সমর্থনে আছি। অনেক জায়গায় প্রেশারে যেতে হয়েছে। সবাই বলছে আমি ধান্দাবাজির জন্য গিয়েছি। শাসকগোষ্ঠীর কাছ থেকে তো এক পয়সাও নিইনি। এখন সারা রাজ্যে যে ধরনের অসহিষ্ণুতা চলছে, কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন। অনেককে জোর করে 'জয় শ্রীরাম' বলানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। কিন্তু অনেক জায়গায় 'জয় শ্রীরাম' বলছে বলেও তো লোক মারা যাচ্ছে। মমতা ব্যানার্জি নিজে হুমকি দিয়েছেন 'জয় শ্রীরাম' বলার জন্য। তিনি তো ভগবান বিষ্ণুর অবতার, তাঁর নাম আমি নেব না! এটা কি কোনও অন্যায় নাকি? এখানে অনেক বন্ধুও আছে আমার, কারো সম্পর্কে কোনও কু কথা বলছি না। সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে যে একটা উত্যক্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, আমাদের সকলের উচিত এক হওয়া। একসঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। দুর্নীতিমুক্ত রাজ্য তৈরি করা।"