কলকাতার রাস্তায় হাতে টানা রিক্সা একটা ঐতিহ্যের পর্যায় পৌঁছে গেছে। তেমনই এক রিক্সাওয়ালার গল্প বলবে রামকমলের 'রিক্সাওয়ালা' । ছবিটির চিত্রনাট্য লিখতে রিকশাওয়ালাদের সংস্পর্শে আসতে হয়েছে গার্গীকে। কাছ থেকে উপলব্ধি করতে হয়েছে তাঁদের। গার্গী শুধু একজন চিত্রনাট্যকার নন। তিনি একজন পরিচালকও। বেশ কয়েকটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি পরিচালনা করেছেন এই তরুণী। জেনে নিন তাঁর কথা।
ETV Bharat : রিক্সাওয়ালা ছবির চিত্রনাট্য লেখার কাজ কীভাবে এল?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : একদিন রামদার (রামকমল) ফোন আসে। তিনি তাঁর গল্প আমার সঙ্গে শেয়ার করেন।
ETV Bharat : রামকমল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতায় কেমন ছিল?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : অনেকটাই আলাদা অভিজ্ঞতা। যদিও শুট শুরু হওয়ার মুখে। আমার নিজস্ব কাজ থাকলেও দাদার সঙ্গে শুটের ক'টা দিন আমি উপস্থিত থাকব। সেই অভিজ্ঞতা আমার কাছে আরও গাঢ় হবে।
ETV Bharat : কীভাবে তৈরি হল চিত্রনাট্য?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : অনেক ভাবতে হয়েছিল। বারবার ফোন করে জিজ্ঞাসা করেছি রামদাকে। কোন দৃশ্যের পর কোন দৃশ্য দেওয়া হবে, এই নিয়েও আমি তাঁর সঙ্গে ফোনে বা মেসেজের মাধ্যমে কথা বলে গেছি।
ETV Bharat : কীরকম হোমওয়ার্ক করতে হয়েছিল?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : আমার কাছে হোমওয়ার্ক ছিল না। ছিল একটা বিশ্বাস, একটা দায়িত্ব।
ETV Bharat : ছবির জগতে কীভাবে আসা?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : থিয়েটার থেকে। ১০ বছর বয়স যখন, তখন থেকেই নাটক শুরু আমার জীবনে।
ETV Bharat : এর আগে কী ধরনের কাজ করেছিলেন?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : শর্ট ফিল্ম, টেলিফিল্ম এবং ভিডিও অ্যালবাম তৈরি করেছি।
ETV Bharat : নিজের আগের কাজগুলো সম্পর্কে একটু বলুন..
গার্গী মুখোপাধ্যায় : ২০১৫ সালে আমার প্রথম কাজ শর্ট ফিল্ম দিয়ে শুরু, 'ব্লাড কানেকশন'। তারপর অ্যাড ফিল্ম, ভিডিও অ্যালবাম। টেলিফিল্ম 'সপ্তসুর'-এর পরিচালনা করেছি। 'ত্রিনয়নী' আমার লেখা শর্ট ফিল্ম। 'শেষ ঠিকানা' শর্ট ফিল্মটি সেরা গল্পের জন্য পুরস্কৃত হয়েছিল। 'তৃষা', 'কমলা' শর্ট ফিল্মগুলো পরিচালনা করেছি। এরপর আমার নিজস্ব কাজের মধ্যে দিয়ে প্রযোজনা সংস্থার নাম দিলাম 'vfriend এন্টারটেনমেন্ট'।
ETV Bharat : ছবি পরিচালনা করার ইচ্ছে কেন হল?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : ইচ্ছে বললে ভুল, আমার নেশা বলতে পারেন। ক্যামেরা ছাড়া কিছু বুঝি না। ডিরেকশন ফিল্ম দেখতে দেখতে উৎসাহ তৈরি হয়। যখন ঋত্বিক ঘটকের ছবি দেখতাম ছোটবেলায়, যেমন মেঘে ঢাকা তারা...
ETV Bharat : আপনার অনুপ্রেরণা কে?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : আমায় প্রেরণ দিয়েছেন কয়েকজন মানুষ। যেমন সমহিতা ঘটক, ঋত্বিক ঘটকের মেয়ে। তিনিই আমার পথপ্রদর্শক। আমার স্কুলের একজন ম্যাম ছিলেন মহুয়া দত্ত। আমার ঠাকুরদা (দাদু) এবং আমার দিদা।
ETV Bharat : ছবি তৈরি করা, চিত্রনাট্য লেখা - এগুলো করতে গেলে নিজেকে কীভাবে তৈরি করতে হয়?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : গল্প নিয়ে লেখা শুরু করার আগে আমি রীতিমতো ভাবতে থাকি বা বই ঘাটতে থাকি। অনেক সময় এরকম হয়েছে, 'রিক্সাওয়ালা' নিয়ে লিখতে গিয়ে আমায় দিনের পর দিন সেই পরিবেশে যাতায়াত করতে হয়েছে। যেমন ধরুন শোভাবাজার...
ETV Bharat : আজ থেকে পাঁচ-দশ বছর পরে নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চান?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : সবার সাপোর্ট, সবার ভালোবাসা নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। ব্যাস! এর চেয়ে বেশি কিছু চাই না।
ETV Bharat : আপনি তো ইন্ডাস্ট্রিতে একেবারে নতুন। আপনাকে কতটা গ্রহণ করেছে ইন্ডাস্ট্রি?
গার্গী মুখোপাধ্যায় : শুরু এখনও হয়নি। সবে তো প্রথম সিঁড়িতে পা দিয়েছি। শেখার অনেক বাকি আছে। গ্রহণীয় তখনই হব, যখন আমি কিছু কাজকে দর্শকের কাছে তুলে ধরে তাঁদের মনে জায়গা করতে পারব। তারপর না হয় গ্রহণীয় হয়ে উঠব ইন্ডাস্ট্রিতে...