কলকাতা, 17 জানুয়ারি: আজ 17 জানুয়ারি । 2014 সালের এই দিনে ভক্তদের কাঁদিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হন মহানায়িকা । অনেক বছর নিজেকে গৃহবন্দি রেখেছিলেন সুচিত্রা সেন । তাঁর খবর নানা সময়ে নানা পত্রপত্রিকার দৌলতে জেনেছেন সাধারণ মানুষ । তাই সুচিত্রা সেনের বার্ধক্য দেখার সুযোগ হয়নি কারওরই । আজ তাঁর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে (Suchitra Sen's death anniversary) তাঁকে ঘিরে স্বল্প স্মৃতি আওড়ালেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল ।
অভিনেত্রী খুব কাছ থেকে দেখেছেন মহানায়িকাকে । কিন্তু তাঁর সঙ্গে তেমন আত্মিক সম্পর্ক ছিল না তাঁর । কাজও করেননি । একবার তাঁর সঙ্গে অভিনয় করার কথা হলেও পরে তা বাস্তবায়িত হয়নি । রত্না ঘোষাল (Ratna Ghoshal remembers Suchitra Sen) সে কথা নিজেই জানালেন ইটিভি ভারতকে । তিনি বলেন, "কাজের সূত্রে স্টুডিয়োতে দেখা হত প্রায়ই । কিন্তু সে ভাবে গল্প, আড্ডা হত না । যেমনটা হত সাবুদি, মাধু মা, বেনুদির সঙ্গে । আসলে মহানায়িকা সকলের সঙ্গে মিশতেন না । ইন্ডাস্ট্রির খুব কম সংখ্যক মানুষের সঙ্গে মিশতেন তিনি । সকলের সঙ্গে সে ভাবে কথাও বলতেন না । বেশ একটা দূরত্ব বজায় রাখতেন অধিকাংশ মানুষের সঙ্গে । তাঁদের মধ্যে সম্ভবত আমিও একজন । তবে দেখা হলে ভাল আছো? কথাটুকু বলতেও ভুলতেন না কখনও । অসম্ভব ভাল মানুষ ছিলেন । কতটা ভাল অভিনেত্রী ছিলেন, তা তো নতুন করে বলার নয় কিংবা বলার প্রশ্নই ওঠে না । কখনও কোনও আড্ডা, গল্পে মেতে উঠতে দেখিনি ওঁকে ।"
আরও পড়ুন: সুচিত্রা সেন বলেছিলেন, তাঁর মৃত্যুর পর যা করার আমি করব : মমতা
এই প্রসঙ্গে একবার এক বর্ষীয়ান সাংবাদিককে কিংবদন্তী অভিনেত্রী কানন দেবী বলেছিলেন, "শুটিংয়ের আগে পরে কোনও আড্ডাতেই সুচিত্রা যোগ দিতেন না । একমাত্র উত্তমকুমারের সঙ্গে দেখা হলেই হয়ত একটু রসিকতা করতেন । পুরো টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিতে একমাত্র উত্তমকুমারই প্রকাশ্যে সুচিত্রাকে ডাকতেন রমা বলে । এমন ব্যক্তিত্বের জোরেই সুচিত্রা শাসন করতে পেরেছিলেন ইন্ডাস্ট্রিকে । আমাদের সময়ে টালিগঞ্জের বাংলা ছবির দুনিয়ায় নায়িকাদের কোনও মর্যাদা ছিল না । পুরো ইন্ডাস্ট্রিই ছিল পুরুষশাসিত । বলা ভাল, নায়ক ডোমিনেটেড ৷ সেখান থেকে প্রথম টালিগঞ্জের নারীদের বের করে আনেন সুচিত্রা সেনই । বলা বাহুল্য, বাংলা সিনেমার ইতিহাসে সুচিত্রা সেনই প্রথম নায়িকা যিনি টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিকে শাসন করেছেন ৷ তাঁর ভয়ে তটস্থ থাকতেন প্রযোজক, পরিচালক সহ কলাকুশলীরা । এর জন্য সুচিত্রা সেনকে কোনও আলাদা সংগ্রাম করতে হয়নি ৷ অমোঘ ব্যক্তিত্বই ছিল একমাত্র হাতিয়ার ।"
মহানায়িকার অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ।