কলকাতা : একে লকডাউনে মানুষের মনে হতাশা বাড়ছে । এর মধ্যেই আবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আমফান । এই পরিস্থিতিতে মনকে আরও শক্ত করে তুলতে হবে বলে মনে করেন সায়নী, অনুরাধা ও অনিন্দিতা । এমনকী ETV ভারত সিতারার সঙ্গে ঝড়-বৃষ্টিতে আটকে পড়ার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করে নিলেন তাঁরা ।
অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ বলেন, "যখন আয়েলা এসেছিল, তখন ছোটো ছিলাম । বাড়ির সকলে মিলে গেছিলাম ওয়াটার পার্কে, অ্যাকোয়াটিকায় । যখন আয়লা আসে তখন জলের মধ্যেই ছিলাম । একটা ওয়াটার পার্কে আয়লা এলে যা হতে পারে, আমাদের সেটাই অভিজ্ঞতা হয়েছিল । ফেরার সময় গাড়ির উপরে একটা গাছের গুঁড়ি এসে পড়েছিল । এগুলো আমার স্বচক্ষে দেখা ঘটনা । তার কয়েক বছর পরে আরেকটা সাইক্লোন এসেছিল, সেটা কালবৈশাখীর বাবা ছিল । সেদিন কলকাতা শহরে 47টা গাছ পড়েছিল । আমি তখন দক্ষিণাপনে ছিলাম । চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম একটা বড় গাছ পড়বে পড়বে করছে । কিন্তু পড়ছে না । আমি আর আমার ড্রাইভার একে অপরকে সাহস জুগিয়েছিলাম সেই সময় । এটা আমাদের পাড় করতেই হবে, নাহলে হয়তো মরেই যাব । ওই সময় গাছের নিচ দিয়ে আমরা যেভাবে পাড় হয়েছিলাম, সেটা একটা অদ্ভুত অভিজ্ঞতা ছিল আমাদের কাছে । তবে কোরোনার মধ্যে আমফান একটু বাড়াবাড়ি । প্রকৃতি আমাদের এমনিতেই শাস্তি দিচ্ছিলেন । এবার সেই শাস্তিটা একটু বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করেছে । আমি একটাই কথা বলব, এই সময়টাও কেটে যাবে । ভালো বা খারাপ কোনও সময়ই বেশিক্ষণ থাকে না । তাই এটাও কেটে যাবে । আগামীদিন যাতে ভালোভাবে কাটতে পারে, সেজন্য এখন থেকেই সকলকে অনেক দায়িত্বশীল হতে হবে, কেবল নিজের বা নিজের পরিবারের প্রতি নয়, গোটা পৃথিবীর প্রতি ।"
অভিনেত্রী অনুরাধা মুখোপাধ্যায় আমাদের সঙ্গে তাঁর মুম্বইয়ের একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন । বলেন, "আমি সাইক্লোনে কখনও আটকে যায়নি । তবে মুম্বইতে ছিলাম যখন একটা খুব ভয়ের অভিজ্ঞতা হয়েছিল । মুম্বইয়ের ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুব একটা ভালো না। বর্ষাকালে খুব জল জমে । আমি গ্রাউন্ড ফ্লোরে থাকতাম । আমি চোখের সামনে দেখলাম উলটোদিকের বিল্ডিংয়ের গাড়িগুলো জলের তলায় চলে যাচ্ছে । আমার বাড়ির ব্যাকইয়ার্ডে ঢুকে গেছিল । ঘরের মধ্যেও ঢুকছিল । কী বৃষ্টি ! খুব ভয়ের অভিজ্ঞতা হয়েছিল । সবাই বলে মুম্বইয়ের বৃষ্টি খুব সুন্দর । আমি বলব, যতক্ষণ না সেই বৃষ্টির জল ঘরের মধ্যে ঢুকে আসছে, ততক্ষণ ভালো ।"
অন্যদিকে অভিনেত্রী অনিন্দিতা বোস বলেন, "আমি সকাল থেকেই সব দরজা, জানালা বন্ধ করে আছি । এটা আমাদের জন্যে খুব খারাপ একটা সময় । আমার আশা একটাই, এই কঠিন সময় মানুষ যেন নিজেদের মাথা ঠান্ডা রাখে । খুব বেশি প্যানিক না করে । তাহলেই এই প্যানডেমিক ও সাইক্লোন থেকে বেরোতে পারবে । প্যানিক করলে মানুষের মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয় ।"