কলকাতা : অপমানিত বোধ করেছেন কবীর সুমন। তাই 'হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী'-র সংগীতের কাজ শেষ করেই সরে যান তিনি। সেই প্রসঙ্গে ETV Bharat-কে কবীর সুমন একটি সাক্ষাৎকারও দিয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গেই আজ ফেসবুকে কবীর সুমনকে নিয়ে পোস্ট শেয়ার করলেন পরিচালক অনিকেত চ্যাটার্জি।
ঘটনার সূত্রপাত একটি কোট-আনকোট কথাকে নিয়ে। ৯ ফেব্রুয়ারি 'হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী'-র ঘোষণার দিন উপস্থিত ছিলেন ছবির কলাকুশলীরা। সেই সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন প্রযোজক দেব ও কবীর সুমনও। সাংবাদিক বৈঠক কথার মাঝেই দেব বলেন, "কবীর সুমনকে হ্যান্ডেল করা কঠিন।" এই কথাতেই কিছুটা খারাপ লাগা তৈরি হয় কবীর সুমনের। তাই তিনি সাক্ষাৎকারে বলেন, "আমাকে মঞ্চে তুলে দেব বলেছিল, কবীর সুমনকে হ্যান্ডেল করা নাকি খুব কঠিন ব্যাপার। আমার খুব অবাক লেগেছিল কথাটা শুনে। এত বছর কাজ করলাম। আমাকে হ্যান্ডেল করা কঠিন! এই কথাটা কারোর মুখে শুনলাম না। অথচ দেব, যে কিনা আমাকে প্রায় চেনেই না, সে এমন ধারা কথা বলে দিল মঞ্চে এতগুলো মিডিয়ার সামনে। মঞ্চ থেকে নামার পর, মিডিয়ার বন্ধুরা এসে আমাকে বারবার একই প্রশ্ন করতে থাকলেন, আমাকে হ্যান্ডেল করা কেন এত কঠিন।"
এরপরই কবীর সুমন ফেসবুক পোস্টে নিজের বকেয়া টাকা মেটানোর কথা বলেন দেব ও দেব এন্টারটেইনমেন্ট ভেঞ্চারসকে। আজ সেই প্রসঙ্গেই একটি খোলা চিঠি লেখেন অনিকেত চ্য়াটার্জি। তিনি প্রথমেই জানিয়েছেন যে তিনি গোটা বিষয়টির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। সেই সঙ্গে কবীর সুমনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গভীরতাটিও জানিয়েছেন। পোস্টের শুরুতে কবীর সুমনের খারাপ লাগার বিষয়টিকেও ব্যাখ্যা করেছেন অনিকেত।
ফেসবুকে তিনটে স্ক্রিনশট দিয়ে অনিকেত চ্যাটার্জি লেখেন, "আমরা ‘হবুচন্দ্র রাজা গবু চন্দ্র মন্ত্রী’ সাংবাদিক বৈঠকে কবীরদাকে ডেকেছিলাম, তার আগেই পত্রিকাতে বেরিয়ে গেছে যে উনি এ ছবির সংগীত পরিচালনা করছেন শুধু নয়, একটা চরিত্রে অভিনয়ও করছেন। এসব বলেছিলাম কারণ উনি স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। প্রযোজক দেবের কাছে যখন ওনার নাম করি তখন দেব আমায় বলেছিলেন, শুনেছি উনি অত্যন্ত ‘সেনসেটিভ মানুষ’, হ্যান্ডেল করতে পারবে তো? বলতে চেয়েছিলেন যেটা সেটা পরিস্কার এরকম যে ওনার মাপের একজন শিল্পীকে নিয়ে কাজটা করতে পারব তো? এরকম অনেক হয়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করার সময় এ চিন্তা আমার মাথায় ছিল। কোনওদিন অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে যদি কাজ করি তাহলেও এ কথা মাথায় আসবে, ‘ওনাকে হ্যান্ডল করতে পারব তো?"
- " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="">
তিনি আরও বলেন, "‘শঙ্কর মুদি’-র সাংবাদিক বৈঠকের থেকে বেরিয়ে আসার পর যখন তন্ময় ঘোষ জানালেন যে উনি অপমানিত বোধ করেছেন, সেদিনই, বুধবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি। লিখলাম, ক্ষমা চাইলাম। কবীরদা হয়তো তখনও ভারাক্রান্ত, এ যুগের অন্যতম সুরস্রষ্টাকে এটুকু তো মানায়। তিনি যদি মনে করেন তাঁকে অপমান করা হয়েছে তাহলে তাঁর রাগ ক্রোধ তো জায়জ। তিনি লিখলেন আর নয়, আমি এ কাজ করব না, গান হয়ে গেছে, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজ়িক আর করব না। টাকাও চাই না। আমি আবার লিখলাম ক্ষমা চাইছি, ক্ষমা। এরপর আর তাঁর কোনও লেখা নেই, আমরা শুটিংয়ে চলে গেলাম। সেখান থেকে যখন গানের শুটিং হচ্ছিল, তার ক্লিপিংস পাঠালাম। লিখলাম যে আপনার গানের শুটিং চলছে। বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ। উনি তখনও রেগে আছেন, লিখলেন আমার টাকা মিটিয়ে দিন।"
অনিকেত আরও লেখেন যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি ঠিক হয়ে যাবে। কবীর সুমন ও তাঁর মধ্যে বরফের প্রাচীর গলবে বলেও আশা রাখেন তিনি।