কলকাতা : "কোরোনা ভাইরাসকে চাইলে আমরাই হারাতে পারি। আবার আমরাই চাইলে তার কাছে হারতেও পারি । এই হার এবং জিত আমাদের হাতে ।" সম্প্রতি ETV ভারতের সঙ্গে শেয়ার করা একটি ভিডিয়োতে একথা বলেন পরিচালক ও অভিনেতা তথাগত মুখার্জি ।
তথাগত বলেন, "কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে কী কী করা প্রয়োজন তা আগেই আপনাদের জানিয়েছেন অনেকেই । আমার বিশ্বাস আপনারা সবাই এগুলো মেনে চলছেন ।"
তিনি আরও বলেন, "আমার এও বিশ্বাস, আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যাঁরা এগুলো মেনে চলছেন না । তাঁরা এই সহজ বিষয়টা বুঝতে পারছেন না, যে এই কলকাতা, এই পশ্চিমবঙ্গ এমন একটা সময় দেখছে, পৃথিবী এমন একটা সময় দেখছে, বিগত দশকগুলোতেও যা কেউ দেখেনি । অন্তত আমাদের প্রজন্ম তো দেখেইনি । কলকাতা, রাজ্য, গোটা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় অনেকেই খাবার পাচ্ছে না । তাদের কাছে এই সময়টা দুর্ভিক্ষের নামান্তর । আপনারা যাঁরা এই মুহূর্তে চায়ের দোকানে আড্ডা মারছেন, কিংবা মাঠে ক্রিকেট খেলছেন তাঁরা বিষয়টা বুঝতে পারছেন না । কারণ, সরকার যে পলিসিতে আছে, তাতে আপনার বাড়ি পর্যন্ত খাবার পৌঁছে যাচ্ছে । কিন্তু, রাস্তার মানুষের জন্য এখন দুর্ভিক্ষ চলছে । আমি জানি না পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রামে এই মুহূর্তে খাবারের কী অবস্থা । আমাদের শহরের রাস্তার খুব খারাপ অবস্থা । ফুটপাথবাসীরা অনেকেই খেতে পারছেন না । না খেতে পেয়ে মরছে পশুরাও । সুতরাং, এই পরিস্থিতি যতদিন চলবে, এর পরিধি কিন্তু বাড়বে । আর এই পরিধি বাড়ার জন্য দায়ি থাকবেন আপনারা । যাঁরা কোরোনা ভাইরাসকে আটকানোর জন্য কোনওভাবেই সচেষ্ট নন । এখন সচেতনতার প্রয়োজন ।"
এরপর সবার উদ্দেশে তিনি বলেন, "এখন আমাদের একটা সীমান্তে দাঁড়ানো সৈন্যের মতো লড়াই করতে হবে । বাড়িটা আমাদের বাঙ্কার, সেখান থেকে আমাদের লড়তে হচ্ছে । প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যখন যাচ্ছি, মাস্ক পরছি । একদমই ভালো লাগছে না বুঝি, কিন্তু তাও সেটা পরছি । কাজটা সেরে যখন বাড়িতে ঢুকছি, তখন আগে পরা জামাকাপড় খুলে ভালোভাবে ধুয়ে তারপর অন্য ঘরে যাচ্ছি । এইগুলো কারও ভালো লাগার কথা নয় । কিন্তু এগুলোই তো যুদ্ধ । যদি একজনের হয় তাহলে সেখান থেকে 10 জনের হচ্ছে । এবং লকডাউন মেয়াদ বাড়ছে । আমি জানি না এটা কতদিন চলবে । কিন্তু যতদিন চলবে, ততদিন কিন্তু এই মানুষের, প্রাণীদের না খেতে পেয়ে মরা বাড়বে । আপনি চাইলে বাড়ির সামনে থাকা কুকুর-বিড়ালকে সামান্য খেতে দিতে পারেন । তারা কিন্তু এই মুহূর্তে না খেয়ে রয়েছে । প্রয়োজনে আপনাদের আশপাশের মানুষকে সচেতন করতে হবে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে । যেটা হয়তো অনেকেই করছেন না । আমার মনে হয় এই মুহূর্তে আমাদের সচেতন নাগরিক হিসেবে, সচেতন মানুষ হিসেবে, সচেতনতা বাড়ানোর দায়িত্ব নেওয়া প্রয়োজন। তাই জন্যেই আপনাদের এতগুলো কথা বললাম ।"