কলকাতা : বাবা ও মেয়ের সম্পর্ক তুলে ধরা হবে 'আদর'-এ । যদিও এই গল্পে মেয়ে হল আদতে একটি হাতি । আর ওই হাতিকেই ছবির গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে । সাহিত্যিক প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত 'আদরিণী'-র গল্প অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই ছবি । সংলাপ লিখেছেন পদ্মনাভ দাশগুপ্ত । সিন্যারিও লিখেছেন দেবদূত ঘোষ । পরিচালনাও দিয়েছেন তিনি । মুখ্যচরিত্রে রজতাভ দত্ত এবং 16 বছরের হাতি জয়মালা । আদর করে যাকে মণি বলে ডাকা হয় । এটি একটি পারিবারিক ছবি ।
ওই হাতিকে ছোটোবেলায় বাড়িতে পোষা হয় । এদিকে হাতি বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাবার চাকরি চলে যায় । যদিও হাতি পোষা মুখের কথা নয় । তাকে বিক্রি করার কথাও বলা হয় । সেই পরিস্থিতিতে বাবা এবং মেয়ের সম্পর্ক কী পরিণতি পায় সেই নিয়েই গল্প ।
এর আগে প্রথম পরিচালিত ছবি হিসেবে 'ভল্লু সর্দার' তৈরি করেছিলেন দেবদূত । শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে সেই ছবি ছিল ছোটোদের জন্য । তবে 'আদর' ছবির জন্য উপযুক্ত হাতির পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে দেবদূত ও তাঁর টিমকে । নানাধরনের বাধা অতিক্রম করেন তাঁরা । এ প্রসঙ্গে দেবদূত বলেন, "সারা দেশ আমাকে বেগ দিয়েছে । নানা সরকার নানা পর্যায় বেগ দিয়েছে । তবে ত্রিপুরা আমাকে ফেরায়নি । অনেক জায়গায় চেষ্টা করি । সকলে তো মুখেই আশ্বাস দেয় । আমাদের দেশে হাতির দেখভাল করার লোক সেভাবে কেউ নেই । তবে নিয়ম রয়েছে প্রচুর । এই নিয়ম পেরিয়ে শুটিং করতে যাওয়া ঝকমারী ব্যাপার । আমি প্রথমে কলকাতায় চেষ্টা করেছিলাম । সহযোগিতা পাইনি । তারপর অনেক জায়গায় ঘুরেছি । হাতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক সহজ নয় । এই পৃথিবী তো শুধু মানুষের নয় । তাই তাদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্মানজনক সহাবস্থান দরকার । তাই জন্যেই এই কাজটা করা ।"
এই ছবিটিতে একসঙ্গে একাধিক হাতি অভিনয় করেছে । তবে হাতি নিয়ে শুটিং করার অভিজ্ঞতা খুবই সুন্দর ছিল দেবদূতদের কাছে । বলেন, "মানুষ আমাকে অনেক ধরনের অসহযোগিতা করেছে, কিন্তু হাতি করেনি । আমি যে হাতিটিকে নিয়ে কাজ করেছি, সে অত্যন্ত লক্ষ্মী মেয়ে । তার বয়স 16 বছর ।" ছবিতে রজতাভ দত্ত ছাড়াও অভিনয় করেছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী, তুলিকা বসু, বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়, বিপ্লব ব্যানার্জি, প্রদীপ চক্রবর্তী, পরিজাত চৌধুরি ও রাজা ভট্টাচার্য ।
দেবদূত এই ছবির কাজ শুরু করেছেন 3 বছর আগে । গত বছরে শেষ হয়েছে কাজ । OTT প্ল্যাটফর্ম ছবি চাইলেও, দেবদূত এটিকে হলে রিলিজ় করতে চাইছেন । ডিসেম্বরেই রিলিজ় করতে চাইছেন তিনি, যাতে শীতের ছুটিতে ছোটোরা ছবিটি দেখে আনন্দ পায় । দেবদূতদের বিশ্বাস বড়দের পাশাপাশি ছোটোরাও উপভোগ করবে এই ছবি ।